বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: আদরিণী মোর কালো মেয়ে রে কেমনে কোথায় রাখ
আদরিণী মোর কালো মেয়ে রে কেমনে কোথায় রাখি।
তারে রাখিলে চোখে বাজে ব্যথা বুকে বুকে রাখিলে দুখে ঝুরে আঁখি॥
কাঙাল যেমন পাইলে রতন লুকাতে ঠাঁই নাহি পায়;
তেমনি আমার শ্যামা মেয়েরে জানি না রাখিব কোথায়।
দুরন্ত মোর এই মেয়েরে
বাঁধব আমি কি দিয়ে রে,
(তাই) পালিয়ে যেতে চায় সে যবে আমি অমনি মা ব’লে ডাকি॥
- ভাবসন্ধান: এই গানটিতে আরাধ্য দেবী কালীকে উপস্থাপন করা হয়েছে
মাতা-কন্যার দ্বৈত সত্তা রূপে। গানের শুরুতে মাতৃরূপিনী দেবীকে তিনি অনুভব
করেছেন আদরিণী কন্যা রূপে। অপত্য স্নেহে অন্ধ পিতাপাতা যেমন সন্তানকে কোথায়
রাখবেন তা খুঁজে পান না। কবিও তাঁর কালো মেয়েকে (কালী) কোথায় স্থান দেবেন, তা
বুঝে উঠতে পারেন না। তিনি তাঁকে অন্তরে নাকি চেতনার গভীর অন্তর্দর্শনে রাখেবন,
এই ভেবে আকুল। কবির কাছে দেবী অমূল্য রত্নস্বরূপ। কাঙাল যেমন হঠাৎ-পাওয়া অমূল্য
রতন লুকানোর জায়াগা খুঁজে পায় না। কাঙাল কবিও তেমনি তাঁর বহু সাধনায় পাওয়া
দেবীরত্নকে কোথায় রাখবেন তা বুঝে উঠতে পারেন না।
কবি মাতৃরূপিণী দেবীকে তাঁর ভক্তি-প্রেমে বেঁধে রাখতে চান। কিন্তু পালিয়ে বেড়ানো
লীলাময়ী দেবীকে ধরে রাখতে পারেন না। কবি মনে করেন ভক্তি-প্রেমের সর্বসেরা বন্ধন
হলো- 'মা' সম্বোধন। তাই যখনই দেবী পালিয়ে যেতে চাইবেন, তখনই কবি তাঁকে 'মা'
সম্বোধনের মায়ারজ্জুতে তাঁকে বাঁধবেন। এই ডাকে পালিয়ে বেড়ানো লীলাময়ী দুরন্ত
অধরা কন্যা ধরা দেবেন মাতৃরূপিণী এই পরমা দেবী।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা
যায় না। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি (মাঘ-ফাল্গুন ১৩৪৩) মাসে,
-
এইচএমভি
রেকর্ড কোম্পানি গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশ করেছিল। এই
সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৭ বৎসর ৮ মাস।
- রেকর্ড:
এইচএমভি। ফেব্রুয়ারি ১৯৩৭ (মাঘ-ফাল্গুন ১৩৪৩)। এন ৯৮৫৩। নীলমণি সিংহ
- গ্রন্থ:
-
রাঙা জবা। কাজী নজরুল ইসলাম। প্রথম সংস্করণ। হরফ প্রকাশনী, কলিকাতা [১৪
এপ্রিল ১৯৬৬)। ১লা বৈশাখ ১৩৭৩] গান সংখ্যা ৪৪। পৃষ্ঠা: ৫২।
- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা
১০৫৪]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দুধর্ম। শাক্ত। শ্যামাসঙ্গীত।
দ্বৈতসত্তা, মাতা-কন্যা