ফাল্গুনী
ফাল্গুনী' নাটকের সূচি
প্রথম দৃশ্য
প্রথম দৃশ্যের গীতি-ভূমিকা
নবীনের আবির্ভাব
১
বেণুবনের গান
ওগো দখিন হাওয়া, পথিক হাওয়া,
দোদুল দোলায় দাও দুলিয়ে।
নূতন পাতার
পুলক-ছাওয়া
পরশখানি দাও বুলিয়ে।
আমি পথের ধারের ব্যাকুল বেণু
হঠাৎ তোমার
সাড়া পেনু,
আহা, এস আমার শাখায় শাখায়
প্রাণের গানের
ঢেউ তুলিয়ে।
ওগো দখিন হাওয়া, পথিক হাওয়া,
পথের ধারে আমার বাসা।
জানি তোমার
আসাযাওয়া,
শুনি তোমার পায়ের ভাষা।
আমায় তোমার ছোঁওয়া লাগলে পরে
একটুকুতেই কাঁপন ধরে,
আহা, কানে-কানে একটি কথায়
সকল কথা নেয় ভুলিয়ে॥
পাখির নীড়ের গান
আকাশ আমায় ভরল আলোয়,
আকাশ আমি ভরব গানে।
সুরের আবীর হানব হাওয়ায়,
নাচের আবীর হাওয়ায় হানে।
ওরে পলাশ, ওরে পলাশ,
রাঙা রঙের শিখায় শিখায়
দিকে দিকে আগুন জ্বলাস,
আমার মনের রাগরাগিণী
রাঙা হল রঙিন তানে।
দখিন হাওয়ার কুসুমবনের
বুকের কাঁপন থাকে না যে।
নীল আকাশে সোনার আলোয়
কচি পাতার নূপুর বাজে।
ওরে শিরীষ, ওরে শিরীষ,
মৃদু হাসির অন্তরালে
গন্ধজালে শূন্য ঘিরিস।
তোমার গন্ধ আমার কণ্ঠে
আমার হৃদয় টেনে আনে॥
ফুলন্ত গাছের গান
ওগো নদী, আপন বেগে
পাগল-পারা,
আমি স্তব্ধ চাঁপার তরু
গন্ধভরে
তন্দ্রাহারা।
আমি সদা অচল থাকি,
গভীর চলা গোপন রাখি,
আমার চলা নবীন পাতায়,
আমার চলা
ফুলের ধারা।
ওগো নদী, চলার বেগে
পাগল-পারা,
পথে পথে বাহির হয়ে
আপন-হারা।
আমার চলা যায় না বলা,
আলোর পানে প্রাণের চলা,
আকাশ বোঝে আনন্দ তার,
বোঝে নিশার
নীরব তারা॥
প্রথম দৃশ্য
সূত্রপাত
পথ
যুবকদলের প্রবেশ
গান
ওরে ভাই ফাগুন লেগেছে বনে বনে–
ডালে ডালে ফুলে ফুলে পাতায় পাতায় রে,
আড়ালে আড়ালে কোণে কোণে।
রঙে রঙে রঙিল আকাশ,
গানে গানে নিখিল উদাস,
যেন চল-চঞ্চল নব পল্লবদল
মর্মরে মোর
মনে মনে।
ফাগুন লেগেছে
বনে বনে।
হেরো হেরো অবনীর রঙ্গ
গগনের করে তপোভঙ্গ।
হাসির আঘাতে তার মৌন রহে না আর
কেঁপে কেঁপে ওঠে ক্ষণে ক্ষণে।
বাতাস ছুটিছে বনময় রে,
ফুলের না জানে পরিচয় রে।
তাই বুঝি বারে বারে কুঞ্জের দ্বারে দ্বারে
শুধায়ে ফিরিছে জনে জনে।
ফাগুন লেগেছে বনে বনে॥
ফাগুনের গুণ আছে রে ভাই,
গুণ আছে।
বুঝলি কী করে।
নইলে আমাদের এই দাদাকে বাইরে টেনে আনে কিসের জোরে।
তাই তো–
দাদা আমাদের চৌপদীছন্দের বোঝাই
নৌকো–
ফাগুনের গুণে বাঁধা পড়ে
কাগজ-কলমের উলটো মুখে উজিয়ে চলেছে।
চন্দ্রহাস। ওরে ফাগুনের গুণ নয় রে। আমি চন্দ্রহাস, দাদার তুলট
কাগজের হলদে পাতাগুলো পিয়াল বনের সবুজ পাতার মধ্যে লুকিয়ে রেখেছি; দাদা খুঁজতে বের
হয়েছে।
তুলট কাগজগুলো গেছে আপদ গেছে, কিন্তু দাদার সাদা চাদরটা তো কেড়ে
নিতে হচ্ছে।
চন্দ্রহাস। তাই তো, আজ পৃথিবীর ধুলোমাটি পর্যন্ত শিউরে
উঠেছে আর এ পর্যন্ত দাদার গায়ে বসন্তর আমেজ লাগল না!
দাদা। আহা, কী মুশকিল। বয়েস হয়েছে যে।
পৃথিবীর বয়েস অন্তত তোমার চেয়ে কম নয়, কিন্তু নবীন হতে ওর লজ্জা
নেই।
চন্দ্রহাস। দাদা, তুমি বসে বসে চৌপদী লিখছ, আর এই চেয়ে
দেখো সমস্ত জল স্থল কেবল নবীন হবার তপস্যা করছে।
দাদা, তুমি কোটরে বসে কবিতা লেখ কী করে।
দাদা। আমার কবিতা তো তোদের কবিশেখরের কল্পমঞ্জরীর মতো
শৌখিন কাব্যের ফুলের চাষ নয় যে কেবল বাইরের হাওয়ায় দোল খাবে। এতে সার আছে রে, ভার
আছে।
যেমন কচু। মাটির দখল ছাড়ে না।
দাদা। শোন্ তবে বলি–
ঐ রে দাদা এবার চৌপদী বের করবে।
এল রে এল চৌপদী এল। আর ঠেকানো গেল না।
ভো ভো পথিকবৃন্দ, সাবধান, দাদার মত্ত চৌপদী চঞ্চল হয়ে উঠেছে।
চন্দ্রহাস। না দাদা, তুমি ওদের কথায় কান দিয়ো না। শোনাও তোমার
চৌপদী। কেউ না টিঁকতে পারে আমি শেষ পর্যন্ত টিঁকে থাকব। আমি ওদের মতো কাপুরুষ নই।
আচ্ছা বেশ, আমরাও শুনব।
যেমন করে পারি শুনবই।
খাড়া দাঁড়িয়ে শুনব। পালাব না।
চৌপদীর চোট যদি লাগে তো বুকে লাগবে, পিঠে লাগবে না।
কিন্তু দোহাই দাদা, একটা। তার বেশি নয়।
দাদা। আচ্ছা, তবে তোরা শোন্–
বংশে শুধু
বংশী যদি বাজে
বংশ তবে ধ্বংস
হবে লাজে।
বংশ নিঃস্ব
নহে বিশ্বমাঝে
যেহেতু সে
লাগে বিশ্বকাজে।
আর-একটু ধৈর্য ধরো ভাই, এর মানেটা–
আবার মানে!
একে চৌপদী–
তার উপর আবার মানে।
দাদা। একটু বুঝিয়ে দিই--অর্থাৎ বাঁশে যদি কেবলমাত্র বাঁশিই বাজত
তা হলে--
না, আমরা বুঝব না।
কোনোমতেই বুঝব না।
কার সাধ্য আমাদের বোঝায়।
আমরা কিচ্ছু বুঝব না ব'লেই আজ বেরিয়ে পড়েছি।
আজ কেউ যদি আমাদের জোর ক'রে বোঝাতে চায় তা হলে আমরা জোর করে ভুল
বুঝব।
দাদা। ও শ্লোকটার অর্থ হচ্ছে এই যে, বিশ্বের হিত যদি না করি তবে–
তবে? তবে বিশ্ব হাঁপ ছেড়ে বাঁচে।
দাদা। ঐ কথাটাকেই আর-একটু স্পষ্ট করে বলেছি
–
অসংখ্য
নক্ষত্র জ্বলে সশঙ্ক নিশীথে।
অম্বরে লম্বিত
তারা লাগে কার হিতে।
শূন্যে কোন্
পুণ্য আছে আলোক বাঁটিতে।
মর্তে এলে
কর্মে লাগে মাটিতে হাঁটিতে।
ওহে, তবে আমাদের কথাটাকেও আর-একটু পষ্ট ক'রে বলতে হল দেখছি।
ধরো, দাদাকে ধরো--ওকে আড়কোলা ক'রে নিয়ে চলো ওর কোটরে।
দাদা।
তোরা অত ব্যস্ত হচ্ছিস কেন বল্ তো। বিশেষ কাজ আছে?
বিশেষ কাজ।
অত্যন্ত জরুরি।
দাদা। কাজটা কী শুনি।
বসন্তের ছুটিতে আমাদের খেলাটা কী হবে তাই খুঁজে বের করতে
বেরিয়েছি।
দাদা। খেলা? দিনরাতই খেলা?
গান
সকলে। মোদের যেমন খেলা তেমনি যে কাজ
জানিস নে কি ভাই।
তাই কাজকে কভু আমরা না ডরাই।
খেলা মোদের লড়াই করা,
খেলা মোদের বাঁচা মরা,
খেলা ছাড়া কিছুই কোথাও নাই।
ঐ যে আমাদের সর্দার আসছে ভাই।
আমাদের সর্দার!
সর্দার। কী রে, ভারি গোল বাধিয়েছিস যে।
চন্দ্রহাস। তাই বুঝি থাকতে পারলে না?
সর্দার। বেরিয়ে আসতে হল।
ঐ জন্যেই গোল করি।
সর্দার। ঘরে বুঝি টিঁকতে দিবি নে?
তুমি ঘরে টিঁকলে আমরা বাইরে টিঁকি কী করে।
চন্দ্রহাস। এতবড়ো বাইরেটা পত্তন করতে তো চন্দ্র সূর্য তারা কম
খরচ হয় নি, এটাকে আমরা যদি কাজে লাগাই তবে বিধাতার মুখরক্ষা হবে।
সর্দার। তোদের কথাটা কী হচ্ছে বল্ তো।
কথাটা হচ্ছে এই–
মোদের
যেমন খেলা তেমনি যে কাজ
জানিস নে কি ভাই।
সর্দার।
খেলতে খেলতে ফুটেছে ফুল,
খেলতে খেলতে ফল যে ফলে,
খেলারই ঢেউ জলে স্থলে।
ভয়ের ভীষণ রক্তরাগে
খেলার আগুন যখন লাগে
ভাঙাচোরা জ্ব'লে যে হয় ছাই।
সকলে। মোদের যেমন খেলা তেমনি যে কাজ
জানিস নে কি ভাই।
আমাদের এই খেলাটাই দাদার আপত্তি।
দাদা। কেন আপত্তি করি বলব? শুনবি?
বলতে পারো দাদা, কিন্তু শুনব কি না তা বলতে পারি নে।
দাদা। সময় কাজেরই
বিত্ত, খেলা তাহে চুরি।
সিঁধ কেটে দণ্ডপল লহ ভূরি ভূরি
কিন্তু চোরাধন নিয়ে নাহি হয় কাজ।
তাই তো খেলারে বিজ্ঞ দেয় এত লাজ।
চন্দ্রহাস। বল কী তুমি দাদা। সময় জিনিসটাই যে খেলা, কেবল চলে
যাওয়াই তার লক্ষ্য।
দাদা। তা হলে কাজটা?
চন্দ্রহাস। চলার বেগে যে ধুলো ওড়ে কাজটা তাই, ওটা উপলক্ষ্য।
দাদা। আচ্ছা সর্দার, তুমি এর নিষ্পত্তি করে দাও।
সর্দার। আমি কিছুরই নিষ্পত্তি করি নে। সংকট থেকে সংকটে নিয়ে চলি–
ঐ আমার সর্দারি।
দাদা। সব জিনিসের সীমা আছে কিন্তু তোদের যে কেবলই ছেলেমান্ষি!
তার কারণ, আমরা যে কেবলই ছেলেমানুষ! সব জিনিসের সীমা আছে কেবল
ছেলেমান্ষির সীমা নেই।
(দাদাকে
ঘেরিয়া নৃত্য)
দাদা। তোদের কি কোনোকালেই বয়েস হবে না।
না, হবে না বয়েস, হবে না।
বুড়ো হয়ে মরব তবু বয়েস হবে না।
বয়েস হলেই সেটাকে মাথা মুড়িয়ে ঘোল ঢেলে নদী পার করে দেব।
মাথা মুড়োবার খরচ লাগবে না ভাই–
তার মাথাভরা টাক!
গান
আমাদের পাকবে না চুল গো
–
মোদের
পাকবে না চুল।
আমাদের ঝরবে না ফুল গো
–
মোদের
ঝরবে না ফুল।
আমরা ঠেকব না তো কোনো শেষে,
ফুরয় না পথ কোনো দেশে রে।
আমাদের ঘুচবে না ভুল গো–
মোদের
ঘুচবে না ভুল।
সর্দার। আমরা নয়ন মুদে করব না ধ্যান
করব না ধ্যান।
নিজের মনের কোণে খুঁজব না জ্ঞান
খুঁজব না জ্ঞান।
আমরা ভেসে চলি স্রোতে স্রোতে
সাগরপানে শিখর হতে রে,
আমাদের মিলবে না কূল গো
–
মোদের
মিলবে না কূল॥
এই উঠতি বয়সেই দাদার যেরকম মতিগতি, তাতে কোন্ দিন উনি সেই
বুড়োর কাছে মন্তর নিতে যাবেন--আর দেরি নেই।
সর্দার। কোন্ বুড়ো রে।
চন্দ্রহাস। সেই যে মান্ধাতার আমলের বুড়ো। কোন্ গুহার মধ্যে
তলিয়ে থাকে, মরবার নাম করে না।
সর্দার। তার খবর তোরা পেলি কোথা থেকে।
যার সঙ্গে দেখা হয় সবাই তার কথা বলে।
পুঁথিতে তার কথা লেখা আছে।
সর্দার। তার চেহারাটা কী রকম।
কেউ বলে, সে সাদা, মড়ার মাথার খুলির মতো; কেউ বলে, সে কালো,
মড়ার চোখের কোটরের মতো।
কেন, তুমি কি তার খবর রাখ না সর্দার।
সর্দার। আমি তোকে বিশ্বাস করি নে।
বাঃ, তুমি যে উলটো কথা বললে। সেই বুড়োই তো সব চেয়ে বেশি করে
আছে। বিশ্বব্রক্ষ্ণাণ্ডের পাঁজরের ভিতরে তার বাসা।
পণ্ডিতজি বলে, বিশ্বাস যদি কাউকে না করতে হয় সে কেবল আমাদের।
আমরা আছি কি নেই তার কোনো ঠিকানাই নেই।
চন্দ্রহাস। আমরা যে ভারি কাঁচা, আমরা যে ভারি কাঁচা, আমরা যে
একেবারে নতুন, ভবের রাজ্যে আমাদের পাকা দলিল কোথায়।
সর্দার। সর্বনাশ করলে দেখছি। তোরা পণ্ডিতের কাছে আনাগোনা শুরু
করেছিস নাকি।
তাতে ক্ষতি কী সর্দার।
সর্দার। পুঁথির বুলির দেশে ঢুকলে যে একেবারে ফ্যাকাশে হয়ে যাবি।
কার্তিকমাসের সাদা কুয়াশার মতো। তোদের মনের মধ্যে একটুও রক্তের রঙ থাকবে না। আচ্ছা,
এক কাজ কর্। তোরা খেলার কথা ভাবছিলি?
হাঁ সর্দার, ভাবনায় আমাদের চোখে ঘুম ছিল না।
আমাদের ভাবনার চোটে পাড়ার লোক রাজদরবারে নালিশ করতে ছুটেছিল।
সর্দার। একটা নতুন খেলা বলতে পারি।
বলো, বলো, বলো।
সর্দার। তোরা সবাই মিলে বুড়োটাকে ধরে নিয়ে আয়।
নতুন বটে, কিন্তু এটা ঠিক খেলা কি না জানি নে।
সর্দার। আমি বলছি, এ তোরা পারবি নে।
পারব না? বলো কী। নিশ্চয়ই পারব।
সর্দার। কখনো পারবি নে।
আচ্ছা যদি পারি?
সর্দার। তা হলে গুরু ব'লে আমি তোদের মানব।
গুরু! সর্বনাশ! আমাদের সুদ্ধ বুড়ো বানিয়ে দেবে?
সর্দার। তবে কী চাস্ বল্।
তোমার সর্দারি আমরা কেড়ে নেব।
সর্দার। হলে তো বাঁচি রে! তোদের সর্দারি কি সোজা কাজ। এমনই
অস্থির করে রেখেছিস যে হাড়গুলো সুদ্ধ উলটো-পালটা হয়ে গেছে।
–তা
হলে রইল কথা?
চন্দ্রহাস। হাঁ, রইল কথা। দোলপূর্ণিমার দিনে তাকে ঝোলার উপর
দোলাতে দোলাতে তোমার কাছে হাজির করে দেব।
কিন্তু তাকে নিয়ে কী করবে সর্দার।
সর্দার। বসন্ত-উৎসব করব।
বল কী। তা হলে যে আমের বোলগুলো ধরতে ধরতেই আঁটি হয়ে যাবে। আর
কোকিলগুলো পেঁচা হয়ে সব লক্ষ্মীর খোঁজে বেরবে।
চন্দ্রহাস। আর ভ্রমরগুলো অনুস্বার বিসর্গের চোটে বাতাসটাকে
ঘুলিয়ে দিয়ে মন্তর জপতে থাকবে।
সর্দার। আর তোদের খুলিটা সুবুদ্ধিতে এমনই বোঝাই হবে যে এক পা
নড়তে পারবি নে।
সর্বনাশ! সর্দার।
আর ঐ ঝুমকো-লতায় যেমন গাঁঠে গাঁঠে ফুল ধরেছে তেমনই তোদের গাঁঠে
গাঁঠে বাত ধরবে।
সর্বনাশ!
সর্দার। আর তোরা সবাই নিজের দাদা হয়ে নিজের কান মলতে থাকবি।
সর্বনাশ!
সর্দার। আর–
আর কাজ কী সর্দার। থাক্ বুড়োধরা খেলা। ওটা বরঞ্চ শীতের দিনেই
হবে। এবার তোমাকে নিয়েই--
সর্দার। তোদের দেখছি আগে থাকতেই বুড়োর ছোঁয়াচ লেগেছে।
কেন, কী লক্ষণটা দেখলে।
সর্দার। উৎসাহ নেই? গোড়াতেই পেছিয়ে গেলি? দেখ্ই না কী হয়।
আচ্ছা বেশ। রাজি।
চল্ রে, সব চল্।
বুড়োর খোঁজে চল্।
যেখানে পাই তাকে পাকা চুলটার মতো পট্ করে উপড়ে আনব।
শুনেছি উপড়ে আনার কাজে তারই হাত পাকা। নিড়ুনি তার প্রধান
অস্ত্র।
ভয়ের কথা রাখ্। খেলতেই যখন বেরলুম তখন ভয়, চৌপদী, পণ্ডিত,
পুঁথি এ-সব ফেলে যেতে হবে।
গান
আমাদের ভয় কাহারে।
বুড়ো বুড়ো চোর
ডাকাতে
কী আমাদের করতে পারে।
আমাদের রাস্তা সোজা, নাইকো গলি,
নাইকো ঝুলি,
নাইকো থলি,
ওরা আর যা কাড়ে কাড়ুক, মোদের
পাগ্লামি কেউ
কাড়বে না রে।
আমরা চাই নে আরাম, চাই নে বিরাম,
চাই নে যে ফল, চাই নে রে নাম,
মোরা ওঠায় পড়ায় সমান নাচি,
সমান খেলি জিতে হারে–
আমাদের ভয় কাহারে॥
১৫ ফাল্গুন, ১৩২২