বিষয়:
রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গান সংখ্যা:
শিরোনাম:
ওই
মালতীলতা দোলে
পাঠ ও পাঠভেদ:
- গীতবিতান (বিশ্বভারতী, কার্তিক ১৪১২)-এর পাঠ:
ওই
মালতীলতা দোলে
পিয়ালতরুর কোলে
পুব-হাওয়াতে॥
মোর হৃদয়ে লাগে দোলা, ফিরি আপনভোলা—
মোর ভাবনা কোথায় হারা মেঘের মতন যায় চলে॥
জানি নে কোথায়
জাগো ওগো বন্ধু
পরবাসী—
কোন্ নিভৃত বাতায়নে।
সেথা নিশিথের জল-ভরা কণ্ঠে
কোন বিরহিণীর বাণী তোমারে কী যায় ব’লে॥
-
পাণ্ডুলিপির পাঠ:
-
তথ্যানুসন্ধান
-
ক. রচনাকাল ও স্থান:
কার্তিক ১৩৪৩
বঙ্গাব্দ।
গানটি
রবীন্দ্রনাথের
৭৫ বৎসর ৭ মাস বয়সের
রচনা।
এই গানটি রচনার প্রেক্ষাপট সম্পর্কে শ্রী রানী চন্দ তাঁর
'আলাপচারি.রবীন্দ্রনাথ' (বিশ্বভারতী, কার্তিক ১৪০৭ বঙ্গাব্দ) বইতে লেখেন, "
'কোনার্কে' যখন গুরুদেব থাকতেন বাড়ির সামনে একদিন দেখা গেল একটি শিমুল চারা
উঠেছে।বাড়ির এত কাছে এত বড়ো গাছের চারা রাখা নিরাপদ নয়।একদিন যখন এই
চারাগাছটি সত্যিকারের গাছে পরিণত হবে, তখনকার বিপদের আশঙ্কা করে গাছটি কেটে
ফেলাই অনেকে সংগত মনে করলেন। কিন্তু গাছটির প্রতি গুরুদেবের অসীম স্নেহে তা
আর হয়ে উঠেনি। দারুণ গ্রীষ্মে যখন সব গাছপালা ঝলসে যেত, গুরুদেব নিজে
দাঁড়িয়ে থেকে সেই শিমুল গাছে জল ঢালাতেন,তাপ থেকে বাঁচাবার জন্য গাছের উপরে
বাঁশ খড় দিয়ে
চালা বেঁধে দেওয়াতেন। সেই গাছ বড়ো হল—
একদিন বর্ষার শেষে দেখা গেল গাছে একটি মালতী লতা
জড়িয়ে জড়িয়ে উঠছে। গুরুদেব দেখে খুশি হয়ে উঠলেন। তার পর শীতে যখন সেই শিমুল গাছ
ফুলে ভরে উঠত—
বর্ষার মালতী শিমুলগাছের তলা সাদা ফুলে ছেয়ে ফেলতো—
তখন গুরুদেবের আনন্দের আর সীমা থাকতনা। প্রতি বছর
শীতে বর্ষায় শিমুল-মালতীর এই পরিণয় তাঁকে যে কী মুগ্ধ করত। সেই শিমুল গাছে
কোনার্কের ছাদ ছাড়িয়ে আর মালতী শিমুলের মাথা ছাড়িয়ে উঠেছে।
তোর আঙিনায় মালতী ফুটতে শুরু করেছে? এ দুটি ফুল
— শিমুল আর মালতী—
দু-সময়ের জিনিস। মালতী হল বর্ষার আর শিমুল হল
শীতের। এরা বছরে দুবার তোর দুয়ারে অতিথি হয়ে এসে হানা দেয়। শিমুলকে মালতী কেমন
জড়িয়ে জড়িয়ে উঠেছে; এখনো শিমুল হার মানেনি; কিন্তু শিগগিরই ওকে মালতী চেপে মারবে।
একদিন মালতীরই জয় হবে। অথচ ও-ই একদিন শিমুলকে আশ্রয় করে উঠেছে। মানুষের জীবনেও এমন
কত দেখা যায়।"
-
খ.প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
- গ্রন্থ:
-
গীতবিতানের প্রকৃতি
(উপ-বিভাগ :
বর্ষা-৮৬) পর্যায়ের ১১১ সংখ্যক গান।
-
স্বরবিতান
চতুঃপঞ্চাশত্তম
(৫৪)
খণ্ডের (চৈত্র
১৪১৩ বঙ্গাব্দ) অষ্টম গান। পৃষ্ঠা ৩১-৩২।
- পত্রিকা:
-
প্রবাসী (কার্তিক
১৩৪৩ বঙ্গাব্দ সংখ্যা)।
শান্তিদেব ঘোষ-কৃত স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত।
- প্রভাতকুমার মুখোপধ্যায়ের রবীন্দ্রজীবনী চতুর্থ খণ্ড (১৪০১ বঙ্গাব্দ, পৃষ্ঠা-৭৬)
হতে জানা যায় যে ১৩৪৩ বঙ্গাব্দে শান্তিনিকেতনে 'বর্ষামঙ্গল' অনুষ্ঠানে যে তিনটি
নতুন গান গাওয়া হয় তার মধ্যে এই গানটি অন্তর্ভূক্ত ছিল।
- গ.সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী:
- স্বরলিপিকার: শান্তিদেব
ঘোষ
।
-
সুর ও তাল:
-
স্বরবিতান চতুঃপঞ্চাশত্তম (৫৪) খণ্ডে (চৈত্র ১৪১৩ বঙ্গাব্দ) গৃহীত
স্বরলিপিতে রাগ-তালের উল্লেখ নেই। গানটি ৪।৪ মাত্রা ছন্দে কাহারবা তালে নিবদ্ধ।
- রাগ:
পিলু। তাল:
কাহারবা
[রবীন্দ্রসংগীত
: রাগ-সুর নির্দেশিকা। সুধীর চন্দ। প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬)।
পৃষ্ঠা: ৪০।]
-
রাগ:
কাফি,
পিলু। তাল:
কাহারবা
[রাগরাগিণীর এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত।
প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংগীত আকাদেমী, জুলাই
২০০১। পৃষ্ঠা: ৭৪]
- গ্রহস্বর:
সা।
-
লয়:
মধ্য।