বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম :
ঐ শ্যাম মুরলী বাজায়
রাধা : ঐ শ্যাম মুরলী বাজায়।
কৃষ্ণ : রাধা রাধা বলে ডাকো বাঁশি রাধিকায়॥
রাধা : এসেছি রাঙ্গা পায় বড় সাধ মনে বাঁশি শিখিব শ্যামরায়।
যে বাঁশির সুরে হরি কুল ভোলে ব্রজনারী
বাজাতে তেমনি বাঁশি শিখাও হে রাধিকায়॥
কৃষ্ণ : তবে অধরে ধর বাঁশি রাই।
রাধা : যে সুরে হে শ্যামরায় যমুনা উজান যায় ভোলে রাধা কুলমান লাজ,
শুনি যে মোহন বেণু তৃণ নাহি খায় ধেনু সে সুর শিখাও ব্রজরাজ,
কৃষ্ণ : বাঁশি রাধা নামে সাধা ব'লে শুধু রাধা শ্যাম-নাম কহিতে না জানে'
যতই ডাকিবে শ্যামে ততই সে রাধা নামে ফুকারিবে সুমধুর তানে॥
রাধা : তাহে নাই নাই হরি বাধা, আজ আমি শ্যাম তুমি রাধা
কৃষ্ণ : মুরলী হইল শেখা ঐ ডাকে কুহু কেকা
রাই এসো নাচি দুঁহু আনন্দে নূপুর মধুর ছন্দে॥
- ভাবসন্ধান: কৃষ্ণের মধুর বংশীধ্বনি শুনে রাধা ছুটে এসেছেন তাঁর কাছে
বাঁশী বাজানো শেখার জন্য। রাধার এই ছুটে আসরা লক্ষ্য কৃষ্ণের সান্নিধ্য পাওয়া,
উপলক্ষ বাঁশী বাজানো শেখা। তিনি কৃষ্ণের কাছে সেই সুর শিখতে চান, যে সুরের যাদুতে
মোহিত হয়ে ছুটে আসেন ব্রজনারীরা, গাভী ঘাদ খেতে ভুলে যায়। বাঁশী শেখানো
উপলক্ষে রাধার সান্নিধ্য পাওয়ার সুযোগ হারাতে চান না। তাই বাঁশী শেখানোর ছলে কৃষ্ণ
তাঁর প্রেম মুগ্ধ হৃদয়-বাঁশীর কথা বলেন। তিনি বলেন তাঁর বাঁশী 'রাধা নামে সাধা'।
তাই এই বাঁশীতে সে সুর ওঠে তাতে শুধু রাধা নাম ধ্বনি হয়। সে সুরে শ্যামের নাম নেই।
তাই এই বাঁশীতে যখনই ফুঁ দেওয়া হবে, তখন শুধু রাধা নামই মধুর তানে বাজবে। রাধই তাঁর
রঙ্গ রসে বলেন- এমন দিনে শ্যামই হয়ে যাবেন রাধা, আর রাধা হয়ে যাবনে শ্যাম। পর্স্পরে
গভীর প্রেমে হৃদয় বাঁশী একই সাথে হয়ে যাবে রাধাময় এবং কৃষ্ণময়। হৃদয়বাঁশীর শিক্ষা
সমাপনে কৃষ্ণ অনুভব করেন কুহু- কেকার ডাকের ভিতরে মিলনের আনন্দ-ছন্দ। কৃষ্ণ সেই
আনন্দে রাধাকে আহ্বান করেন যুগল-আনন্দে যুগলনৃত্যে।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে
সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসে (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় ১৩৪১), এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানি থেকে গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল
৩৫ বৎসর ১ মাস।
- গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা
১২০৮। পৃষ্ঠা: ৩৬৭]
- রেকর্ড: এইচএমভি [জুন ১৯৩৪ (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় ১৩৪১)]। এন ৭২৪২। শিল্পী:
আঙ্গুর বালা। টাইটেল শ্রীমতীর মুরলী শিক্ষা।
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
ইদ্রিস আলী।
[নজরুল
সঙ্গীত স্বরলিপি, পঞ্চাশতম খণ্ড, কবি নজরুল ইন্সটিটিউট, কার্তিক ১৪২৬। জুন নভেম্বর ২০১৯।
আঙুর বালা ও ধীরেন দাস-এর গাওয়া গানের সুরানুসারে স্বরলিপি করা হয়েছে। [নমুনা]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দু, বৈষ্ণব। রাধা-কৃষ্ণ। প্রণয়
- সুরাঙ্গ: ভজনাঙ্গ
- তাল:
কাহারবা
- গ্রহস্বর: পর্স