ভাষাংশ।
কোরানের সূরা সূচি
পবিত্র
কোরআনুল করীম
৬৪
সুরা
আত্-তাগাবুন
মদীনায় অবতীর্ণ : আয়াত ১৮
পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহ্র নামে শুরু করছি।
১.নভোমণ্ডল
ও ভূমণ্ডলে যা কিছু আছে,
সবই আল্লাহ্র পবিত্রতা ঘোষণা করে।
রাজত্ব তাঁরই এবং প্রশংসা তাঁরই। তিনি সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।
২. তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন,
অতঃপর তোমাদের মধ্যে কেউ কাফের এবং কেউ মুমিন। তোমরা যা কর,
আল্লাহ্ তা দেখেন।
৩. তিনি নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলকে যথাযথভাবে সৃষ্টি করেছেন এবং
তোমাদেরকে আকৃতি দান করেছেন,
অতঃপর সুন্দর করেছেন তোমাদের আকৃতি।
তাঁরই কাছে প্রত্যাবর্তন।
৪. নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলে যা আছে,
তিনি তা জানেন। তিনি আরও জানেন তোমরা যা
গোপনে কর এবং যা প্রকাশ্যে কর। আল্লাহ্ অন্তরের বিষয়াদি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত।
৫. তোমাদের পুর্বে যারা কাফের ছিল,
তাদের বৃত্তান্ত কি তোমাদের কাছে পৌঁছেনি?
তারা তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করেছে,
এবং তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
৬. এটা এ কারণে যে,
তাদের কাছে তাদের রসূলগণ প্রকাশ্য নিদর্শনাবলীসহ আগমন করলে তারা
বলতঃ মানুষই কি আমাদেরকে পথপ্রদর্শন করবে?
অতঃপর তারা কাফের হয়ে গেল এবং মুখ ফিরিয়ে নিল। এতে আল্লাহ্র কিছু
আসে যায় না। আল্লাহ্ অমুখাপেক্ষী প্রশংসিত।
৭. কাফেররা দাবী করে যে,
তারা কখনও পুনরুত্থিত হবে না। বলুন,
অবশ্যই হবে, আমার পালনকর্তার কসম,
তোমরা নিশ্চয় পুনরুত্থিত হবে। অতঃপর তোমাদেরকে
অবহিত করা হবে যা তোমরা করতে। এটা আল্লাহ্র পক্ষে সহজ।
৮. অতএব তোমরা আল্লাহ্ তাঁর রসূল এবং অবতীর্ন নূরের প্রতি বিশ্বাস
স্থাপন কর। তোমরা যা কর,
সে বিষয়ে আল্লাহ্ সম্যক অবগত।
৯. সেদিন অর্থাৎ,
সমাবেশের দিন আল্লাহ্ তোমাদেরকে সমবেত করবেন। এ দিন হার-জিতের
দিন। যে ব্যক্তি আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে,
আল্লাহ্ তার পাপসমূহ মোচন করবেন এবং তাকে জান্নাতে দাখিল
করবেন। যার তলদেশে নির্ঝরিনীসমূহ প্রবাহিত হবে,
তারা তথায় চিরকাল বসবাস করবে। এটাই মহাসাফল্য।
১০. আর যারা কাফের এবং আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলে,
তারাই জাহান্নামের অধিবাসী,
তারা তথায় অনন্তকাল থাকবে। কতই না মন্দ প্রত্যাবর্তনস্থল এটা!
১১. আল্লাহ্র নির্দেশ ব্যতিরেকে কোন বিপদ আসে না এবং যে আল্লাহ্র
প্রতি বিশ্বাস করে,
তিনি তার অন্তরকে সৎপথ প্রদর্শন করেন।
আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত।
১২. তোমরা আল্লাহ্র আনুগত্য কর এবং রসূলুল্লাহ্র আনুগত্য কর। যদি
তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও,
তবে আমার রসূলের দায়িত্ব কেবল খোলাখুলি
পৌঁছে দেয়া।
১৩. আল্লাহ্, তিনি ব্যতীত কোন মাবুদ নেই। অতএব মুমিনগণ আল্লাহ্র
উপর ভরসা করুক।
১৪. হে মুমিনগণ,
তোমাদের কোন কোন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি তোমাদের দুশমন।
অতএব তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাক। যদি মার্জনা কর, উপেক্ষা
কর, এবং ক্ষমা কর, তবে
আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, করুণাময়।
১৫. তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তো কেবল পরীক্ষাস্বরূপ। আর
আল্লাহ্র কাছে রয়েছে মহাপুরস্কার।
১৬. অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহ্কে ভয় কর,
শুন, আনুগত্য কর এবং ব্যয় কর। এটা
তোমাদের জন্যে কল্যাণকর। যারা মনের কার্পণ্য থেকে মুক্ত,
তারাই সফলকাম।
১৭. যদি তোমরা আল্লাহ্কে উত্তম ঋণ দান কর,
তিনি তোমাদের জন্যে তা দ্বিগুণ করে দেবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা
করবেন। আল্লাহ্ গুণগ্রাহী,
সহনশীল।
১৮. তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানী,
পরাক্রান্ত,
প্রজ্ঞাময়।
৬৫
সুরা
আত্ব-ত্বালাক্ব
মদীনায় অবতীর্ণ : আয়াত ১২
পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহ্র নামে শুরু করছি।
১.হে নবী,
তোমরা যখন স্ত্রীদেরকে তালাক দিতে চাও,
তখন তাদেরকে তালাক দিয়ো ইদ্দতের প্রতি লক্ষ্য রেখে এবং ইদ্দত
গণনা করো। তোমরা তোমাদের পালনকর্তা আল্লাহ্কে ভয় করো। তাদেরকে তাদের গৃহ থেকে
বহিস্কার করো না এবং তারাও যেন বের না হয় যদি না তারা কোন সুস্পষ্ট নির্লজ্জ কাজে
লিপ্ত হয়। এগুলো আল্লাহ্র নির্ধারিত সীমা। যে ব্যক্তি আল্লাহ্র সীমালংঘন করে,
সে নিজেরই অনিষ্ট করে। সে জানে না,
হয়তো আল্লাহ্ এই তালাকের পর কোন নতুন উপায় করে
দেবেন।
২. অতঃপর তারা যখন তাদের ইদ্দতকালে পৌঁছে,
তখন তাদেরকে যথোপযুক্ত পন্থায় রেখে দেবে অথবা যথোপযুক্ত
পন্থায় ছেড়ে দেবে এবং তোমাদের মধ্য থেকে দু’জন
নির্ভরযোগ্য লোককে সাক্ষী রাখবে। তোমরা আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে সাক্ষ্য দিবে।
এতদ্দ্বারা যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ও পরকালে বিশ্বাস করে,
তাকে উপদেশ দেয়া হচ্ছে। আর যে আল্লাহ্কে ভয় করে,
আল্লাহ্ তার জন্যে নিস্কৃতির পথ করে দেবেন।
৩. এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিযিক দেবেন। যে ব্যক্তি
আল্লাহ্র উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। আল্লাহ্ তার কাজ পূর্ণ করবেন।
আল্লাহ্ সবকিছুর জন্যে একটি পরিমাণ স্থির করে রেখেছেন।
৪. তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যাদের ঋতুবতী হওয়ার আশা নেই,
তাদের ব্যাপারে সন্দেহ হলে তাদের ইদ্দত হবে তিন মাস। আর যারা
এখনও ঋতুর বয়সে পৌঁছেনি, তাদেরও অনুরূপ ইদ্দতকাল হবে।
গর্ভবতী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তানপ্রসব পর্যন্ত। যে আল্লাহ্কে ভয় করে,
আল্লাহ্ তার কাজ সহজ করে দেন।
৫. এটা আল্লাহ্র নির্দেশ,
যা তিনি তোমাদের প্রতি নাযিল করেছেন। যে আল্লাহ্কে ভয় করে,
আল্লাহ্ তার পাপ মোচন করেন এবং তাকে
মহাপুরস্কার দেন।
৬. তোমরা তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী যেরূপ গৃহে বাস কর,
তাদেরকেও বসবাসের জন্যে সেরূপ গৃহ দাও। তাদেরকে কষ্ট দিয়ে
সংকটাপন্ন করো না। যদি তারা গর্ভবতী হয়, তবে
সন্তানপ্রসব পর্যন্ত তাদের ব্যয়ভার বহন করবে। যদি তারা তোমাদের সন্তানদেরকে
স্তন্যদান করে, তবে তাদেরকে প্রাপ্য পারিশ্রমিক দেবে এবং
এ সম্পর্কে পরস্পর সংযতভাবে পরামর্শ করবে। তোমরা যদি পরস্পর জেদ কর,
তবে অন্য নারী স্তন্যদান করবে।
৭. বিত্তশালী ব্যক্তি তার বিত্ত অনুযায়ী ব্যয় করবে। যে ব্যক্তি
সীমিত পরিমাণে রিযিকপ্রাপ্ত,
সে আল্লাহ্ যা দিয়েছেন, তা থেকে ব্যয়
করবে। আল্লাহ্ যাকে যা দিয়েছেন,
তদপেক্ষা বেশী ব্যয় করার আদেশ কাউকে করেন না। আল্লাহ্ কষ্টের পর সুখ দেবেন।
৮. অনেক জনপদ তাদের পালনকর্তা ও তাঁর রসূলগণের আদেশ অমান্য করেছিল,
অতঃপর আমি তাদেরকে কঠোর হিসাবে ধৃত
করেছিলাম এবং তাদেরকে ভীষণ শাস্তি দিয়েছিলাম।
৯. অতঃপর তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করল এবং তাদের কর্মের পরিণাম
ক্ষতিই ছিল।
১০. আল্লাহ্ তাদের জন্যে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তত রেখেছেন অতএব,
হে বুদ্ধিমানগণ, যারা ঈমান এনেছ,
তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর। আল্লাহ্
তোমাদের প্রতি উপদেশ নাযিল করেছেন,
১১. একজন রসূল,
যিনি তোমাদের কাছে আল্লাহ্র সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ পাঠ করেন,
যাতে বিশ্বাসী ও সৎকর্মপরায়ণদের অন্ধকার থেকে আলোতে আনয়ন করেন।
যে আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম সম্পাদন করে,
তিনি তাকে দাখিল করবেন জান্নাতে, যার
তলদেশে নদী প্রবাহিত, তথায় তারা
চিরকাল থাকবে। আল্লাহ্ তাকে উত্তম রিযিক দেবেন।
১২. আল্লাহ্ সপ্তাকাশ সৃষ্টি করেছেন এবং পৃথিবীও সেই পরিমাণে,
এসবের মধ্যে তাঁর আদেশ অবতীর্ণ হয়,
যাতে তোমরা জানতে পার যে,
আল্লাহ্ সর্বশক্তিমান এবং সবকিছু তাঁর গোচরীভূত।
৬৬
সুরা
আত্-তাহ্রীম
মদীনায় অবতীর্ণ : আয়াত ১২
পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহ্র নামে শুরু করছি।
১. হে নবী,
আল্লাহ্ আপনার জন্যে যা হালাল করেছেন,
আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে খুশী করার জন্যে তা নিজের জন্যে হারাম
করেছেন কেন? আল্লাহ্ ক্ষমাশীল,
দয়াময়।
২. আল্লাহ্
তোমাদের জন্যে কসম থেকে অব্যহতি লাভের উপায় নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আল্লাহ্
তোমাদের মালিক। তিনি সর্বজ্ঞ,
প্রজ্ঞাময়।
৩. যখন নবী
তাঁর একজন স্ত্রীর কাছে একটি কথা গোপনে বললেন,
অতঃপর স্ত্রী যখন তা বলে দিল এবং আল্লাহ্ নবীকে তা জানিয়ে দিলেন,
তখন নবী সে বিষয়ে স্ত্রীকে কিছু বললেন এবং কিছু বললেন না। নবী
যখন তা স্ত্রীকে বললেন, তখন স্ত্রী বললেনঃ কে আপনাকে এ
সম্পর্কে অবহিত করল? নবী বললেনঃ যিনি সর্বজ্ঞ,
ওয়াকিফহাল,
তিনি আমাকে অবহিত করেছেন।
৪. তোমাদের
অন্তর অন্যায়ের দিকে ঝুঁকে পড়েছে বলে যদি তোমরা উভয়ে তওবা কর,
তবে ভাল কথা। আর যদি নবীর বিরুদ্ধে একে অপরকে সাহায্য কর,
তবে জেনে রেখ আল্লাহ্ জিবরাঈল এবং
সৎকর্মপরায়ণ মুমিনগণ তাঁর সহায়। উপরন্তুত ফেরেশতাগণও তাঁর সাহায্যকারী।
৫. যদি নবী
তোমাদের সকলকে পরিত্যাগ করেন,
তবে সম্ভবতঃ তাঁর পালনকর্তা তাঁকে পরিবর্তে দিবেন তোমাদের
চাইতে উত্তম স্ত্রী, যারা হবে আজ্ঞাবহ,
ঈমানদার, নামাযী তওবাকারিণী,
এবাদতকারিণী, রোযাদার,
অকুমারী ও কুমারী।
৬. মুমিনগণ,
তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে সেই অগ্নি থেকে
রক্ষা কর, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও প্রস্তর,
যাতে নিয়োজিত আছে পাষাণ হৃদয়,
কঠোরস্বভাব ফেরেশতাগণ। তারা আল্লাহ্ তাআলা যা আদেশ করেন,
তা অমান্য করে না এবং যা করতে আদেশ করা হয়,
তাই করে।
৭. হে কাফের
সম্প্রদায়,
তোমরা আজ ওযর পেশ করো না। তোমাদেরকে তারই প্রতিফল দেয়া হবে,
যা তোমরা করতে।
৮. মুমিনগণ!
তোমরা আল্লাহ্ তাআলার কাছে তওবা কর-আন্তরিক তওবা। আশা করা যায়,
তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের মন্দ কর্মসমূহ মোচন করে দেবেন এবং
তোমাদেরকে দাখিল করবেন জান্নাতে, যার তলদেশে নদী
প্রবাহিত। সেদিন আল্লাহ্ নবী এবং তাঁর বিশ্বাসী সহচরদেরকে অপদস্থ করবেন না। তাদের
নূর তাদের সামনে ও ডানদিকে ছুটোছুটি করবে। তারা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা,
আমাদের নূরকে পূর্ণ করে দিন এবং আমাদেরকে
ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আপনি সবকিছুর উপর সর্বশক্তিমান।
৯. হে নবী!
কাফের ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জেহাদ করুন এবং তাদের প্রতি কঠোর হোন। তাদের ঠিকানা
জাহান্নাম। সেটা কতই না নিকৃষ্ট স্থান।
১০. আল্লাহ্
তাআলা কাফেরদের জন্যে নূহ-পত্নী ও লূত-পত্নীর দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন। তারা ছিল
আমার দুই ধর্মপরায়ণ বান্দার গৃহে। অতঃপর তারা তাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করল। ফলে
নূহ ও লূত তাদেরকে আল্লাহ্ তাআলার কবল থেকে রক্ষা করতে পারল না এবং তাদেরকে বলা হলঃ
জাহান্নামীদের সাথে জাহান্নামে চলে যাও।
১১. আল্লাহ্
তাআলা মুমিনদের জন্যে ফেরাঊন-পত্নীর দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন। সে বললঃ হে আমার
পালনকর্তা! আপনার সন্নিকটে জান্নাতে আমার জন্যে একটি গৃহ নির্মাণ করুন,
আমাকে ফেরাঊন ও তার দুস্কর্ম থেকে উদ্ধার
করুন এবং আমাকে যালেম সম্প্রদায় থেকে মুক্তি দিন।
১২. আর
দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন এমরান-তনয়া মরিয়মের,
যে তার সতীত্ব বজায় রেখেছিল। অতঃপর আমি
তার মধ্যে আমার পক্ষ থেকে জীবন ফুঁকে দিয়েছিলাম এবং সে তার পালনকর্তার বানী ও
কিতাবকে সত্যে পরিণত করেছিল। সে ছিল বিনয় প্রকাশকারীনীদের একজন।
৬৭.
সুরা
আল-মুল্ক
মক্কায় অবতীর্ণ : আয়াত ৩০
পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহ্র নামে শুরু করছি।
১.পূণ্যময়
তিনি,
যাঁর হাতে রাজত্ব। তিনি সবকিছুর উপর
সর্বশক্তিমান।
২. যিনি
সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন,
যাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন-কে তোমাদের মধ্যে কর্মে শ্রেষ্ঠ?
তিনি পরাক্রমশালী,
ক্ষমাময়।
৩. তিনি সপ্ত
আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। তুমি করুণাময় আল্লাহ্ তাআলার সৃষ্টিতে কোন তফাত
দেখতে পাবে না। আবার দৃষ্টিফিরাও;
কোন ফাটল দেখতে পাও কি?
৪. অতঃপর
তুমি বার বার তাকিয়ে দেখ-তোমার দৃষ্টি ব্যর্থ ও পরিশ্রান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে
আসবে।
৫. আমি
সর্বনিম্ন আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুসজ্জত করেছি;
সেগুলোকে শয়তানদের জন্যে ক্ষেপণাস্ত্রবৎ
করেছি এবং প্রস্তুত করে রেখেছি তাদের জন্যে জলন্ত অগ্নির শাস্তি।
৬. যারা
তাদের পালনকর্তাকে অস্বীকার করেছে তাদের জন্যে রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি। সেটা কতই
না নিকৃষ্ট স্থান।
৭. যখন তারা
তথায় নিক্ষিপ্ত হবে,
তখন তার উৎক্ষিপ্ত গর্জন শুনতে পাবে।
৮. ক্রোধে
জাহান্নাম যেন ফেটে পড়বে। যখনই তাতে কোন সম্প্রদায় নিক্ষিপ্ত হবে তখন তাদেরকে তার
সিপাহীরা জিজ্ঞাসা করবে। তোমাদের কাছে কি কোন সতর্ককারী আগমন করেনি?
৯. তারা
বলবেঃ হ্যাঁ আমাদের কাছে সতর্ককারী আগমন করেছিল,
অতঃপর আমরা মিথ্যারোপ করেছিলাম এবং
বলেছিলামঃ আল্লাহ্ তাআলা কোন কিছু নাজিল করেননি। তোমরা মহাবিভ্রান্তিতে পড়ে
রয়েছ।
১০. তারা আরও
বলবেঃ যদি আমরা শুনতাম অথবা বুদ্ধি খাটাতাম,
তবে আমরা জাহান্নামবাসীদের মধ্যে থাকতাম
না।
১১. অতঃপর
তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করবে। জাহান্নামীরা দূর হোক।
১২. নিশ্চয়
যারা তাদের পালনকর্তাকে না দেখে ভয় করে,
তাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও
মহাপুরস্কার।
১৩. তোমরা
তোমাদের কথা গোপনে বল অথবা প্রকাশ্যে বল,তিনি তো অন্তরের বিষয়াদি সম্পর্কে সম্যক
অবগত।
১৪. যিনি
সৃষ্টি করেছেন,তিনি কি করে যানবেন না? তিনি সূক্ষজ্ঞানী, সম্যক জ্ঞাত।
১৫. তিনি
তোমাদের জন্যে পৃথিবীকে সুগম করেছেন, অতএব, তোমরা তার কাঁধে বিচরণ কর এবং তাঁর দেয়া
রিযিক আহার কর। তাঁরই কাছে পুনরুজ্জীবন হবে।
১৬. তোমরা
কি ভাবনামুক্ত হয়ে গেছ যে,
আকাশে যিনি আছেন তিনি তোমাদেরকে ভূগর্ভে বিলীন করে দেবেন,
অতঃপর তা কাঁপতে থাকবে।
১৭. না
তোমরা নিশ্চিন্ত হয়ে গেছ যে,
আকাশে যিনি আছেন, তিনি তোমাদের উপর
প্রস্তর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন,
অতঃপর তোমরা জানতে পারবে কেমন ছিল আমার সতর্কবাণী।
১৮. তাদের
পূর্ববর্তীরা মিথ্যারোপ করেছিল,
অতঃপর কত কঠোর হয়েছিল আমার অস্বীকৃতি।
১৯. তারা কি
লক্ষ্য করে না,
তাদের মাথার উপর উড়ন্ত পক্ষীকুলের প্রতি-পাখা বিস্তারকারী ও
পাখা সংকোচনকারী? রহমান
আল্লাহ্-ই তাদেরকে স্থির রাখেন। তিনি সর্ব-বিষয় দেখেন।
২০. রহমান
আল্লাহ্ তাআলা ব্যতীত তোমাদের কোন সৈন্য আছে কি,
যে তোমাদেরকে সাহায্য করবে?
কাফেররা বিভ্রান্তিতেই পতিত আছে।
২১. তিনি যদি
রিযিক বন্ধ করে দেন,
তবে কে আছে,
যে তোমাদেরকে রিযিক দিবে বরং তারা অবাধ্যতা ও বিমুখতায় ডুবে রয়েছে।
২২. যে
ব্যক্তি উপুড় হয়ে মুখে ভর দিয়ে চলে,
সে-ই কি সৎ পথে চলে, না সে ব্যক্তি
যে সোজা হয়ে সরলপথে চলে?
২৩. বলুন,
তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং দিয়েছেন কর্ণ,
চক্ষু ও অন্তর। তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞতা
প্রকাশ কর।
২৪. বলুন,
তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে বিস্তৃত
করেছেন এবং তাঁরই কাছে তোমরা সমবেত হবে?
২৫. কাফেররা
বলেঃ এই প্রতিশ্রুতি কবে হবে,
যদি তোমরা সত্যবাদী হও?
২৬. বলুন,
এর জ্ঞান আল্লাহ্ তাআলার কাছেই আছে। আমি
তো কেবল প্রকাশ্য সতর্ককারী।
২৭. যখন তারা
সেই প্রতিশ্রুতিকে আসন্ন দেখবে তখন কাফেরদের মুখমণ্ডল মলিন হয়ে পড়বে এবং বলা হবেঃ
এটাই তো তোমরা চাইতে।
২৮. বলুন,
তোমরা কি ভেবে দেখেছ-যদি আল্লাহ্ তাআলা আমাকে ও আমার সংগীদেরকে
ধ্বংস করেন অথবা আমাদের প্রতি দয়া করেন, তবে কাফেরদেরকে
কে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?
২৯. বলুন,
তিনি পরম করুণাময়, আমরা তাতে বিশ্বাস
রাখি এবং তাঁরই উপর ভরসা করি। সত্ত্বরই তোমরা জানতে পারবে,
কে প্রকাশ্য পথ-ভ্রষ্টতায় আছে।
৩০. বলুন,
তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি তোমাদের
পানি ভূগর্ভের গভীরে চলে যায়, তবে কে তোমাদেরকে সরবরাহ
করবে পানির স্রোতধারা?