বিষয়:
নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম
:
যাবি কে মদিনায় আয় ত্বরা করি'
যাবি কে মদিনায় আয় ত্বরা করি'।
তোর খেয়া ঘাটে এলো পুণ্য তরী॥
আবুবকর, উমর খাত্তাব, ওসমান্, আলী হায়দার
দাঁড়ি এ সোনার তরণীর, পাপী সব নাই নাই আর ডর।
এ তরীর কাণ্ডারি আহ্মদ পাকা সব মাঝি ও মাল্লা,
মাঝিদের মুখে সারিগান শোন্ ঐ 'লা শরীক আল্লাহ্'।
পাপ-দরিয়ার তুফানে আর নাহি ডরি॥
ঈমানের পারানি
কড়ি আছে যার আয় এ সোনার নায়
-
ধরিয়া দ্বীনের রশি কলেমার জাহাজ-ঘাটায়।
ফেরদৌস্ হতে ডাকে হুরী-পরী॥
- ভাবসন্ধান: এই গানে ইসলাম ধর্মে তীর্থভূমির রূপকতায় মদিনা উপস্থাপন
করা হয়েছে। আধ্যাত্মিক ভক্তি দর্শনে এই নগরীতে পৌঁছার অর্থই হলো- আল্লাহর
সান্নিধ্য পাওয়া। কবি জানেন দূর মদিনা আর পার্থিব জগত মাঝে রয়েছে জাগতিক
ঝঞ্ছাবিক্ষুব্ধ দশা।
কবি রয়েছেন এই সাগরের পাপে ভরা কলুষিত অজ্ঞতার কূলে, আর অপর পারে রয়েছে
পূন্যতীর্থরূপী মদিনা। ঈমান ও ভক্তির নৌকায় চড়ে পাপ ও অজ্ঞতার নদী পার হয়ে সেই
পূন্যভূমিতে যাওয়ার আহ্বান করা হয়েছে এই গানে। এই গানে ইসলামের
সত্য-সুন্দরের পথের বাহনকে রূপকার্থে তরী হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে।
ইসলামের চার খলিফা (আবুবকর, উমর খাত্তাব, ওসমান্, আলী হায়দার) সত্য-পথের
এই নৌকার দাঁড়ি। তাই সেখানে পাপ ও তাপীর কোনো শঙ্কা নেই। এই তরীর মূল কাণ্ডারি বা
পথপ্রদর্শক হলেন নবি (হজরত মুহম্মদ (সাঃ) হলেন। তাই এই তরীর মাঝিদের (নৌকা চালনাকারী অর্থে,
মাল্লা) সারিগানের বাণী হলো- 'লা শরীক আল্লাহ্' (আল্লাহর কোনো শরিক নাই)।
তাই পাপ-দরিয়া বুকে যতই ঝড় তুফান (বাধা) আসুক, তাতে ভয় নেই। তাই এই সোনার
নৌকায় পাড়ি দেবার পারানির মূল্য পরিশোধের জন্য যাদের ঈমানের কড়ি আছে,
তাঁদেরকে এই নৌকায় চড়ার আহ্বান করা হয়েছে। ধর্মের রশি ধরে কলেমারূপী বন্দরে এই
তরী পৌছাবে যখন. ফেরদৌস (বেহেস্ত) হতে ডাকবে হুরী-পরীরা।
- রচনাকাল: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু
জানা যায় না। ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর (আশ্বিন ১৩৩৮ বঙ্গাব্দ) মাসে প্রকাশিত
'চন্দ্রবিন্দু' সঙ্গীত-সংকলনে গানটি প্রথম অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুল ইসলামের বয়স ছিল ৩২ বৎসর ৪ মাস।
- গ্রন্থ:
-
চন্দ্রবিন্দু
- প্রথম সংস্করণ [সেপ্টেম্বর ১৯৩১, আশ্বিন ১৩৩৮ বঙ্গাব্দ।]
- নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ, চতুর্থ খণ্ড [জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮, মে ২০১১।
চন্দ্রবিন্দু। ৪২। পিলু-কাহারবা। পৃষ্ঠা: ১৮৩-১৮৪]
-
জুলফিকার
- প্রথম সংস্করণ। ১৫ অক্টোবর ১৯৩২ (শনিবার ২৯ আশ্বিন ১৩৩৯) পিলু-কার্ফা]।
- নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ। চতুর্থ খণ্ড। বাংলা
একাডেমী, ঢাকা। জ্যৈষ্ঠ ১৪১৪, মে ২০০৭, জুলফিকার।
১৩ সংখ্যক গান। পিলু-কার্ফা। পৃষ্ঠা: ২৯৮-২৯৯]
- নজরুল-সঙ্গীত
সংগ্রহ,
[নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। ফেব্রুয়ারি ২০১২। ৫৬৩ সংখ্যক গান। তাল:
কাহারবা। পৃষ্ঠা: ১৭২।
- রেকর্ড:
-
এইচএমভি [জুন ১৯৩৩ (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় ১৩৪০)
এন ৭১১৮।
শিল্পী: মহ. কাশেম ]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। ইসলাম। সাধারণ। ধর্মাচরণ