মাতৃমন্দির-পুণ্য-অঙ্গন কর’ মহোজ্জ্বল আজ হে
বর -পুত্রসঙ্ঘ বিরাজ’ হে।
শুভ শঙ্খ বাজহ বাজ’ হে।
ঘন তিমিররাত্রির চির প্রতীক্ষা
পূর্ণ কর’, লহ’ জ্যোতিদীক্ষা,
যাত্রীদল সব সাজ’ হে।
শুভ শঙ্খ বাজহ বাজ’ হে।
বল জয় নরোত্তম, পুরুষসত্তম,
জয় তপস্বিরাজ হে।
জয় হে, জয় হে, জয় হে, জয় হে॥
এস’ বজ্রমহাসনে মাতৃ-আশীর্ভাষণে,
সকল সাধক এস’ হে, ধন্য কর’ এ দেশ হে।
সকল যোগী, সকল ত্যাগী, এস’ দুঃসহদুঃখভাগী—
এস’ দুর্জয়শক্তিসম্পদ মুক্তবন্ধ সমাজ হে।
এস’ জ্ঞানী, এস’ কর্মী নাশ’ ভারতলাজ হে।
এস’ মঙ্গল, এস’ গৌরব,
এস’ অক্ষয়পুণ্যসৌরভ,
এস’ তেজঃসূর্য উজ্জ্বল কীর্তি-অম্বর মাঝ হে
বীরধর্মে পুণ্যকর্মে বিশ্বহৃদয় রাজ’ হে।
শুভ শঙ্খ বাজহ বাজ’ হে।
জয় জয় নরোত্তম, পুরুষসত্তম,
জয় তপস্বিরাজ হে।
জয় হে, জয় হে, জয় হে, জয় হে॥
বঙ্গজননী-মন্দিরাঙ্গন মঙ্গলোজ্জ্বল আজ হে!
জয় বরোদারাজ হে!
শঙ্খ,
বাজহ,
বাজ’ হে―
জয়
নৃপোত্তম,
পুরুষসত্তম,
জয় বরোদারাজ হে।
ভাষিছে শুন বঙ্গবাণী
রাজদর্শন পূণ্য মানি―
এস হে, নৃপ,
এস হে,
ধন্য কর এ দেশ হে!
এস মঙ্গল, এস গৌরব,
এস অক্ষয়কীর্তিসৌরভ,
এস তেজঃ সূর্য উজ্জ্বল
নাশ ভারত লাজ
হে!
রাজধর্মে পুণ্য কর্মে
লোকহৃদয়ে রাজ' হে!
শঙ্খ, বাজহ, বাজ’ হে―
জয় নৃপোত্তম, পুরুষসত্তম,
জয় বরোদারাজ হে!
এরপর ১৩২৪
বঙ্গাব্দে স্যার জগদীশচন্দ্রের অনুরোধে
বসুবিজ্ঞান মন্দিরের
প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 'আবাহন' শিরোনামে বর্তমানে প্রচলিত গানটি রচনা করেন, যা
উৎসবের আবাহন সঙ্গীত হিসাবে
পরিবেশিত
হয় এবং আমন্ত্রণ পত্রে তা ছাপানো হয়।
বিখ্যাত ইতালীয়
পণ্ডিত কার্লো ফরমিকিকে শান্তিনিকেতনে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য এই গানটির আরেকটি
ভিন্ন রূপ রচনা করা হয়েছিল-
শান্তিমন্দির পুণ্য অঙ্গন
হোক সুমঙ্গল আজ হে
প্রিয় সুহৃতপ্রবর বিরাজ হে
শুভ শঙ্খ বাজহ বাজ
হে।
চির সমুৎসুক তব
প্রতীক্ষা সফল কর, লহ প্রেমদীক্ষা
মাল্যচন্দনে সাজ হে, শুভ শঙ্খ বাজহ বাজ হে।
জয় জয় বুধোত্তম অতিথিসত্তম
জ্ঞানতাপসরাজ হে ॥ জয়
হে।
এস আম্রনিকুঞ্জভবনে
শিশিরসঞ্চিত স্নিগ্ধ পবনে,
হউক সুন্দর শুভ আতিথ্য,
হোক প্রসন্ন তোমার চিত্ত,
তব সমাগম পুলক দীপ্ত
আজি বন্ধুসমাজ হে।
রাগ: ইমন, ভূপালী। তাল: তেওরা। [দ্রষ্টব্য: বিশ্ববিদ্যাতীর্থপ্রাঙ্গণ] [রাগরাগিণীর এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত। প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংগীত আকাদেমি, জুলাই ২০০১। পৃষ্ঠা: ১২৭।]