বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: কৃষ্ণা নিশীথ নাচে ঝিল্লির নূপুর বাজে
কৃষ্ণা নিশীথ নাচে ঝিল্লির নূপুর বাজে।
রিমিঝিমি রিমিঝিমি মৃদু আওয়াজে॥
আঁধারের চাঁচর চিকুর খুলিয়া
আপন মনে নাচে হেলিয়া দুলিয়া,
মুঠি মুঠি হিম-কণা তারা-ফুল তুলিয়া
ছুঁড়ে ফেলে ধরণী মাঝে॥
তার মণি-হার খুলে পড়ে উল্কা-মানিক,
তার নাচের নেশায় ঝিমায় দশ্দিক।
আধো-রাতে আমি শুনি স্বপনে
তার গুঞ্জন-গীত কানে-কথা গোপনে,
কালো-রূপের শিখা, ওকি শ্যামা বালিকা
নাচে নাচে জাগাইতে নটরাজে॥
- ভাবার্থ: কোনো এক বর্ষণমুখর কৃষ্ণানিশীথের (অমাবস্যার রাত্রি) রূপ
বর্ণনা করা হয়েছে এই গানে। কবির চোখে এই অপরূপ কৃষ্ণানিশিথিনী নৃত্যের ছন্দে
মোহিত করে রেখেছে প্রকৃতিকে। তার সেই ছন্দময় রূপ দর্শনে কবি পৌঁছে যান মোহময়
স্বপ্নের ঘোরে।
এই অপৃউপা কৃষ্ণানিশিথিনী যেন তার রাত্রির কুঞ্চিত কেশ খুলে, রিমিঝিমি রিমিঝিমি
বৃষ্টিনুপূরে মৃদু ধ্বনি তুলে- আপন মনে নেচে যায়। আকাশ থেকে সে তারার আলোয়
বৃষ্টি-কণা ছুঁড়ে ফেলে ধরণীতে। তার নাচের ছন্দে তার মণিহার থেকে খুলে পড়া
মাণিকের মতো- আকাশ থেকে খসে পড়ে উল্কাকণা। প্রকৃতি ঝিমিয়ে পড়ে তার নৃত্যের মদির
নেশায়।
কবি আধোরাতে স্বপ্নের ঘোরে শুনতে পান, সে কৃষ্ণানিশিথিনীর গুঞ্জন-গীত, গোপনকথা।
তার রূপে মুগ্ধ কবির কাছে মনে হয়- কালোরূপের শিখার মতো কৃষ্ণানিশিথিনী তাকে
জাগিয়ে তোলে ধ্যানমগ্নতা থেকে। যেমন করে শ্যামা নটরাজের ধ্যানমগ্নতা থেকে জাগিয়ে
তোলে তার নৃত্যের ছন্দে।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু
জানা যায় না। ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি (পৌষ-মাঘ ১৩৪৪) মাসে, এইচএমভি শ্রীমতী
রেণুকা সিংহের কণ্ঠে গানটির প্রথম রেকর্ড করেছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ৩৮ বৎসর ছিল ৭ মাস।
- গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ (নজরুল ইন্সটিটিউট, মাঘ, ১৪১৭/ফেব্রুয়ারি,
২০১৪)। গান সংখ্য ১৩৬৪। পৃষ্ঠা:
৪১২।
- রেকর্ড: এইচএমভি [জানুয়ারি ১৯৩৮ (পৌষ-মাঘ ১৩৪৪)]।
এন ১৭০২৬। শিল্পী:
সীতা দেবী
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
আহসান মুর্শেদ
[নজরুল
সঙ্গীত স্বরলিপি সাতচল্লিশতম খণ্ড। কবি নজরুল ইন্সটিটিউট। ফাল্গুন ১৪২৫/ফেব্রুয়ারি
২০১৯] পৃষ্ঠা: ৪১-৪২। [নমুনা]
- পর্যায়
- বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি, বর্ষা
- সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্যের সুর [নৃত্যের ছন্দে বাঁধা]
- তাল:
কাহারবা
- গ্রহস্বর: জ্ঞ