|
পথবর্তী
দূর মন্দিরে সিন্ধুকিনারে
পথে চলিয়াছ তুমি ।
আমি তরু মোর ছায়া দিয়ে তারে
মৃত্তিকা তার চুমি ।
হে তীর্থগামী, তব সাধনার
অংশ কিছু-বা রহিল আমার,
পথপাশে আমি তব যাত্রার
রহিব সাক্ষীরূপে ।
তোমার পূজায় মোর কিছু যায়
ফুলের গন্ধধূপে ।
তব আহ্বানে বরণ করিয়া
নিয়েছি দুর্গমেরে ।
ক্লান্তি কিছু-বা নিলাম হরিয়া
মোর অঞ্চল-ঘেরে ।
যা ছিল কঠোর, যাহা নিষ্ঠুর
তার সাথে কিছু মিলাই মধুর,
যা ছিল অজানা, যাহা ছিল দূর
আমি তারি মাঝে থেকে
দিনু পথ- ' পরে শ্যাম অক্ষরে
জানার চিহ্ন এঁকে ।
মোর পরিচয়ে তোমার পথের
কিছু রহে পরিচয় ।
তব রচনায় তব ভকতের
কিছু বাণী মিশে রয় ।
তোমার মধ্যদিবসের তাপে
আমার স্নিগ্ধ কিশলয় কাঁপে,
মোর পল্লব সে মন্ত্র জাপে
গভীর যা তব মনে,
মোর ফলভার মিলানু তোমার
সাধনফলের সনে ।
বেলা চলে যাবে, একদা যখন
ফুরাবে যাত্রা তব,
শেষ হবে যবে মোর প্রয়োজন
হেথাই দাঁড়ায়ে রব ।
এই পথখানি রবে মোর প্রিয়,
এই হবে মোর চিরবরণীয়,
তোমারি স্মরণে রব স্মরণীয়,
না মানিব পরাভব ।
তব উদ্দেশে অর্পিব হেসে
যা-কিছু আমার সব ।
২৬ অগষ্ট ১৯২৮ |