|
আনুমানিক চৌদ্দ
বৎসর। |
|
আনুমানিক সতেরো বৎসর। |
অনুবাদটি হলো- ‘গগনের থালে রবি চন্দ্র দীপক জ্বলে ,
তারকমণ্ডল চমকে মোতি রে। ......
বিস্তারিত: গগনের থালে রবি চন্দ্র দীপক জ্বলে
১৮৭৪ খ্রিষ্টাব্দে 'বেঙ্গল একাডেমী পরিত্যাগ করে 'বিদ্যাসাগর ইস্কুল' বা 'মেট্রোপলিটন স্কুলে' ভর্তি হন। কিন্তু এই স্কুলে তিনি একবারও যান নি। এই একই বৎসরে ইনি সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের স্কুল বিভাগে 'Fifth Year's Class' শ্রেণীতে ভর্তি হন। এই ক্লাসটি ছিল এই স্কুলের এন্ট্রান্স শ্রেণীর এক ক্লাস নিচে, শ্রেণীর নাম ছিল পঞ্চম শ্রেণী। এই স্কুলে ইনি নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারেন নি। অসুস্থতার অজুহাতে ইনি প্রায়ই স্কুল থেকে পালাতেন। ১৮৭৬ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম থেকে ইনি এই স্কুলে যাওয়া পরিত্যাগ করেন।
১৮৭৭ খ্রিষ্টাব্দে ঠাকুরবাড়ি থেকে ভারতী নামক মাসিক পত্রিকার প্রকাশ শুরু হয়। প্রথম বর্ষের পৌষ সংখ্যা থেকে চৈত্র সংখ্যা পর্যন্ত ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়েছিল। এর প্রথম সংখ্যা থেকেই রবীন্দ্রনাথে রচনা প্রকাশ হতে থাকে।
১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দের ২০ সেপ্টেম্বর ইংল্যাণ্ডে পড়াশুনা করতে যান। সেখানকার ব্রাইটনে কিছুদিন এবং লণ্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজের অধ্যাপক হেনরি মর্লির কাছে তিন মাস ইংরেজি সাহিত্য পড়েন। এই বৎসরের ৫ নভেম্বর তারিখে তাঁর কবি-কাহিনী নামক কাব্য গ্রন্থ প্রকাশিত হয়।
রচনার দিক দিয়া
'বন-ফুল' পূর্ববর্তী হলেও 'কবি-কাহিনী'-ই
পুস্তকাকারে প্রকাশিত রবীন্দ্রনাথের সর্বপ্রথম কাব্যগ্রন্থ। ১৮৭৮
খ্রিষ্টাব্দের ৫ নভেম্বর তারিখে কবি-কাহিনী প্রকাশিত হয়েছিল। এই গ্রন্থটি সম্পর্কে
সম্বন্ধে রবীন্দ্রনাথ তাঁহার 'জীবনস্মৃতি'তে লিখেছেন– রবীন্দ্রনাথের এই উক্তির মধ্যে সামান্য একটু ভুল আছে। মূলত রবীন্দ্রনাথ আমেদাবাদে থাকাকালীন সময়ে এই গ্রন্থ প্রকাশিত হয় নাই। ১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দের ২০ সেপ্টেম্বর তিনি বিলাত যাত্রা করেন। আর 'কবি-কাহিনী' ৫ নবেম্বর প্রকাশিত হয়। তিনি এই গ্রন্থটি মুদ্রিত অবস্থায় দেখে যেতে পারেন নি। রবীন্দ্রনাথ-উল্লিখিত "উৎসাহী বন্ধু"ই 'কবি-কাহিনী'র প্রকাশক প্রবোধচন্দ্র ঘোষ। রচনাকালের বিচারে 'বন-ফুল' রবীন্দ্রনাথ-লিখিত সর্বপ্রথম সম্পূর্ণ কাব্যগ্রন্থ। গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছিল ১২৮৬ বঙ্গাব্দে। [৯ মার্চ্ ১৮৮০খ্রিষ্টাব্দ]। |
১৮৮০ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি
মাসে ইংল্যাণ্ডের শিক্ষা অসমাপ্ত রেখে দেশে ফিরে আসেন।
পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে,
এই বৎসরে তাঁর
বনফুল
নামক গ্রন্থটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
১৮৮১ খ্রিষ্টাব্দের ২২
এপ্রিল তারিখে ব্যারিষ্টারি পড়ার উদ্দেশ্যে ইনি দ্বিতীয়বার ইংল্যাণ্ডের পথে রওনা হয়ে
মাদ্রাজ থেকে ফিরে আসেন।
এই বৎসরের ২৩ জুন
[১৮০৩ শকাব্দ]
তারিখে তাঁর
ভগ্নহৃদয়
নামক নাট্যকাব্য
প্রকাশিত হয় এবং
২৫ জুন তারিখে প্রকাশিত হয়
রুদ্রচণ্ড
নামক নাটিকা।
|
'বাল্মীকি-প্রতিভা'
অভিনয়কালে। |
১৮৮৩ খ্রিষ্টাব্দের ৯ ডিসেম্বর তারিখে ইনি যশোর নিবাসী ভবতারিণীকে [মৃণালিনী দেবী] বিবাহ করেন। পরে রবীন্দ্রনাথ তাঁর নাম পাল্টে রাখেন মৃণালিনী। রবীন্দ্রনাথের জ্যেষ্ঠ ভগ্নী সৌদামিনী দেবীর স্বামীর সারদাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়ের উপর জমিদারি তদারকির ভার ছিল। রবীন্দ্রনাথের বিবাহের দিন তাঁর শিলাইদহে মৃত্যু হয়। ফলে বিবাহের আনন্দোৎসব শোকে পরিণত হয়েছিল।
১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ এপ্রিল তারিখে জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর-এর পত্নী কাদম্বরী দেবী আত্মহত্যা করেন। এই মৃত্যু ছিল রবীন্দ্রজীবনের বড় ধরনের প্রথম শোক। শিলাইদহ-এ সৌদামিনী দেবীর স্বামীর সারদাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর, জমিদারি দেখার দায়িত্ব বর্তায় রবীন্দ্রনাথের তৃতীয় অগ্রজ হেমেন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপর। এই বৎসরের ১২ জুন তারিখে হেমেন্দ্রনাথের মৃত্যু হলে– রবীন্দ্রনাথের উপর সে দায়িত্ব অর্পিত হয়। একই বছরে তিনি আদি ব্রাহ্ম-সমাজের সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
১৮৮৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ অক্টোবর
তারিখে এঁর প্রথমা কন্যা বেলা বা মাধুরীলতার জন্ম হয়।
১৮৮৮ খ্রিষ্টাব্দের
মার্চ-এপ্রিল মাসে ইনি স্ত্রী-কন্যাসহ গাজিপুরে গিয়ে কিছুদিনের জন্য বসবাস করেন।
এই বৎসরেই তাঁর দ্বিতীয়
সন্তান রথীন্দ্রনাথের জন্ম হয়।
১৮৮৯ খ্রিষ্টাব্দে জমিদারি দেখাশোনার জন্য সপরিবারে তিনি কলকাতার বাস ছেড়ে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে এসে বসবাস শুরু করেন। এখান থেকেই ইনি পাবনা'র সাহাজাদপুরের জমিদারি তদারকির দায়িত্বও পালন করেন।
|
জাতীয় কংগ্রসের ষষ্ঠ অধিবেশনে রবীন্দ্রনাথ। ১৮৯০ খ্রিষ্টাব্দ। |
১৮৯০ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ ডিসেম্বর
[শুক্রবার, ১২ পৌষ] -এ জাতীয় কংগ্রসের ষষ্ঠ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় কলকাতায়। এই
অধিবেশনে যোগদান করেছিলেন।
১৯০১ খ্রিষ্টাব্দে ইনি
শান্তিনিকেতনে একটি আবাসিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন।
এই সময় ইনি
শান্তিনিকেতনে পাকাপকিভাবে বসবাস শুরু করেন।
১৯০২ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর
পত্নী
মৃণালিনী দেবী
মৃত্যুবরণ করেন।
পত্নীর মৃত্যুর কিছুদিন
পর তাঁর মধ্যমা কন্যা রেণুকা দেবীর মৃত্যু হয়।
১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে এঁর
পিতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যু হয়।
১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর
কনিষ্ঠ পুত্র শমীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যু হয়।
১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে তিনি তাঁর
পিতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠিত 'তত্ত্ববোধিনী'
নামক পত্রিকা সম্পাদনা শুরু করেন।
১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে
তিনি নোবেল
পুরস্কার পান।
১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি এই
পত্রিকা সম্পাদনা করেছিলেন।
১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে এঁর জ্যেষ্ঠা
কন্যা মাধুরীলতা মৃত্যুবরণ করেন।
১৯১৯
খ্রিষ্টাব্দের
১৩ এপ্রিল তারিখে
পাঞ্জাব প্রদেশের অমৃতসর নগরীর জালিয়ানওয়াল বাগে শিখদের নববর্ষ-উৎসব হয়। এই উৎসবে
ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রায় ২০ হাজার বিক্ষোভকারী জমায়েত হয়েছিল। এই গণ জমায়েতের
উপর ব্রিটিশ সেনাবাহিনী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল
রেজিনাল ডায়ারের নির্দেশে গুলি চালানো হয়। এই হত্যাকাণ্ডটি
জালিয়ানওয়ালবাগ হত্যাকাণ্ড
নামে অভিহিত হয়ে থাকে। এই
হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে
রবীন্দ্রনাথ
ব্রিটিশ সরকার প্রদত্ত
নাইট খেতাব বর্জন করেন।
১৯২০-২১ খ্রিষ্টাব্দে
ইনি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বক্তৃতা দেবার জন্য ভ্রমণ করেন।
১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে জার্মানী সফর করেন।
এই সময় রবীন্দ্রনাথের সাথে বিজ্ঞানী
আইনস্টাইনের সাক্ষাৎ হয়। এই সময় তাঁদের ভিতর সত্য ও সুন্দর নিয়ে আলোচনা হয়।
দেখুন:
রবীন্দ্রনাথ-আইনস্টাইন
কথোপকথন
১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দে জুলাই মাসে
রবীন্দ্রনাথ আবার জার্মানী সফর করেন। এই সময় রবীন্দ্রনাথের সাথে আইনস্টাইনের
কথোপকথন হয়। এই বৎসরের শেষের দিকে রবীন্দ্রনাথের সাথে আইনস্টাইনের শেষবার দেখা হয়।
এই সময় তাঁদের ভিতর দ্বিতীয়বার কথপোকথন হয়।
দেখুন:
রবীন্দ্রনাথ-আইনস্টাইন
কথোপকথন
১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিলিট উপাধি প্রদান করা হয়।
১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের ৭
অগাস্ট (২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে জোড়সাঁকোর ঠাকুর বাড়ীতে
মৃত্যুবরণ করেন।
দেখুন :
রবীন্দ্ররচনাবলী