বিষয়: নজরুল সঙ্গীত
শিরোনাম:মোরে ভালোবাসায় ভুলিয়ো না
তাল: কাহারবা
মোরে
ভালোবাসায় ভুলিয়ো না
পাওয়ার আশায় ভুলিয়ো
মোরে
আদর দিয়ে দুলিয়ো না
আঘাত দিয়ে দুলিয়ো
হে প্রিয় মোর একি মোহ
এ
প্রাণ শুধু চায় বিরহ
তুমি
কঠিন সুরে বেঁধে আমায়
সুরের লহর তুলিয়ো
প্রভু
শান্তি চাহে জুড়াতে সব
আমি চাহি পুড়িতে
সুখের ঘরে আগুন জ্বেলে’
পথে পথে ঝুরিতে;
বঁধু
পথে পথে ঝুরিতে।
নগ্ন দিনের আলোকেতে
চাহি না তোমায় ব'ক্ষে
পেতে
তুমি
ঘুমের মাঝে স্বপনেতে
হৃদয়-দুয়ার খুলিয়ো
- ভাবার্থ: ভক্তি রসের সিক্ত একটি দ্ব্যর্থক ভাব এ
গানে পাওয়া যায়। গানের শুরুতে মানবিক প্রেমের অভিব্যক্তি প্রকাশিত হয়েছে বলে মনে
হলেও- সঞ্চারীতে 'প্রভু'র কাছে তাঁর সবিশেষ নিবেদন, গানটিকে প্রার্থনা সঙ্গীতে
রূপ দিয়েছে।
ভালোলাগার মোহ থেকে সাধারণ ভালোবাসার উদ্ভব। এই মোহ ভঙ্গ হলে- ভালোবাসার
অপমৃত্যু ঘটে। কিন্তু শাশ্বত ভালোবাসা হলো চিরন্তন এবং অবিনশ্বর, তাকে গভীরভাবে
পাওয়া বা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষাই হলো- শাশ্বত প্রেম। এই গানের স্থায়ীর প্রথম পংক্তিতে,
কবি তাঁর স্রষ্টার কাছে এই শাশ্বত প্রেমের আকাঙক্ষাই ব্যক্ত করেছেন। শুধু
ক্ষণিকের সুখ-সম্ভোগের মধ্য ভালোবাসার স্বরূপ উপলব্ধি করা যায় না, আদর ও আঘাতের
যুগপৎ প্রাপ্তি বা উপলব্ধির মধ্য দিয়ে শাশ্বত ভালোবাসার স্বরূপ প্রকাশ পায়। স্রষ্টার
কাছে কবির প্রার্থনা, যেনো শুধু আদর দিয়ে তাঁকে ভুলিয়ে না রাখেন, আঘাতের
দ্বারাও যেন তাঁর ভালোবাসার প্রাপ্তি ঘটে।
গানটির অন্তরাতে পাওয়া যায়, কবির দুঃখ-বিলাসের অতীন্দ্রিয় কামনা। ভালোবাসার
প্রাপ্তিতে রয়েছে মোহ, এই মোহ -ভঙ্গ হয় বিরহ বা আঘাতে। শুধু প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে
প্রেম নিরানন্দ হয়ে ওঠে। বিরহ বা আঘাত প্রেম-মাধুর্যকে বৈচিত্র্যময় করে তোলে।
বিরহের কঠিন আঘাতে প্রাণের গভীরে যে বেদনার মূর্ছনা তরঙ্গিত হয়ে ওঠে, কবি তারও
আস্বাদ নিতে চান। যেন এর ভিতর দিয়েই কবি ঈশ্বরের যথার্থ প্রেমিক হয়ে উঠতে পারেন।
ঈশ্বরের
কাছে তিনি নিবেদন করছেন- যেন দুখের দহনে সকল মোহময় সুখকে পুড়িয়ে, সব হারানোর
দুঃখ নিয়ে জীবনযাপন করতে পারেন। তারপরেও কবি কঠিন বাস্তব পৃথিবীর বন্ধুর পথে কবি
ঈশ্বরকে পেতে চান। তিনি ঘুম বা ধ্যানের গভীরে স্রষ্টাকে উপলব্ধি করতে চান
স্বপনের দোলায়।
- রচনাকাল ও স্থান:
গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের
জানুয়ারি (পৌষ-মাঘ ১৩৪৩) মাসে
এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানি গানটির প্রথম রেকর্ড করে।
পরে রেকর্ডটি বাতিল হয়েছিল। এই
সময় নজরুল ইসলামের বয়স ছিল ৩৮ বৎসর ৭ মাস।
- রেকর্ড:
-
এইচএমভি। জানুয়ারি ১৯৩৭ (পৌষ-মাঘ ১৩৪৩)
শিল্পী: মৃণালকান্তি
ঘোষ। রেকর্ডটি বাতিল হয়েছিল।
-
এইচএমভি।
এপ্রিল ১৯৪০ (চৈত্র ১৩৪৬-বৈশাখ ১৩৪৭)। এন ১৭৪৪৭। শিল্পী: সুধা বন্দ্যোপাধ্যায়
- স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি: রশিদুন্ নবী ।
নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি (দশম খণ্ড)। প্রথম প্রকাশ, ৩
ফাল্গুন,
১৩৯৯ বঙ্গাব্দ/ ২৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দ। ২৩ সংখ্যক গান]
[নমুনা]
- সুরকার: শৈলেশ দত্তগুপ্ত।
- পর্যায়
- বিষয়াঙ্গ: ভক্তি
- সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্য
- তাল:
কাহারবা