বিষয়:
নজরুল সঙ্গীত
শিরোনাম
: ঐ হের রসুলে-খোদা এলো ঐ
ঐ রসুলে-খোদা এলো ঐ॥
গেলেন মদিনা যবে হিজরতে হজরত
মদিনা হলো যেন খুশিতে জিন্নত,
ছুটিয়া আসিল পথে মর্দ ও আওরত
লুটায়ে পায়ে নবীর, গাহে সব উম্মত
ঐ হের রসুলে-খোদা এলো ঐ॥
হাজার সে কাফের সেনা বদরে,
তিন শত তের মমিন এধারে;
হজরতে দেখিল যেই, কাঁপিয়া ডরে
কহিল কাফের সব তাজিমের স্বরে
ঐ হের রসুলে-খোদা এলো ঐ॥
কাঁদিয়া কেয়ামতে গুনাহ্গার সব,
নবীর কাছে শাফায়তী করিবেন তলব,
আসিবেন কাঁদন শুনি' সেই শাহে-আরব
অমনি উঠিবে সেথা খুশির কলরব
ঐ হের রসুলে-খোদা এলো ঐ॥
- ভাবসন্ধান: ইসলাম ধর্মের প্রারম্ভিক কালে ইসলাম বিরোধীদের প্রবল বাধা এবং
অত্যাচরের কারণে- রসুলে- খোদা (মুহম্মদ সাঃ) মক্কা ত্যাগ করে মদিনায় চলে যান।
ইসলামের ইতিহাসে এই ঘটনাকে হিজরত বলা হয়। নবীর মদিনায় পৌঁছার পর, মদিনাবাসীর মনে
যে উচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়েছিল, তারই বর্ণনা এবং নবীর মহিমা এই গানে উপস্থাপন করা হয়েছে এই গানে।
নবীর আসার পথ চেয়ে প্রতীক্ষায় ছিল মদিনাবাসী। মদিনার অদূরে নবী পৌঁছার পর, তাঁকে দেখার আনন্দে উল্লসিত হয়েছেন। তাঁর আগমনে যেন মদিনা হয়ে
গিয়েছিল আনন্দ-জিন্নত (জান্নাত,
বেহশত)। ভক্তি ও প্রেমে উদ্বেলিত মদিনার নরনারী ছুটে এসে লুটিয়ে পড়েছিলেন তাঁর পায়ে,
পরমানন্দে তাঁর আগমন বার্তা প্রচার করে বলেছিলেন- 'ঐ হের রসুলে-খোদা এলো ঐ'।
বদরে যুদ্ধে হাজার হাজার কাফের সেনা (ইসলাম বিরোধী সৈন্য), মুসলমানদের বিনাশ করার জন্য
হাজির হয়েছিল বদর প্রান্তরে। তখন মাত্র তিনশত তের জন্য ইমানদার মুসলিম সৈন্য তাঁদের মুখোমুখি হছিলেন।
কিন্তু যুদ্ধ প্রান্তরে যখন নবী এসে দাঁড়ালেন- তখন কাফিররা ভয় পেয়ে নবীকে
তাজিম স্বর (সম্মানের ভাষায়) স্বীকার করে নিলেন- 'ঐ হের রসুলে-খোদা এলো ঐ'।
কেয়ামতের দিনে সকল পাপীরা শাস্তির ভয়ে কাঁদবেন, তখন নবীই হবেন তাঁর উদ্ধার কর্তা।
উল্লেখ্য, শাফায়াত বলতে ইসলামি পরিভাষায় কল্যাণ ও ক্ষমার জন্য আল্লাহর নিকট নবীর সুপারিশ করাকে বোঝায়। হাশরের ময়দানে আল্লাহর কাছে
নবি শাফায়াত করবেন, তাঁদের উম্মতের জন্য। তাই তাঁর উম্মতদের আহাজারি শুনে নবী যখন
উপস্থিত হবেন, তখন সেখানে খুশির কলরব উঠবে, বলবেন - 'ঐ হের রসুলে-খোদা এলো
ঐ'।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে জানা যায় না। ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ (ফাল্গুন-চৈত্র ১৩৪২) মাসে
এইচএমভি
রেকর্ড কোম্পানি গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশ করে। এই সময় নজরুল ইসলামের বয়স
ছিল ৩৬ বৎসর ৯ মাস।
- গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ (নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮।
ফেব্রুয়ারি ২০১২)। ১৭৮ সংখ্যক গান।
- রেকর্ড: এইচএমভি।
মার্চ ১৯৩৬ (ফাল্গুন-চৈত্র ১৩৪২)। এন ৭৪৯৯। শিল্পী: পিয়ারু কাওয়াল
- স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি:
আহসান মুর্শেদ।
নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি (ঊনবিংশ খণ্ড)।
সপ্তম গান]
[নমুনা]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। ইসলামি গান। নাত-এ-রসুল
- সুরাঙ্গ: কাওয়ালি