বিষয়:
রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গান সংখ্যা:
শিরোনাম:
ব্যাকুল বকুলের
ফুলে ভ্রমর মরে পথ ভুলে
পাঠ ও পাঠভেদ:
ব্যাকুল বকুলের ফুলে ভ্রমর মরে পথ ভুলে॥
আকাশে কী গোপন বাণী বাতাসে করে কানাকানি,
বনের অঞ্চলখানি পুলকে উঠে দুলে দুলে॥
বেদনা সুমধুর হয়ে ভুবনে আজি গেল বয়ে।
বাঁশিতে মায়া-তান পূরি কে আজি মন করে চুরি,
নিখিল তাই মরে ঘুরি বিরহসাগরের কূলে॥
পাণ্ডুলিপির পাঠ: রবীন্দ্রনাথের পাণ্ডুলিপি MS. NO 111-এ পাওয়া যায়। [পাণ্ডুলিপি]
পাঠভেদ:
তথ্যানুসন্ধান
ক. রচনাকাল ও স্থান: এই গানটির রচনকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায় না। সবুজপত্র পত্রিকার ভাদ্র ১৩২৪ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়, রবীন্দ্রনাথের 'সঙ্গীতের মুক্তি' নামক প্রবন্ধ। এই প্রবন্ধে ছন্দ ও তালের দ্বন্দ্ব নিরসনে বেশ কয়েকটি গান যুক্ত করেছিলেন। এর ভিতরে নয় মাত্রা ছন্দ নিয়ে আলোচনার সূত্রে রবীন্দ্রনাথ এই গানটি ব্যবহার করেছিলেন। সঙ্গত কারণে বলা যায়, গানটি ভাদ্র মাসের আগেই রচনা করেছিলেন। গানটি প্রকাশের সময় রবীন্দ্রনাথের ৫৬ বৎসর ৫ মাস বয়সের রচনা।
খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
গ্রন্থ:
দ্বিতীয় খণ্ড (বিশ্বভারতী ১৩৩৮)
দ্বিতীয় খণ্ড (বিশ্বভারতী ১৩৪৮)
অখণ্ড, তৃতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী, ১৩৮০)। প্রকৃতি (সাধারণ-৯) পর্যায়ের ৯ সংখ্যক গান।
গীতপঞ্চাশিকা (আশ্বিন ১৩২৫)। দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর-কৃত স্বরলিপি-সহ প্রকাশিত হয়েছিল।
প্রবাহিনী (বিশ্বভারতী ১৩৩২ বঙ্গাব্দ)। প্রত্যাশা ৫। পৃষ্ঠা। ৩২-৩৩। [নমুনা: প্রথমাংশ, শেষাংশ]
স্বরবিতান ষোড়শ (১৬, গীতপঞ্চাশিকা, আশ্বিন ১৪১৩) খণ্ডের ১৫ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ৬১-৬২।
পত্রিকা:
সবুজপত্র (ভাদ্র ১৩২৪)।
সংগীতের মুক্তি।
কাব্যে ছন্দের যে কাজ, গানে তালের সেই কাজ। অতএব ছন্দ যে নিয়মে কবিতায় চলে তাল সে নিয়মে গানে চলিবে এই ভরসা করিয়া গান বাঁধিতে চাহিলাম। তাহাতে কী উৎপাত ঘটিল একটা দৃষ্টান্ত দিই।'
এই গ্রন্থে তিনি একটি নয়, সাতটি উদাহরণ দিয়েছে পর্যায়ক্রমে। এর তৃতীয় উদাহরণ হলো এই গানটি। এই উদাহরণের শুরুতে তিনি কবিতার ছন্দ ও গানের লয়ের মধ্যে সম্পর্ক তুলে ধরার জন্য লিখেছেন—
কবিতায় যেটা ছন্দ, সংগীতে সেইটেই লয়। এই লয় জিনিসটি সৃষ্টি ব্যাপিয়া আছে, আকাশের তারা হ্ইতে পতঙ্গের পাখা পর্যন্ত সমস্তই ইহাকে মানে বলিয়াই বিশ্বসংসার এমন করিয়া চলিতেছে অথচ ভাঙিয়া পরিতেছে না। অতএব কাব্যেই কী, গানেই কী, এই লয়কে যদি মানি তবে তালের সঙ্গে বিবাদ ঘটিলেও ভয় করিবার প্রয়োজন নাই।
একটি দৃষ্টান্ত দিই-
ব্যাকুল বকুলের ফুলে...।এটা যে কী তাল তা আমি আনাড়ি জানিনা। এবং কোনো ওস্তাদও জানেন না। গণিয়া দেখিলে দেখি প্রত্যেক লাইনে নয় মাত্রা।
[সূত্র: সঙ্গীতচিন্তা। রবীন্দ্রনাথ। (নবযুগ প্রকাশনী, অগ্রহায়ণ ১৪১৭)। পৃষ্ঠা: ৪৬-৪৭]
উল্লৈখ্য লয় ও তালের দ্বন্দ্বের
উদাহরণ দিতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ ৯মাত্রার আরও ৩টি গান রচনা করেছিলেন।