বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: তুমি কোন্ পথে এলে হে মায়াবী কবি
তুমি কোন্ পথে এলে হে মায়াবী কবি
বাজায়ে বাঁশের বাঁশরি।
এলো রাজ-সভা ছাড়ি' ছুটি,
গুণিজন তোমার সে সুরে পাশরি'॥
তোমার চলার শ্যাম-বনপথ
কদম-কেশর-কীর্ণ,
তুমি কেয়ার বনের খেয়াঘাটে হলে
গোপনে কি অবতীর্ণ?
তুমি অপরাজিতার সুনীল মাধুরী
দু'চোখে আনিলে করিয়া কি চুরি?
তোমায় নাগ-কেশরের ফণি-ঘেরা মউ
পান করাল কে কিশোরী?
জনপুরী যবে কল-কোলাহলে
মগ্নোৎসব রাজ সভাতলে,
তুমি একাকী বসিয়া দূর নদী-তটে
ছায়া-বটে বাঁশি বাজালে,
তুমি বসি' নিরজনে ভাঁট ফুল দিয়া
বালিকা বাণীরে সাজালে॥
যবে রুদ্র আসিল ডম্বরু-করে
ত্রিশূল বিঁধিয়া নীল অম্বরে,
তুমি ফেলিয়া বাঁশরি আপনা পাশরি,
এলে সে-প্রলয় নাটে গো,
তুমি প্রাণের রক্তে রাঙালে তোমার
জীবন-গোধূলি পাটে গো॥
হে চির-কিশোর, হে চির-তরুণ,
চির-শিশু চির-কোমল করুণ।
দাও অমিয়া আরো অমিয়া,
দাও উদয়-ঊষারে লজ্জা গো তুমি
গোধূলির রঙে রঙিয়া।
প্রখর রবি-প্রদীপ্ত গগনে,
তুমি রাঙা মেঘ খেল আন্মনে,
উৎসব-শেষে দেউলাঙ্গনে
নিরালা বাজাও বাঁশরি,
আমি স্বপন-জড়িত ঘুমে সেই সুর
শুনিব সকল পাশরি'॥
-
রচনাকাল ও স্থান: ১৩৩৮ বঙ্গাব্দের ৬ই
ভাদ্র (রবিবার, ২৩ আগষ্ট ১৯৩১), 'বেলঘরিয়া রসচক্র সাহিত্য সংসদ' কবি যতীন্দ্রমোহন বাগচী'র সম্বর্ধনার
জন্য একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে নজরুল এই গানটি রচনা
করেছিলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে নজরুল নিজেই গানটি পরিবেশন করেছিলেন।
এই
সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩২ বৎসর ২ মাস।
- গ্রন্থ:
-
সুর-সাকী
- প্রথম সংস্করণ [আষাঢ় ১৩৩৯ বঙ্গাব্দ। জুলাই ১৯৩২]
-
নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ, চতুর্থ খণ্ড। বাংলা একাডেমী, ঢাকা। [জ্যৈষ্ঠ
১৪১৮, মে ২০১১। সুর-সাকী। ৫৭। কীর্তন। পৃষ্ঠা: ২৫৭-২৫৮]
- নজরুল-সঙ্গীত
সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা
১৪৪৭। পৃষ্ঠা: ৪৩৫-৪৩৬]
- পত্রিকা:
- জয়তী ।
শ্রাবণ-আশ্বিন ১৩৩৮ (আগষ্ট-সেপ্টেম্বর ১৯৩১)
- উপাসনা। আশ্বিন ১৩৩৮
(সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ১৯৩১)