বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: কেন চাঁদিনী রাতে মেঘ আসে ছায়া ক'রে
কেন চাঁদিনী রাতে মেঘ আসে ছায়া ক'রে।
সুখের বাসরে কেন, প্রাণ ওঠে বিষাদে ভ'রে॥
কেন মিলন রাতে, সলিল আঁখি পাতে,
কেন ফাগুন প্রাতে, সহসা বারি ঝরে॥
ডাকিয়া ফুলবনে, থাকে সে আন্মনে,
কাঁদায় নিরজনে, কাঁদে কে কিসের তরে॥
- ভাবসন্ধান: অনিবার্য আনন্দ-বেদনার মধ্য দিয়ে মানুষের জীবন অতিবাহিত
হয়। এই চিরন্তন সত্যেকে জেনেও মানুষ শুধুই সুখের প্রত্যাশা করে। দুঃখ মানুষের
কাছে চিরন্তন সত্য হয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত। তাই সুখের ভিতরে দুঃখের ছায়া দেখলেই সে
কাতর হয়ে পড়ে। সে ভাবে জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলোর ভিতরে কেন দুঃখের ছায়া নেমে
আসে। মানুষের এই স্বাভাবিক প্রবৃত্তিই এই গানের ভিতরে উপস্থাপিত হয়েছে। মনোরম
চাঁদনী রাতে যে স্নিগ্ধ মায়াবী জগৎ তৈরি হয়, তখনই মেঘ এসে কেন সেই মনোরম চরাচরকে
মলিন করে দেয়। যাপিত জীবনে তেমনি কখনো কখনো আনন্দঘন মিলনমেলা বেদনার স্পরশে
মলিন হয়ে যায়। কেন এমন হয়, কবি তাঁর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন এই গানের
স্থায়ীতে।
গানের অবশিষ্ট অংশে তারই অনুরণন পাওয়া যায়। কেন মিলনরাতে চোখে বেদনার অশ্রু ঝরে,
কেন বসন্তের বর্ণাঢ্য আসর, হঠাৎ আসা দুঃখে বেদনাবিধুর হয়ে ওঠে। বুলবনের সৌরভঘন
সুশোভিত অঙ্গনে অভিসারের জন্য যে প্রেমিকের ডাকে ছুটে আসে প্রেমিকা, কিন্তু
শুভমিলনের শুভক্ষণে সে প্রেমিক আনমনা হয়ে যায়, অবেহেলা করে প্রেমিকাকে। কিসের
তরে সে প্রেমিকাকে কাঁদায়, কেনই বা সে নিজেই কাঁদে।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে
সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি
(পৌষ-মাঘ ১৩৩৯) মাসে, টুইন রেকর্ড কোম্পানি থেকে গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।
এই
সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৩
বৎসর৭
মাস।
- গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত
সংগ্রহ,[নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা
৪৯২। পৃষ্ঠা:
১৫১]
- রেকর্ড: টুইন [জানুয়ারি ১৯৩৩ (পৌষ-মাঘ ১৩৩৯)। এফটি ২৩৫৮। শিল্পী: ঊষারাণী]
- স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি: সালাউদ্দিন আহ্মেদ
[নজরুল-সঙ্গীত
স্বরলিপি, অষ্টাদশ খণ্ড। প্রথম সংস্করণ। নজরুল ইন্সটিটিউট আশ্বিন ১৪০৪/অক্টোবর
১৯৯৩। অষ্টম গান] [নমুনা]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: মরমী
- সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্য
- তাল: কাহারবা
- গ্রহস্বর: জ্ঞা