বিষয়: রবীন্দ্রসঙ্গীত।
শিরোনাম: এ কি অন্ধকার এ ভারতভূমি! 
পাঠ ও পাঠভেদ:
এ কি অন্ধকার এ ভারতভূমি! 
                        বুঝি, পিতা, তারে ছেড়ে গেছ তুমি।
প্রতি পলে পলে ডুবে রসাতলে-কে তারে উদ্ধার করিবে॥
চারি দিকে চাই, নাহি হেরি গতি। নাহি যে আশ্রয়, অসহায় অতি।
            আজি এ আঁধারে বিপদপাথারে     কাহার চরণ ধরিবে।
তুমি চাও পিতা, ঘুচাও এ দুখ।               অভাগা দেশের হোয়ো না বিমুখ-
            নহিলে আঁধারে বিপদপাথারে  কাহার চরণ ধরিবে।
 
দেখো চেয়ে তব সহস্র সন্তান   লাজে নতশির, ভয়ে কম্পমান,
            কাঁদিছে সহিছে শত অপমান- লাজ মান আর থাকে না।
হীনতা লয়েছে মাথায় তুলিয়া, তোমারেও তাই গিয়াছে ভুলিয়া,
            দয়াময় ব’লে আকুলহৃদয়ে    তোমারেও তারা ডাকে না।
তুমি চাও পিতা, তুমি চাও চাও।           এ হীনতা-পাপ এ দুঃখ ঘুচাও।
            ললাটের কলঙ্ক মুছাও মুছাও-নহিলে এ দেশ থাকে না।
 
তুমি যবে ছিলে এ পুণ্যভবনে  কী সৌরভসুধা বহিত পবনে,
            কী আনন্দগান উঠিত গগনে,   কী প্রতিভাজ্যোতি ঝলিত।
            ভারত-অরণ্যে ঋষিদের গান   অনন্তসদনে করিত প্রয়ান-
            তোমারে চাহিয়া পুণ্যপথ দিয়া সকলে মিলিয়া চলিত।
আজি কী হয়েছে! চাও পিতা, চাও!       এ তাপ এ পাপ এ দুখ ঘুচাও।
            মোরা তো রয়েছি তোমারি সন্তান
                        যদিও হয়েছি পতিত॥