বিষয়: নজরুল সঙ্গীত
শিরোনাম: এসো শঙ্কর ক্রোধাগ্নি হে প্রলয়ঙ্কর।  
এসো শঙ্কর ক্রোধাগ্নি হে প্রলয়ঙ্কর।
রুদ্রভৈরব! সৃষ্টি সংহর, সংহর॥
জ্ঞান-হীন তমসায় মগ্ন পাপ-পঙ্কিলা
বিশ্ব জুড়ি' চলে শিবহীন যজ্ঞের লীলা,
শক্তি যথায় করে আত্ম-বিসর্জন ঘৃণায়-
ধ্বংস কর সেই অশিব-যজ্ঞ— অসুন্দর॥
যথা দেবী শক্তি— নারী অপমান সহে
গ্লানিকর হানাহানি চলে ধরমের মোহে,
হানো সংঘাত, অভিসম্পাৎ সেথা নিরন্তর॥
এরপরে রুদ্র ও ভৈরবের নৃত্য ও গান- এসো শঙ্কর ক্রোধাগ্নি হে প্রলয়ঙ্কর।এই গানের নাটক্যের কাহিনির ভাবগত সীমা শুধু দক্ষযজ্ঞের বিনাশের মধ্যে নেই, রয়েছে বিশ্বজুড়ে মানবকল্যাণ-ধ্বংসী সকল অপশক্তিকে ধ্বংস করার আ্হবান। শিব সত্য ও সুন্দরের প্রতীক। শিবের অবজ্ঞার অর্থই হলো সত্য সুন্দরের অবজ্ঞা। বিশ্বজুড়ে যে অশিবের যজ্ঞ চলছে, তাকে ধ্বংস করার জন্য তাঁর ক্রোধাগ্নিরূপী প্রলয়ঙ্কর রুদ্রভৈরবকে আহ্বান করা হচ্ছে এই গানে।

জ্ঞানহীন, তমসায় নিমজ্জিত বিশ্বজগৎ পাপ-পঙ্কিলতায় ভরপূর। বিশ্বজুড়ে সত্য ও সুন্দর ধ্বংসী অশিব শক্তির প্রভাবে চলেছে অবিচার। শক্তিরূপিণী নারী সত্তা অপমানিত হয় চলেছে সর্বত্র। চলেছে ধর্মের নামেও গ্লানিকর হানাহানি। এসবের অবসানের জন্যই রুদ্রভৈরবের প্রতি এই আহ্বান। তাঁর ধ্বংসযজ্ঞের মধ্য দিয়ে সকল অশুভ শক্তির বিনাশ হোক এবং সত্য-সুন্দর-কল্যাণের প্রতিষ্ঠা পাক, এই ইচ্ছাই গানটির আভোগে উপস্থাপিত হয়েছে ।

শিবের ভয়ঙ্কর রূপ হলো রুদ্রভৈরব। এই নাটকের বিষাঙ্গের সূত্রে কবি এই রাগের নামকরণ করেছিলেন। সুরফাঁকতালে নিবদ্ধ এই গানের চলন ধ্রপদাঙ্গের।