বিষয়:
রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গান সংখ্যা:
শিরোনাম:
আমার নয়ন তব নয়নের নিবিড় ছায়ায়
পাঠ ও পাঠভেদ:
আমার নয়ন তব নয়নের নিবিড় ছায়ায়
মনের কথার কুসুমকোরক খোঁজে।
সেথায় কখন অগম গোপন গহন মায়ায়
পথ হারাইল ও যে॥
আতুর দিঠিতে শুধায় সে নীরবেরে-
নিভৃত বাণীর সন্ধান নাই যে রে;
অজানার মাঝে অবুঝের মতো ফেরে
অশ্রুধারায় মজে॥
আমার হৃদয়ে যে কথা লুকানো তার আভাষণ
ফেলে কভু ছায়া তোমার হৃদয়তলে?
দুয়ারে এঁকেছি রক্ত রেখায় পদ্ম-আসন,
সে তোমারে কিছু বলে?
তব কুঞ্জের পথ দিয়ে যেতে যেতে
বাতাসে বাতাসে ব্যথা দিই মোর পেতে-
বাঁশি কী আশায় ভাষা দেয় আকাশেতে
সে কি কেহ নাহি বোঝে॥
পাণ্ডুলিপির পাঠ:
পাঠভেদ:
তথ্যানুসন্ধান
ক. রচনাকাল ও স্থান: শ্রাবণ
১৩৩৫।
এই সময় রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল ৬৭ বৎসর ৩-৪ মাস।
১৩৩৪ খ্রিষ্টাব্দের দিকে রবীন্দ্রনাথ তাঁর প্রায়শ্চিত্ত নাটককে সংস্কার করে পরিত্রাণ নামে একটি নাটক রচনা করেন। ১৩৩৪ খ্রিষ্টাব্দে এই নাটকটি বার্ষিক শারদীয়া বসুমতীতে এই প্রথম প্রকাশিত হয়। এই সময় এই নাটকের চতুর্থ দৃশ্যে নটীদের গান এই গানটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই নাটকটি গ্রন্থাকারে প্রথম প্রকাশিত হয় ১৩৩৬ বঙ্গাব্দের জ্যৈষ্ঠ মাসে। এই নাটকে গৃহীত এই গানটির বাণী ছিল—
আমার নয়ন তোমার নয়নতলে
মনের কথা খোঁজে।
সেথায় কালো ছায়ার মায়ার ঘোরে
পথ হারালো ও যে॥
নীরব দিঠে শুধায় যত
পায় না সাড়া মনের মতো
অবুঝ হয় রয় সে চেয়ে
অশ্রুধারায় মজে॥
তুমি আমার কথার আভাখানি
পেয়েছ কি মনর।
এই-যে আমি মালা আনি
তার বাণী কেউ শোনে?
পথ দিয়ে যাই, যেতে যেতে
হাওয়ার ব্যথা দিই যে পেতে;
বাঁশি বিছায় বিষাদ-ছায়া
তার
ভাষা কেউ বোঝে?
উল্লিখিত গানটি
গীতবিতান-এর
প্রেম পর্যায়ের ৯২ গান হিসেবে যুক্ত হয়েছে। দ্রষ্টব্য
প্রেম-৯২
১৩৩৬ বঙ্গাব্দে
বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাসে, মহুয়ায় 'সন্ধান' নামক একটি কবিতা যুক্ত হয়। এই কবিতাটি
মূলত পরিত্রাণ (আশ্বিন ১৩৩৬)-এ গৃহীত গানের পরিবর্তিত রূপ। মহুয়ায় গৃহীত এই
কবিতাটির রচনাকাল পাওয়া যায়—
শ্রাবণ ১৩৩৫?। এতে সুনির্দিষ্ট তারিখ নেই। এই বিচারে বলা যায়, রবীন্দ্রনাথ ১৩৩৫
বঙ্গাব্দের শ্রাবণ মাসে—
পরিত্রাণ (আশ্বিন ১৩৩৬)-এর গানটিকে নতুনভাবে রচনা করেছিলেন। এই কবিতাটি গান হিসেবে
গীতবিতান তৃতীয় খণ্ডে (শ্রাবণ
১৩৩৯) গৃহীত
হয়েছিল। ধারণা করা হয়, রবীন্দ্রনাথ গানটিতে সুরারোপ করেছিলেন, ১৩৩৯ খ্রিষ্টাব্দের
আগে কোনো এক সময়।
খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
গ্রন্থ:
দ্বিতীয় খণ্ড, প্রথম সংস্করণ (বিশ্বভারতী ১৩৩৮)
দ্বিতীয় খণ্ড, দ্বিতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী ১৩ৱ৪৮)
অখণ্ড সংস্করণ, তৃতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী, পৌষ ১৩৮০ বঙ্গাব্দ)। প্রেম (প্রেম বৈচিত্র্য-২১)পর্যায়ের ৪৯ সংখ্যক গান।
পরিত্রাণ (জ্যৈষ্ঠ ১৩৩৬)। চতুর্থ দৃশ্য। নটীদের গান। [রবীন্দ্ররচনাবলী বিংশ খণ্ড। বিশ্বভারতী। মাঘ ১৩৯৪]
মহুয়া
বিশ্বভারতী (আশ্বিন ১৩৩৬)। সন্ধান।
বিশ্বভারতী ১৩৪১। [রবীন্দ্ররচনাবলী পঞ্চদশ খণ্ড। বিশ্বভারতী। ১৩৯৩]
স্বরবিতান চতুঃপঞ্চাশত্তম (৫৪) খণ্ডের (চৈত্র ১৪১৩) ১৬ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা : ৫৪-৫৭
পত্রিকা:
বার্ষিক শারদীয়া বসুমতী (১৩৩৪)। পরিত্রাণ নাটকের সাথে মুদ্রিত হয়েছিল।
বিচিত্রা (মাঘ ১৩৪১)। শান্তিদেব ঘোষের স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত হয়েছিল।
গ. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলি:
স্বরলিপিকার: শান্তিদেব ঘোষ। [বিচিত্রা (মাঘ ১৩৪১) থেকে সংকলিত]
সুর ও তাল:
স্বরবিতান চতুঃপঞ্চাশত্তম (৫৪) খণ্ডে (চৈত্র ১৪১৩) গৃহীত স্বরলিপিতে রাগ-তালের উল্লেখ নেই। উক্ত স্বরলিপিটি ৩।৩ মাত্রা ছন্দে দাদরা তালে নিবদ্ধ।
রাগ : পিলু। [রবীন্দ্রসঙ্গীতে রাগ-নির্ণয়। ভি.ভি. ওয়াঝলওয়ার। রবীন্দ্রনাথের প্রেমের গান। সংগীত-শিক্ষায়তন। বৈশাখ ১৩৯০। পৃষ্ঠা : ৭২]
রাগ: পিলু। তাল: দাদরা। [রবীন্দ্রসংগীত: রাগ-সুর নির্দেশিকা। সুধীর চন্দ। প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬। পৃষ্ঠা: ২৯।]
রাগ: পীলু, কাফি। তাল: দাদরা। [রাগরাগিণীর এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত, প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংগীত আকাদেমী, জুলাই ২০০১।] পৃষ্ঠা: ৫৬।
গ্রহস্বর : সা
লয় : মধ্য