বিষয়:
নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম:
আজি আল কোরায়শী প্রিয় নবী এলেন
ধরাধাম
আজি আল কোরায়শী প্রিয় নবী এলেন ধরাধাম
তাঁর কদম মোবারকে লাখো হাজারো সালাম।
তওরত ইঞ্জিলে মুসা ঈসা পয়গম্বর
বলেছিলেন আগাম যাঁহার আসারি খবর
রব্বুলে দায়েব যাঁহার দিয়েছিলেন নাম
সেই আহ্মদ মোর্তজা আজি এলেন আরব ধাম॥
আদমেরি পেশানিতে জ্যোতি ছিল যাঁর
যাঁর গুণে নূহ্ তরে গেল তুফান পাথার
যাঁর নূরে নমরুদের
আগুন হলো ফুলহার
সেই মোহাম্মদ মুস্তাফা এলেন নিয়ে দীন-ইসলাম॥
এলেন কাবার মুক্তিদাতা মসজিদের প্রাণ,
শাফায়াতের তরী এলো পাপী তাপীর ত্রাণ
দিকে দিকে শুনি খোদার নামের আজান
নবীর রূপে এলো খোদার রহমতেরি জাম॥
-
ভাবসন্ধান: এই গানে ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হজরত মুহম্মদ (সাঃ)-এর
জন্মগ্রহণের মহিমা অবলম্বনে তাঁর বন্দনা করা হয়েছে। এই গানের শুরুতে কোরাইশ বংশে জন্মগ্রহণকারী
নবিকে বিনীত সালাম জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গক্রমে এ্ই গানে উল্লেখ করা হয়েছে- তাঁর
পূর্বর্তী নবিদের দেওয়া হজরত মুহম্মদ (সাঃ)-এর আগমনী বার্তা। ইসলাম ধর্মমতে- এই
আগমনী বার্তা দিয়েছিলেন- মুসা (আঃ)
আসমানি কিতাব তওরতে এবং ঈসা (আঃ) ইঞ্জিল শরিফে।
স্বয়ং রব্বুলর
দায়েব (প্রজ্ঞময় প্রভু অর্থে আল্লাহ) এই নবির নাম দিয়েছিলেন- আহমদ মোরতজা (আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনকারী প্রশংসার যোগ্য, উন্নতচরিত্র, প্রশংসনীয়)।
এই গানে প্রসঙ্গক্রমে বলা হয়েছে- আদম (আঃ)-এর ললাটে ছিল এই নবির জ্যোতি। হজরত মুহম্মদ (সাঃ)-এর মহিমায় নূহ (আঃ)
ঝঞ্ঝাপূর্ণ মহাপ্লাবনের মহাসাগর থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন। তাঁর জ্যোতিতেই নমরুদের
অগ্নিকুণ্ডের আগুন ফুলহার হয়ে ইব্রাহিম (আঃ) গলায় শোভিত হয়েছিল। এই সেই নবি যিনি এনেছেন
দীন-ইসলাম।
নবির আগমনের আগে পৌত্তালিকরা সকল মসজিদের ভিত্তি হিসেবে মহিমান্বিত কাবা অধিকার করে
রেখেছিল। নবি সেই কাবাকে পৌত্তালিকদের হাত থেকে উদ্ধার করেছিলেন। পাপী-তাপীদের
ত্রাণকর্তারূপে এবং শেষ বিচারের দিনে কল্যাণ ও ক্ষমার জন্য আল্লাহর নিকট সুপারিশকারী
হিসেবে তিনি এসেছেন। তাঁরই কারণে আজানের মাধ্যমে দিকে দিকে খোদার নাম ধ্বনিত হয়।
তিনি খোদার রহমতের বিজয়রূপে নবী হয়ে এসেছিলেন পৃথিবীতে।
-
রচনাকাল ও স্থান: গানটির
রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের মে
(বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৪) মাসে,
পায়োনিয়র রেকর্ড কোম্পানি
এই গানের একটি রেকর্ড প্রকাশ করেছিল। এই সময় নজরুলের ইসলামের বয়স ছিল ৩৭ বৎসর ১১ মাস।
- রেকর্ড:
- পায়োনিয়র। [মে ১৯৩৭ বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৬) এন.কিউ ১০৩। শিল্পী: দিলওয়ার হোসেন (চিত্ত রায়)
- চুক্তি [২৮ জুন ১৯৩৭ জুন (সোমাবার ১৪ আষাঢ় ১৩৪৪)।
রেকর্ড কোম্পানির সাথে নজরুলের একটি চুক্তি হয়। এই চুক্তিপত্রে এই গানটির
উল্লেখ আছে।
- টুইন। মে ১৯৩৯ (বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৬)। এফটি ৪৮৮৪। শিল্পী: আব্দুল লতিফ ও তার সঙ্গীরা
[শ্রবণ নমুনা]
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
সুধীন দাশ।
নজরুল-সঙ্গীত স্বরলিপি, পঞ্চদশ খণ্ড।
ভাদ্র ১৪০৩। আগষ্ট ১৯৯৬। তৃতীয়
গান। রেকর্ডে দিলওয়ার হোসেন (চিত্ত রায়)-এর গাওয়া গানের সুরানুসারে স্বরলিপি করা
হয়েছে। [নমুনা]
- সুরকার: সুবল দাশগুপ্ত
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। ইসলামী গান। নাত-এ-রসুল
- সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্য
- তাল:
কাহারবা
- গ্রহস্বর: জ্ঞা