বিষয়: নজরুলসঙ্গীত
শিরোনাম: ঘোর তিমির ছাইল রবি শশী গ্রহ তারা
রাগ: বাগেশ্রী, তাল:
কাওয়ালি
ঘোর তিমির ছাইল
রবি শশী গ্রহ তারা।
কাঁপে তরাসে ভীতা ধরণি
অসীম আঁধারে হারা॥
প্রলয়েশ মহাকাল,
এলায়েছে জটাজাল
নাচিছে ঝড়ের বেগে
সুরধুনী-জলধারা॥
চমকি চমকি ওঠে
চপলা চপল-ফণা,
লুকাইল শিশুশশী,
মুরছিতা দিগঙ্গনা।
চাতকী চাতক-বুকে
বিভল কাঁদিয়া সারা॥
-
ভাবার্থ: ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ বর্ষার ভয়ঙ্কর রূপ বর্ণনা করা হয়েছে এ গানে।
বরষার ঘন মেঘে আকাশ অন্ধকারে ছেয়েছে গেছে। সে অন্ধকারের আড়ালে হারিয়ে গেছে
সূর্য, চন্দ্র, গ্রহ, নক্ষত্র। অসীম অন্ধকারে নিমজ্জিতা ভীতা ধরিত্রী ভয়ে কাঁপছে।
যেন মহাপ্রলয়ের অধীশ্বর (শিব), এলায়ে দিয়েছে তার ভয়ঙ্কর ধ্বংসের এলোকেশ। এর সাথে
ঝড়ের বেগে নেচে চলেছে সুরধুনীর (গঙ্গা) জলধারা। আকাশের গায়ে চমকে উঠছে বিদ্যুতের চঞ্চল
ফণা। ঝঞ্ঝবিক্ষুব্ধ রাত্রির ঘোরতর অন্ধকারে শিশুর মতো চাঁদ ভয়ে মুখ লুকিয়েছে।
মুর্চ্ছিতা হয়েছে দিগঙ্গনারা (দিকসমূহের অধিষ্ঠাত্রী দেবীরা)। আর জপলিপয়াসী
চাতকী চাতকের বুকে আশ্রয় নিয়ে কাঁদছে।
-
রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু
জানা যায় না। ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের জুন
(আষাঢ় ১৩৩৬) মাসে কলকাতার মনোমোহন
থিয়েটারে শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের রচিত
রক্তকমল
নাটক মঞ্চস্থ হয়। উক্ত নাটকে প্রথম এই গানটি ব্যবহৃত হয়েছিল। ধারণা করা হয়,
এই সময় নজরুলের
বয়স ছিল ৩০ বৎসর ১ মাস।
- মঞ্চনাটক:
- গ্রন্থ:
-
চোখের চাতক ।
- প্রথম সংস্করণ [অগ্রহায়ণ ১৩৩৬ (ডিসেম্বর ১৯২৯)। গান ১২। বাগেশ্রী-কাওয়ালি]
- নজরুল-রচনাবলী, দ্বিতীয় খণ্ড [বাংলা একাডেমী, ফাল্গুন ১৪১৩। ফেব্রুয়ারি ২০০৭। চোখের চাতক। গান ১২।
বাগেশ্রী-কাওয়ালি। পৃষ্ঠা: ২০০-২০১]
-
নজরুল গীতিকা।
- প্রথম সংস্করণ [ভাদ্র ১৩৩৭ বঙ্গাব্দ। ২ সেপ্টেম্বর ১৯৩০। বাগেশ্রী-কাওয়ালী। পৃষ্ঠা ১৪৭]
- নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ। তৃতীয় খণ্ড [বাংলা একাডেমী,
ঢাকা ফাল্গুন ১৪১৩/মার্চ ২০০৭] খেয়াল । ১২২।
বাগেশ্রী-কাওয়ালী। পৃষ্ঠা:
২৫৫-২৫৬]