বিষয়:
নজরুল সঙ্গীত
শিরোনাম: রুম্ ঝুম্ ঝুম্ বাদল নূপুর বোলে বোলে
রুম্ ঝুম্ ঝুম্ বাদল নূপুর বোলে বোলে,
তমাল বরণী কে নাচে, কে নাচে গগন কোলে॥
তার অঙ্গের লাবনি যেন ঝরে অবিরল
হয়ে শীতল মেঘলা মতির ধারা জল।
কদম ফুলের পীত উত্তরী তার পুব হাওয়াতে দোলে॥
বিজলি ঝিলিকে তার বনমালার আভাস জাগে
বন কুন্তলা ধরা হলো শ্যাম মনোহরা তাহারি অনুরাগে।
তারে হেরি পাপিয়া পিয়া পিয়া কহে
সাগর কাঁদে নদী জল বহে
ময়ূর-ময়ূরী বন-শর্বরী নাচে ট'লে ট'লে॥
- ভাবার্থ: কলকাতা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত
বর্ষা মোদের প্রাণ
গীতি-চিত্রের কবি এই গানটি রচনা করেছিলেন। এই গানটিতে পাওয়া যায় বর্ষার একটি নৃত্যের ছন্দময় চিত্র।
গানটিতে বর্ষা উপস্থাপিত হয়েছে এক নিপুণা নৃত্যপটিয়সিনী রূপে। শ্যামল-বর্ণা এই
নটিনী নাচে গগনের কোলে। তার পায়ের ছন্দে বাদল-নূপুরের
রুম্ ঝুম্ ঝুম্ বোল ঝঙ্কৃত হয়। তার অঙ্গলাবণ্যই যেন শীতল মেঘলামতীর ধারার মতো অবিরল
জলধারা হয়ে ঝরে পড়ে। কদম ফুলরাশি তার পীত উত্তরীয় হয়ে পূব হাওয়াতে দোল খায়।
বিজলি ঝিলিকে তার কণ্ঠে বনমালার মতো আভাস জাগায়। বনরাজি যেন তার কেশরাশি। তার অঙ্গ
শ্যাম মনোহরার অনুরাগে প্রতিভাত হয়। এই নৃত্যময়ী দর্শনে পাপিয়া গেয়ে ওঠে পিয়া পিয়া।
মিলনের আশায় তরঙ্গিত সাগর বিরহক্রন্দনে উদ্বেলিত হয়, তাই সাগরসঙ্গমের জন্য নদী
জলতরঙ্গে প্রবাহিত হয়। প্রকৃতিতে বর্ষাকন্যার নাচের ছন্দে উদ্বেলিত হয়ে নাচে
ময়ূর-ময়ূরী, নাচে রাত্রির বনভূমি।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায়
না। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের ১০ জুলাই (বুধবার, ২৬ আষাঢ় ১৩৪৭), কলকাতা
বেতার কেন্দ্রের 'পল্লীমঙ্গল আসর'-এ নজরুল ইসলামের রচিত 'বর্ষা মোদের প্রাণ'
গীতি-চিত্র প্রচারিত হয়। এই অনুষ্ঠানে এই গানটি প্রথম পরিবেশিত হয়েছিল। এই
সময় নজরুলের বয়স ছিল ৪১ বৎসর ১ মাস।
রেকর্ড:
সেনোলা। জানুয়ারি ১৯৪১ (পৌষ-মাঘ ১৩৪৭)। কিউএস ৫১০ শিল্পী: নীলিমা বন্দ্যোপাধ্যায়। সুরকার: নজরুল ইসলাম।
- বেতার:
বর্ষা মোদের প্রাণ
(গীতি-চিত্র)। কলকাতা বেতার কেন্দ্র। পল্লীমঙ্গল অনুষ্ঠানের প্রথমাংশ।
বুধবার, ১০ জুলাই ১৯৪০, ২৬ আষাঢ় ১৩৪৭। বিকাল ৫টা।
সূত্র
- নজরুল সঙ্গীত-নির্দেশিকা। ব্রহ্মমোহন ঠাকুর। কবি নজরুল
ইনস্টিটিটউট, ঢাকা। আষাঢ় ১৪২৫/জুন ২০১৮।
- বেতার জগৎ পত্রিকার ১১শ বর্ষ
১৩শ সংখ্যা। পৃষ্ঠা: ৭১৫
- The Indian
Listener, Vol, V No 13 page 1009
- গ্রন্থ:
নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ, (নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। ফেব্রুয়ারি ২০১২)। ৫২৩ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা:
১৬০।
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
নীলিমা দাস।
[নজরুল
সঙ্গীত স্বরলিপি, ঊনত্রিশতম খণ্ড, নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা। শ্রাবণ ১৪১৩/আগষ্ট
২০০৬] ২৪ সংখ্যক গান। নীলিমা বন্দ্যোপাধ্যায়-এর রেকর্ডে গাওয়া গান অনুসারে স্বরলিপি করা হয়েছে।
[নমুনা]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি, বর্ষা [গীতিচিত্র]
- সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্য