বিষয়: রজনীকান্ত সেনের গান।
গান সংখ্যা:
২৫৮
শিরোনাম: লক্ষ রূপে লক্ষ পূজা


   ভৈরবী
কাওয়ালী
লক্ষ রূপে লক্ষ পূজা
গ্রহণ করি’ ঘরে ঘরে,
লক্ষ বাঞ্ছা পূর্ণ করেন
তারিণী, অমোঘ বরে।
যিনি কাল-সীমন্তিনী,
আজ্ঞা না করিলে তিনি,
সাধ্য কি অষ্টমী তিথি
এক অণুপল নড়ে।
বন্ধ্যার সন্তান হবে,
বোবা ছেলে কথা কবে,
রোগশোক নাহি রবে
নবাগত সম্বৎসরে।
অন্ধ-নেত্র স্পর্শে মাতা
খুলে দেন তার আঁখির পাতা,
শ্রবণ-শক্তি পেল বধির
রজঃ দিয়ে শ্রবণ-বিবরে।
কল্পলতা হ’লেন এসে
ছোট-বড়-নির্ব্বিশেষে,
তাই তারে দেন মুক্ত করে,
যে যা চেয়ে পায়ে ধরে।
চতুর্দ্দিকে বাজে ঢাক,
কত কাঁসর, ঘণ্টা, শাঁখ,
“জয় শারদে, ব্রহ্মময়ি!”
কি উৎসব গিরি-নগরে!
কত পায়স, পুলি, পিঠে,
কত মণ্ডা, মেঠাই মিঠে,
দধি, দুধ, মাখন, নবনী,
ভোগ দিয়েছে ক্ষীরে, সরে।
মায়ের শুধু কৃপা-দৃষ্টি,
ভক্তদলে মণ্ডাবৃষ্টি,
প্রসাদ পাচ্ছে কি আনন্দে,
যার যত উদরে ধরে।
ফেরে না প্রসাদ না পেয়ে,
তৃপ্ত হয় না প্রসাদ খেয়ে,
খেয়ে বলে, “আরো খাবো”,
খেয়ে কারো পেট না ভরে।
কি আনন্দ, কি উল্লাসে,
মায়ের ভক্ত নাচে, হাসে;
বলে, “এবার বাবা এলে,”
রাখ্‌ব তোরে জোর-জবরে।”
কান্ত কয়, আনন্দময়ি,
আমি কি তোর ছেলে নই?
(বড়ো) দুঃখে আছি, ঐ আনন্দের
এক কণিকা দে মা, মোরে।

প্রেক্ষাপট: ১৩১৫ বঙ্গাব্দের ২১ অগ্রহায়ণ, বঙ্গীয়-সাহিত্য পরিষদের নবগৃহ প্রবেশের দিনে একটি অনুষ্ঠান হয়। এই অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এই অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথের অনুরোধে রজনীকান্ত দুটি গান পরিবেশন করেন। এই গানটি ছাড়া অপর গানটি ছিল
                     'স্তূপীকৃত, গণন-রহিত ধূলি  [গান-২৮২] [তথ্য]'।
  ধারণা করা হয়, এই গান দুটি তিনি রবীন্দ্রনাথের অনুরোধ রক্ষার জন্য অল্প সময়ের ভিতরেই রচনা করেছিলেন।
         [সূত্র: রজনীকান্তের গান। শান্তিলতা দেবী। দেশ, বিনোদন, ১৩৯১।]