নৈবেদ্য
তোমারে দিই নি সুখ, মুক্তির নৈবেদ্য গেনু রাখি
রজনীর শুভ্র অবসানে ; কিছু আর নাহি বাকি,
নাইকো প্রার্থনা, নাই প্রতি মুহূর্তের দৈন্যরাশি,
নাই অভিমান, নাই দীনকান্না, নাই গর্বহাসি,
নাই পিছে ফিরে দেখা । শুধু সে মুক্তির ডালিখানি
ভরিয়া দিলাম আজি আমার মহৎ মৃত্যু আনি ।
বাঙ্গালোর
আষাঢ় ১৩৩৫
অশ্রু
সুন্দর, তুমি চক্ষু ভরিয়া
এনেছ অশ্রুজল ।
এনেছ তোমার বক্ষে ধরিয়া
দুঃসহ হোমানল ।
দুঃখ যে তাই উজ্জ্বল হয়ে উঠে,
মুগ্ধ প্রাণের আবেশবন্ধ টুটে,
এ তাপে শ্বসিয়া উঠে বিকশিয়া
বিচ্ছেদশতদল ।
বাঙ্গালোর
আষাঢ় ১৩৩৫
অন্তর্ধান
তব অন্তর্ধানপটে হেরি তব রূপ চিরন্তন ।
অন্তরে অলক্ষ্যলোকে তোমার পরমআগমন ।
লভিলাম চিরস্পর্শমণি ;
তোমার শূন্যতা তুমি পরিপূর্ণ করেছ আপনি ।
জীবন আঁধার হল, সেই ক্ষণে পাইনু সন্ধান
সন্ধ্যার দেউলদীপ অন্তরে রাখিয়া গেছ দান ।
বিচ্ছেদেরি হোমবহ্নি হতে
পূজামূর্তি ধরে প্রেম, দেখা দেয় দুঃখের আলোতে ।
[শান্তিনিকেতন]
২৬ আষাঢ় ১৩৩৫ |