বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: তরুণ অশান্ত কে বিরহী
রাগ: চাঁদনি কেদারা, তাল: ত্রিতাল
তরুণ অশান্ত কে বিরহী।
নিবিড় তমসায় ঘন ঘোর বরষায়
─
দ্বারে হানিছ কর রহি রহি॥
ছিন্ন পাখা কাঁদে মেঘ-বলাকা
কাঁদে ঘোর অরণ্য আহত-শাখা
চোখে আশা-বিদ্যুৎ
এলে কোন মেঘদূত,
বিধুর বঁধুর বারতা বহি'॥
-
ভাবসন্ধান: কোনো এক বর্ষণমুখর ঝঞ্ছাবিক্ষু্দ্ধ রাতে, প্রেমিকের সঙ্গসুখ
থেকে বঞ্চিতা বিরহিণীর অশান্ত হৃদয়ের অভিব্যক্তি ফুটে উঠেছে এই গানে। কবি
প্রকৃতির অশান্ত রূপের মধ্য দিয়ে এই বিরহিণীর মনোভাবকে চিত্রিত করেছেন রূপকতার
অপরূপ শব্দচয়নের ভিতর দিয়ে। ঘনঘোর অশান্ত ঝঞ্ছাবিক্ষুব্ধ বর্ষার আঘাত যেমন করে
রুদ্ধ গৃহদ্বারে আঘাত হানছে, বিরহিণীর মনের দুয়ারেও যেন তেমনি করে বিরহের
উদ্বেলিত বেদনা বারম্বার আঘাত হেনে চলেছে।
প্রকৃতির বিক্ষুব্ধ আঘাতে আকাশে ভেসে চলা মেঘ-বলাকার পাখা আজ ছিন্নভিন্ন, ভগ্ন
বৃক্ষশাখায় যন্ত্রণার অরণ্যানীতে উঠেছে হাহাকার। এই সবই যেন বিরহিণীর
বিরহকাতরার প্রতিরূপ। যেন প্রকৃতির মতই তারও মনে প্রেমের স্বপ্ন-বলাকা পক্ষহীন,
তার মনের প্রেমকানন বিরহের আঘাতে বিপর্যস্ত।
তবু বিরহিনী হতাশায় ভেঙে পড়ে না। বর্ষার গভীর অন্ধকারের ভিতরে জেগে ওঠা
বিদ্যুৎ-ঝলকের মতই তার মনে জেগে ওঠে হারানো-প্রেম ফিরে পাবার আকস্মিক এবং গভীর
প্রত্যাশা। মনে আশা জাগে, হয়তো এই বিক্ষুব্ধ মেঘমালা তার প্রিয়তমের বিরহকাতর
বার্তা নিয়ে এসেছে।
-
রচনাকাল ও স্থান: গানটির
রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৪
খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে (আষাঢ়-শ্রাবণ ১৩৪১) এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানি থেকে
এই গানের একটি রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল। এই
সময় নজরুলের বয়স ৩৫ বৎসর ছিল ১ মাস।
- গ্রন্থ:
- গানের মালা
- প্রথম সংস্করণ আশ্বিন ১৩৪১ বঙ্গাব্দ (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দ)।
২৬। চাঁদনী কেদারা-ত্রিতালী
- নজরুল রচনাবলী ষষ্ঠ খণ্ড [জ্যৈষ্ঠ ১৪১৯, জুন ২০১২। গানের মালা। ২৬। চাঁদনী কেদারা-ত্রিতালী। পৃষ্ঠা ২০৮]
- নজরুল রচনাবলী। জন্মশতবর্ষ সংকলন ষষ্ঠ খণ্ড। বাংলা একাডেমী, ঢাকা। জ্যৈষ্ঠ ১৪১৯, জুন ২০১২। গান সংখ্যা ১৪৩৭। রাগ: চাঁদনী কেদারা, তাল: ত্রিতাল। পৃষ্ঠা:
৪৩৩]
- রেকর্ড:
- এইচএমভি [জুলাই ১৯৩৪ (আষাঢ়-শ্রাবণ ১৩৪১)। পি ১১৭৮৯। শিল্পী: আঙ্গুরবালা]
- টুইন [জুন ১৯৩৫ (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় ১৩৪২)। এফটি ৩৯৭৭। শিল্পী: আঙ্গুরবালা।]
- বেতার: কলকাতা ক। চতুর্থ অধিবেশন (সান্ধ্য অনুষ্ঠান)। সন্ধ্যা: ৮.৩০।
[২ ডিসেম্বর ১৯৩৯ (সোমবার,
১৮ অগ্রহায়ণ ১৩৪৬)। শিল্পী: আঙুরবালা
- সূত্র:
- বেতার জগৎ। ১০ম বর্ষ, ২৩শ সংখ্যা। পৃষ্ঠা: ৯১১
- The Indian Listener, Vol. IV, No. 23 November 1939] page 1615]
স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
আহসান মুর্শেদ
[নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি,
একচল্লিশতম খণ্ড, অগ্রহায়ণ ১৪২৪] গান সংখ্যা ৮। পৃষ্ঠা: ৪৪-৪৬ [নমুনা]
পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি ও প্রেম
- সুরাঙ্গ: খেয়ালাঙ্গ