নামিল বাদল! রুমু রুমু ঝুমু নূপুর চরণে
চল লো বাদল-পরী, আকাশ-আঙিনা ভরি’
                        নৃত্য-উছল॥
চামেলি কদম যূঁথী মুঠি মুঠি ছড়ায়ে
উতল পবনে দে অঞ্চল উড়ায়ে,
তৃষিত চাতক-তৃষ্ণারে জুড়ায়ে চল্ ধরাতল॥

• ভাবার্থ: আলেয়া নাটকের জন্য রচিত এই গানটি বৃষ্টির গান হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। বাদলা দিনে যখন বৃষ্টিধারা তার জলনূপুরের রুমুঝুমু ছন্দে আকাশের আঙিনা মুখরিত করে তোলে, তখন তার নৃত্যানন্দের সঙ্গিনী হিসেবে সে বাদল-পরীকে আহ্বান করে।
  
  বৃষ্টিধারা তার সঙ্গিনী বাদল-পরীকে বলে- ধরাতলে মুঠি মুঠি ছড়িয়ে থাকা চামেলি, কদম যূঁথী ফুল আর তৃষ্ণার্ত চাতকের তৃষ্ণা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য- উতলা পবনে যেন তার বৃষ্টিকণার অঞ্চল উড়িয়ে পৃথিবীর বুকে নামুক।
   
• রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। এই গানটি 'আলেয়া' গীতিনাট্যে প্রস্তাবনা'র গান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। উল্লেখ্য, কল্লোল পত্রিকার 'আষাঢ় ১৩৩৬' সংখ্যার 'সাহিত্য-সংবাদ' বিভাগে'  বিষয়ে একটি তথ্য পাওয়া যায়। তথ্যটি হলো-

  'নজরুল ইসলাম একখানি অপেরা লিখেছেন। প্রথমে তার নাম দিয়েছিলেন 'মরুতৃষ্ণা'। সম্প্রতি তার নাম বদলে 'আলেয়া' নামকরণ হয়েছে। গীতি-নাট্যখানি সম্ভবত মনোমোহনে অভিনীত হবে। এতে গান আছে ত্রিশখানি। নাচে গানে অপরূপ হয়েই আশা করি এ অপেরাখানি জনসাধারণের মন হরণ করেবে।'

  এই বিচারে ধারণা করা যায়, গানটি নজরুল রচনা করেছিলেন, ১৩৩৬ বঙ্গাব্দের জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসের দিকে। এই  সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩০ বৎসর ১ মাস।

• গ্রন্থ
  •  আলেয়া
    • প্রথম সংস্করণ [ডি,এম, লাইব্রেরী। ১৩৩৮ বঙ্গাব্দ। প্রথম অঙ্ক: বৃষ্টিধারার গান] আলেয়া'তে গানটির প্রথম চরণ ছিল- 'রুমু রুমু ঝুমু নূপর চরণে'
    • নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ। চতুর্থ খণ্ড [বাংলা একাডেমী, ঢাকা জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮।  মে ২০১১। আলেয়া।প্রথম অঙ্ক: বৃষ্টিধারার গান।  পৃষ্ঠা: ৩৩৯]
  • পত্রিকা:
    • নাচঘর। ২ পৌষ ১৩৩৮ (শুক্রবার ১৮ ডিসেম্বর ১৯৩১)। আলেয়ার গান 
• পর্যায়:
  • বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি, বৃষ্টিধারার গান। নাট্যগীতি