বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: ওরে শুভ্রবাসনা রজনীগন্ধা বনের বিধবা মেয়ে
ওরে শুভ্রবসনা রজনীগন্ধা বনের বিধবা মেয়ে,
হারানো কাহারে খুঁজিস নিশীথ-আকাশের পানে চেয়ে॥
ক্ষীণ তনুলতা বেদনা-মলিন,
উদাস মূরতি ভূষণবিহীন,
তোরে হেরি ঝরে কুসুম-অশ্রু বনের কপোল বেয়ে॥
তুই লুকায়ে কাঁদিস রজনী জাগিস সবাই ঘুমায় যবে,
বিধাতারে যেন বলিস - দেবতা আমারে লইবে কবে।
করুণ শুভ্র ভালোবাসা তোর
সুরভি ছড়ায় সারা নিশি ভোর,
প্রভাত বেলায় লুটাস ধূলায় যেন-কারে নাহি পেয়ে॥
- ভাবসন্ধান: গানটির বিষয়াঙ্গ প্রকৃতি (মহাজাগতিক), ফুলের গান। কবি রজনীগন্ধাকে
ব্যর্থ প্রেমের প্রতীক হিসেবে এই গানে
তুলে ধরেছেন। কবি কল্পনায় সে হয়েছে শুভ্রবসনা বনের বিধবা মেয়ে।
স্বামীসঙ্গহৌন এই ফুল যেন রাতের আকাশে তার হারানো জীবনসঙ্গীকে খুঁজে মরে। কবি তার কল্পচোখে, এই ফুলকে ক্ষীণ তন্বী সঙ্গীহীনের বেদনা-মলিন রূপে দেখেছন। বর্ণাঢ্য
আভরণ বিহীন এই ফুলকে তিনি বলেছেন ভূষণবিহীন। তার এই বিষাদ-মলিন রূপ দেখে
ব্যথাতুর বনভূমির কুসুম রাশি যেন কান্না হয়ে ঝরে পরে।
রাতের ফুল রজনীগন্ধা। কিন্তু কবির চোখে রজনীগন্ধা হয়ে উঠেছে নিদ্রামগ্ন রাতের
পৃথিবীতে গভীর ব্যথায় রাত-জাগানিয়া ফুল। যেন সে বিধাতার কাছে কেঁদে কয়, তাকে এই
ব্যথাতুর পৃথিবী থেকে মুক্ত করে কবে কাছে টেনে নেবে। কবি মনে করেন রজনীগন্ধ্যার
ভালোবাসা করুণ ও পবিত্র। সারারাত ধরে সে তার স্নিগ্ধ সুরভিত সৌরভ ছড়ায়। কিন্তু
প্রেম নিবেদনের মতো কাউকে না পেয়ে যেন সে প্রভাতের ধুলায় লুটিয়ে পরে।
রাত্রির অবসানের মতই তার প্রেমেরও সমাপ্তি হয়।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৩৩৯ খ্রিষ্টাব্দের জুন (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় ১৩৪৬) মাসে এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানি এই গানের প্রথম রেকর্ড প্রকাশ করেছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৪০ বৎসর ১ মাস।
- রেকর্ড:
এইচএমভি [জুন ১৯৩৯ (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় ১৩৪৬)। এন ১৭৩০৯। শিল্পী:
পদ্মরাণী চ্যাটার্জী। সুর: কমল দাশগুপ্ত]
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
আহসান মুর্শেদ
[নজরুল
সঙ্গীত স্বরলিপি, সাতাশ খণ্ড, নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা। কার্তিক, ১৪১২/অক্টোবর
২০০৫ খ্রিষ্টাব্দ] নবম গান
[নমুনা]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি (জাগতিক, ফুল)
- সুরাঙ্গ:
স্বকীয় বৈশিষ্ট্য
তাল:
দাদরা
- গ্রহস্বর: সা