বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: খেলে চঞ্চলা বরষা-বালিকা
খেলে চঞ্চলা বরষা-বালিকা
মেঘের এলোকেশ ওড়ে পুবালি বায়
দোলে গলায় বলাকার মালিকা॥
চপল বিদ্যুতে হেরি' সে চপলার
ঝিলিক হানে কণ্ঠের মণিহার,
নীল আঁচল হতে তৃষিত ধরার পথে
ছুঁড়ে ফেলে মুঠি মুঠি বৃষ্টি শেফালিকা॥
কেয়া পাতার তরী ভাসায় কমল-ঝিলে
তরু-লতার শাখা সাজায় হরিৎ নীলে।
ছিটিয়ে মেঠো জল খেলে সে অবিরল
কাজ্লা দীঘির জলে ঢেউ তোলে
আন্মনে ভাসায় পদ্ম-পাতার থালিকা॥
- ভাবার্থ: প্রকৃতি পর্যায়ের এই গানে কবি চিরন্তন
বাংলার বর্ষার রূপ বর্ণনা করেছেন। তিনি বর্ষাকে চঞ্চলা বালিকার রূপকতায় উপস্থাপন
করেছেন এই গানে।
এই মেঘবালিকার মেঘরূপী এলোকেশ পুবালি বাতাসে ওড়ে, তার গলায় মালা হয়ে দোলে সারিবদ্ধ
উড়ন্ত বলাকার ঝাঁক। বিদ্যুতের ঝিলিক যেন এই মেঘবালিকার চঞ্চল চোখের দীপ্তি। সে
ঝিলিক দ্যুতিময় হয়ে প্রতিভাত হয় তার কণ্ঠহারের মণিতে। তার নীল আকাশের লীলায়িত আঁচল
থেকে নেমে আসা বৃষ্টির কণাকে কবি তুলনা করেছেন ছুঁড়ে দেওয়া শেফালি ফুলের সাথে। এই
বালিকা শিশুদের সাথে পদ্মশোভিত ঝিলে কেয়া পাতার নৌকা ভাসায়। বর্ষার তরু-লতার শাখাকে
হরিৎ, নীল বর্ণের ফুলে সুসজ্জিত করে। মাঠে মাঠে চলে তার অবিরল জলকেলি। পুবালি বায়ে
কাজলাদীঘির জলে ওঠে ঢেউ। সেখানে সে আনমনে (খেলার ছলে) ভাষায় পদ্মপাতার থালা।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল
সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের আগষ্ট (শ্রাবণ-ভাদ্র ১৩৪৪)
মাসে, গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৮ বৎসর ২ মাস।
- রেকর্ড:
এইচএমভি [আগষ্ট ১৯৩৭
খ্রিষ্টাব্দ (শ্রাবণ-ভাদ্র ১৩৪৪)। এন ৯৯৩৫।
শিল্পী: কুমারী পারুল সেন][শ্রবণ
নমুনা]
- স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি: সালাউদ্দিন আহ্মেদ
[নজরুল-সঙ্গীত
স্বরলিপি, অষ্টাদশ খণ্ড। প্রথম সংস্করণ। নজরুল ইন্সটিটিউট আশ্বিন ১৪০৪/অক্টোবর
১৯৯৩। নবম গান] [নমুনা]
- সুরকার: নজরুল ইসলাম
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি (ঋতু-বর্ষা)
- সুরাঙ্গ: স্বকীয়