বিষয়: নজরুল সঙ্গীত। 
শিরোনাম: উদার অম্বর দরবারে তোরই প্রশান্ত প্রভাত বাজায় বীণা 
	
		
উদার অম্বর দরবারে তোরই প্রশান্ত প্রভাত বাজায় বীণা।
শতদল-শুভ্রা পদতল-লীনা, প্রশান্ত প্রভাত বাজায় বীণা॥
           
	সহস্র কিরণ-তারে হানি’ ঝঙ্কার
           
	ধ্বনি তোলে অনাহত গভীর ওঙ্কার,
সেই সুরে উদাসীন, পরমা প্রকৃতি ধ্যান-নিমগ্না মহাযোগাসীনা॥
           
	আনন্দ-হংস বিমুগ্ধ গতিহীন
           
	স্থির হ'য়ে ব্যোমে শোনে সে জ্যোতির্বীণ,
ঝরা ফুল-অঞ্জলি তা'রি চরণে প্রণতা ধরণী বাণী-বিহীনা॥
		
	
	- প্রেক্ষাপট ও রচনাকাল: রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। 
	
 ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের ২২ জুন (শনিবার) ৮ আষাঢ় ১৩৪৭), সন্ধ্যা ৬.৫৫টায় কলকাতা 
	বেতারকেন্দ্র থেকে 'যাম যোজনায় কড়ি মধ্যম' নামক গীতি-আলেখ্য সম্প্রচারিত হয়। এই 
	গীতিন-আলেখ্যে গানটি প্রথম প্রচারিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৪১ বৎসর ১ 
	মাস।
 
 উল্লেখ্য, ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের ১১ অক্টোবর, কলকাতা বেতারকেন্দ্র থেকে প্রচারিত 'প্রহর 
	পরিচারিকা' গীতুই-চিত্রের সাথে এই গানটি সম্প্রচারিত হয়েছিল।
 
- ভাবাসন্ধান: গানটি দরবারি টোড়ি রাগে নিবব্ধ। ‘যাম-যোজনায় কড়ি মধ্যম' গীতিআলেখ্যে- এই 
	গানটিকে আলোচনা করা হয়েছে- টোড়ি রাগে। গানের শুরুতে রাগ নাম হিসেব উল্লেখ করা 
	হয়েছে- দরবারী টোড়ি। 
 
 গানের শুরুতে যাম যোজনায় টোড়ি রাগের ভূমিকা এবং কড়ি মধ্যমের প্রকৃতি সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। নিচে নজরুলের পাণ্ডুলিপি থেকে এই বিষয়ক পাঠ তুলে ধরা হলো।
 
 টোড়ি রাগিণী দ্বিতীয় প্রহরে গীত হয়।
ভৈরবী আশাবরী গান্ধারী প্রভৃতি রাগিনীর পর এই রাগের তীব্র মধ্যম তীব্র সুরে জানিয়ে দেয় যে, দিনের দ্বিতীয় প্রহর এল। দু'একটী টোড়িতে দুই মধ্যম লাগে। শুদ্ধ টোড়ির এক ‘মা’। আরোহণের সময় এর পা পড়ে বক্র গতিতে। আরোহণের সময় ঋষভ বা রেখাবে চড়তে এ একটু ইতস্ততঃ করে। অবরোহণের বেলায় কিন্তু ঋষভের গা ঘেঁসে খেলা করে। টোড়ির খেয়াল শুনুন।
 
 এই গানে টোড়ি রাগের প্রকৃতিকে রূপকতার মধ্য দিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে। দিবা দ্বিতীয় প্রহরের শুরুর দিকে প্রভাতের যে উদার রূপ প্রকৃতিতে ফুটে ওঠে, তারই প্রশান্ত পরিবেশে রাগটি যেন উদাসী বেশে আত্মপ্রকাশ করে। অবারিত স্নিগ্ধ ছায়া যেন ছড়িয়ে পড়ে। উদাসী টোড়ির আবির্ভাবে যে স্নিগ্ধ অথচ করুণ রসের সৃষ্টি করে, তা কবিকে গভীরভাবে স্পর্শ করে। তার পাষাণসম অকরুণ মৌন মূর্তি, কবির হৃদয়ে কেন বিষাদে আচ্ছন্ন করে, কবি বুঝে উঠতে পারেন না।
 
 টোড়ি যেন ভিখারির বেশে কিছু প্রত্যাশা নিয়ে কবির কাছে আসে। কিসের প্রত্যাশায়, কবি তা জানেন না। তুষারের মতো জমাট বেদনা অশ্রু গলে পড়বে কার মালার মতো প্রেমের অর্ঘ পেলে, কবি তা জানেন না।
 
- রচনাকাল ও স্থান: 
- গ্রন্থ:
	
	
		- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট 
		ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা ১১৫৩। তাল: কাহারবা। পৃষ্ঠা: ৩৫১]
- সন্ধ্যামালতী 
		
			- প্রথম সংস্করণ [শ্রাবণ ১৩৭৭ (জুলাই-আগষ্ট 
			১৯৭১)]
- নজরুল রচনাবলী জন্মশতবার্ষিকী সপ্তম 
			খণ্ড [১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪১৫, ২৫ মে ২০০৮। সন্ধ্যামালতী, গান ১৯। পৃষ্ঠা: 
			১৩৬]
 
 
- পর্যায়
	- বিষয়াঙ্গ:  জাগতিক। প্রকৃতি ও সঙ্গীত। টোড়ি
- সুরাঙ্গ: খেয়ালাঙ্গ 
- রাগ:
		দরবারি-টোড়ি
- তাল:  তিল্ওয়াড়া