বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: ঊষা এলো চুপি চুপি রাঙিয়া সলাজ অনুরাগে
ঊষা এলো চুপি চুপি রাঙিয়া সলাজ অনুরাগে।
চাহে ভীরু নববধূ সম তরুণ অরুণ বুঝি জাগে॥
শুকতারা যেন তার জলভরা আঁখি
আনন্দ বেদনায় কাঁপে থাকি' থাকি',
সেবার লাগিয়া হাত দু'টি
মালার সম পড়ে লুটি
কাহার পরশ-রস মাগে॥
- ভাবসন্ধান: প্রকৃতি পর্যায়ের এই গানটিতে রয়েছে কবির কল্পবাস্তবে দেখা
প্রভাতের অনুভব। সাথে উপস্থাপিত হয়েছে উষার সমব্যথী শুকতারার
প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির আনন্দ-বেদনা। এই গানের প্রভাত হলো মুখ্য, শুকতারা হলো তার
সহচরী।
গানটির স্থায়ীতে - কবির কল্পনায় ভোর আসে চুপি চুপি সলাজ ভীরু নববধূর মতো। পাছে
রাত্রি শেষের নবারুণ জেগে ওঠে। প্রকৃতির নিয়মে রাত্রিশেষে পূবাকাশকে রাঙা আলোয়
রাঙিয়ে দিয়ে ধীরে ধীরে ভোর আসে। কবি কল্পনায় ভোরের স্নিগ্ধ আলোতে উদ্ভাসিত
রঞ্জিত আকাশ হলো- তরুণ সূর্যের প্রতি তার সলাজ অনুরাগের প্রকাশ। আঁধারের শয্যা
ছেড়ে আলোতে জেগে ওঠে প্রভাত। যেন রভসরাত্রি যাপন শেষে ঊষা জেগে ওঠে তরুণ অরুণের
জন্যই। কিন্তু সে চায় না সূর্যের পূর্ণ প্রকাশ হোক। কারণ সূর্যের পূর্ণ প্রকাশে
হয় নববধূরূপী ঊষার হয় অবসান।
ভোরের শুকতারারও পরিণতি একই। সূর্যোদয়ের মধ্য দিয়ে তারও বিদায়ের প্রহর আসে। তাই
সে ঊষার সমব্যথী হয়ে আনন্দ-বেদনায় কম্পিত হয়। উভয়ই জানে না কার সেবার জন্য, কার
পরশ-রসের জন্য প্রকৃতির চরণে মালার নৈবেদ্যের মতো আত্মহুতি দেয়। উভয়ই যেন খুঁজে
পায় না তাঁদের আত্মপ্রকাশের সার্থকতা।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে
সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দের
২৭ জুলাই (বৃহস্পতিবার, ১১ শ্রাবণ ১৩৪৬) এইচএমভি গানটির রেকর্ড করেছিল। টেস্ট
কপি
OMC 10056।
পরে রেকর্ডটি প্রকাশিত হয় নি।
এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৮ বৎসর ১ মাস।
চলচ্চিত্র: গোরা (৩০ জুলাই ১৯৩৮)। চিত্রা প্রেক্ষাগৃহ। কাহিনি রবীন্দ্রনাথ। প্রযোজনা: দেবদত্ত ফিল্মস্।
শিল্পী: ভক্তিময় দাশগুপ্ত। [প্রচার
পুস্তিকা]
রেকর্ড:
- এইচএমভি। ২৭ জুলাই ১৯৩৮, (বৃহস্পতিবার, ১১ শ্রাবণ ১৩৪৬)। টেস্ট
কপি OMC 10056।
[নমুনা]
গ্রন্থ:
- প্রচার
পুস্তিকা [চলচ্চিত্র। গোরা (৩০ জুলাই ১৯৩৮)]।
- নজরুল-সঙ্গীত
সংগ্রহ,
[নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। ফেব্রুয়ারি ২০১২। ১১৫৮ সংখ্যক গান।
- পাণ্ডুলিপি। নজরুল -রচনাবলী জন্মশতবর্ষ সংস্করণ, দ্বাদশখণ্ড। বাংলা একাডেমী
ঢাকা ] পৃষ্ঠা: ৫০ [নমুনা]
- নজরুল-সঙ্গীত স্বরলিপি
ঊনপঞ্চাশতম খণ্ড। স্বরলিপিকার: ইদ্রিস আলী। কবি নজরুল ইন্সটিটিউট, কার্তিক ১৪২৬।
নভেম্বর ২০১৯। পৃষ্ঠা: ৩৭-৩৮
[নমুনা]
স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: ইদ্রিস আলী। ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ জুলাই-তে
মুক্তিপ্রাপ্ত গোরা ছায়াছাবিতে ব্যবহৃত গানের সুরানুসারে [শিল্পী: ভক্তিময় দাস]
করা স্বরলিপিটি নজরুল-সঙ্গীত স্বরলিপি
ঊনপঞ্চাশতম খণ্ডে
অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
[নমুনা]
পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি (জাগতিক, প্রভাত)
- সুরাঙ্গ: খেয়ালাঙ্গ
- গ্রহস্বর: স