বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: গঙ্গার বালুতটে খেলিছে কিশোর গোরা
গঙ্গার বালুতটে খেলিছে কিশোর গোরা।
চরণতলে চলে পুলকে বসুন্ধরা॥
পড়িল কি রে খসি
ভূতলে রাকা শশী
ঝরিছে অঝোর ধারায় রূপের পাগল-ঝোরা॥
শ্রীমতি ও শ্রীহরি খেলিছে এক অঙ্গে,
দেব-দেবী নর-নারী গাহে স্তব এক সঙ্গে।
গঙ্গা জোয়ার জাগে
তাহারি অনুরাগে,
ফিরে এলো কি নদীয়ায় ব্রজের ননী-চোরা॥
- ভাবসন্ধান: বৈষ্ণবরা মনে করেন, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু কৃষ্ণ তথা
বিষ্ণুর অবতার। তাই বৈষ্ণবরা শ্রীচৈতন্যের ভিতরে কৃষ্ণকে অন্বেষণ করে থাকেন। এই
দর্শনে রচিত এই গানটিতে গানটি শ্রীচৈতন্য এবং রাধা-কৃষ্ণ লীলার ভাবকে একীভূত করে
উপস্থাপন করা হয়েছে।
নদীর চৈতন্য ছিলেন ফর্সা, তাই তাঁকে সম্বোধন করা হয়েছে গোরা নামে। শ্রীকৃষ্ণের মতো কিশোরকালে নদীয়ার গঙ্গার তীরে লীলা করতেন।
তাঁর চরণস্পর্শে (আবির্ভাবে) আনন্দে বসুন্ধরা (জগৎসংসার) পুলকিত ও প্রেমময় হয়ে
উঠেছে। কবি রূপকল্পের উপমায় শ্রীচৈতন্যের অপরূপ লাবণ্যকে পূর্ণিমার চাঁদ বা 'রাকা
শশী'র তাঁর সাথে তুলনা করেছেন। যেন চাঁদের জ্যোৎস্নার মতো সগৎ সংসারে তাঁর
রূপলাবণ্যের সাথে তাঁর করুণা ধারা অবিরাম ঝরে পড়ছে মোহনীয় ধারায়।
এটি চৈতন্য মহাপ্রভুর তত্ত্বানুসারে এই গানে বলা হয়েছে- শ্রীচৈতন্য হলেন শ্রীমতী
রাধারাণী (শ্রীমতি) এবং শ্রীহরি (শ্রীকৃষ্ণ)র ভাব ও রূপের সম্মিলিত প্রকাশ। একই
দেহে উভয়ের রূপ খেলা করে। কারণ তিনি একাধারে কৃষ্ণ এবং কৃষ্ণপ্রেমিকা রাধা।
তাঁর যুগলরূপের মহিমা দর্শন করে- দেব-দেবী নর-নারী গাহে স্তব এক সঙ্গে।
এসব দেখে কবির কৌতুহলে প্রশ্ন জাগে- তবে কি ফিরে এলো নদীয়ায় ব্রজের ননী-চোরা (কিশোর
কৃষ্ণ)॥
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু
জানা যায় না। গানটি পাওয়া যায়
নজরুলের হারানো গানের খাতায়
সংগৃহীত পাণ্ডুলিপিতে।
- গ্রন্থ:
- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ (নজরুল ইন্সটিটিউট, মাঘ, ১৪১৭ / ফেব্রুয়ারী,২০১১) নামক গ্রন্থের ১২৪৮ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা:
৩৭৯।
- নজরুলের হারানো গানের খাতা
[নজরুল ইনস্টিটিউট, ঢাকা। আষাঢ় ১৪০৪/জুন ১৯৯৭। গান সংখ্যা
১৪৭।
for Dhiren।
ভজন।
পৃষ্ঠা ১৭৪]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দুধর্ম। বৈষ্ণবসঙ্গীত।
শ্রীচৈতন্য বন্দনা