ভাষাংশ।
কোরানের সূরা সূচি
পবিত্র
কোরআনুল করীম
৭৫
সুরা
আল্-ক্বেয়ামাহ
মক্কায় অবতীর্ণ
: আয়াত
৪০
পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহ্র
নামে শুরু করছি।
১. আমি শপথ
করি কেয়ামত দিবসের,
২. আরও শপথ করি সেই মনের,
যে নিজেকে ধিক্কার দেয়–
৩. মানুষ কি মনে করে যে আমি তার অস্থিসমূহ একত্রিত করব না?
৪. পরন্ত আমি তার অংগুলিগুলো পর্যন্ত সঠিকভাবে সন্নিবেশিত করতে
সক্ষম।
৫. বরং মানুষ তার ভবিষ্যত জীবনেও ধৃষ্টতা করতে চায়;
৬. সে প্রশ্ন করে-কেয়ামত দিবস কবে?
৭. যখন দৃষ্টি চমকে যাবে,
৮. চন্দ্র জ্যোতিহীন হয়ে যাবে।
৯. এবং সূর্য ও চন্দ্রকে একত্রিত করা হবে–
১০. সে দিন মানুষ বলবেঃ পলায়নের জায়গা কোথায়
?
১১. না কোথাও আশ্রয়স্থল নেই।
১২. আপনার পালনকর্তার কাছেই সেদিন ঠাঁই হবে।
১৩. সেদিন মানুষকে অবহিত করা হবে সে যা সামনে প্রেরণ করেছে ও পশ্চাতে ছেড়ে
দিয়েছে।
১৪. বরং মানুষ নিজেই তার নিজের সম্পর্কে চক্ষুষ্মান।
১৫. যদিও সে তার অজুহাত পেশ করতে চাইবে।
১৬. তাড়াতাড়ি শিখে নেয়ার জন্যে আপনি দ্রুত ওহী আবৃত্তি করবেন না।
১৭. এর সংরক্ষণ ও পাঠ আমারই দায়িত্ব।
১৮. অতঃপর আমি যখন তা পাঠ করি,
তখন আপনি সেই পাঠের অনুসরণ করুন।
১৯. এরপর বিশদ বর্ণনা আমারই দায়িত্ব।
২০. কখনও না,
বরং তোমরা পার্থিব জীবনকে ভালবাস
২১. এবং পরকালকে উপেক্ষা কর।
২২. সেদিন অনেক মুখমণ্ডল উজ্জ্বল হবে।
২৩. তারা তার পালনকর্তার দিকে তাকিয়ে থাকবে।
২৪. আর অনেক মুখমণ্ডল সেদিন উদাস হয়ে পড়বে।
২৫. তারা ধারণা করবে যে,
তাদের সাথে কোমর-ভাঙ্গা আচরণ করা হবে।
২৬. কখনও না,
যখন প্রাণ কন্ঠাগত হবে।
২৭. এবং বলা হবে,
কে ঝাড়বে
২৮. এবং সে মনে করবে যে,
বিদায়ের ক্ষণ এসে গেছে
২৯. এবং গোছা গোছার সাথে জড়িত হয়ে যাবে।
৩০. সেদিন,
আপনার পালনকর্তার নিকট সবকিছু নীত হবে।
৩১. সে বিশ্বাস করেনি এবং নামায পড়েনি;
৩২. পরন্ত মিথ্যারোপ করেছে ও পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছে।
৩৩. অতঃপর সে দম্ভভরে পরিবার-পরিজনের নিকট ফিরে গিয়েছে।
৩৪. তোমার দুর্ভোগের উপর দুর্ভোগ!
৩৫. অতঃপর,
তোমার দুর্ভোগের উপর দুর্ভোগ।
৩৬. মানুষ কি মনে করে যে,
তাকে এমনি ছেড়ে দেয়া হবে?
৩৭. সে কি স্খলিত বীর্য ছিল না?
৩৮. অতঃপর সে ছিল রক্তপিণ্ড,
অতঃপর আল্লাহ্ তাকে সৃষ্টি করেছেন এবং
সুবিন্যস্ত করেছেন।
৩৯. অতঃপর তা থেকে সৃষ্টি করেছেন যুগল- নর ও নারী।
৪০. তবুও কি সেই আল্লাহ্ মৃতদেরকে জীবিত করতে সক্ষম নন?
৭৬.
সুরা
আদ-দাহ্র
মক্কায় অবতীর্ণ
: আয়াত
৩১
পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহ্র
নামে শুরু করছি।
১. মানুষের
উপর এমন কিছু সময় অতিবাহিত হয়েছে যখন সে উল্লেখযোগ্য কিছু ছিল না।
২. আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিশ্র শুক্রবিন্দু থেকে-এভাবে
যে, তাকে পরীক্ষা করব। অতঃপর তাকে
করে দিয়েছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন।
৩. আমি তাকে পথ দেখিয়ে দিয়েছি। এখন সে হয় কৃতজ্ঞ হয়,
না হয় অকৃতজ্ঞ হয়।
৪. আমি অবিশ্বাসীদের জন্যে প্রস্তুত রেখেছি শিকল,
বেড়ি ও প্রজ্বলিত অগ্নি।
৫. নিশ্চয়ই সৎকর্মশীলরা পান করবে কাফুর মিশ্রিত পানপাত্র।
৬. এটা একটা ঝরণা,
যা থেকে আল্লাহ্র বান্দাগণ পান
করবে-তারা একে প্রবাহিত করবে।
৭. তারা মান্নত পূর্ণ করে এবং সেদিনকে ভয় করে,
যেদিনের অনিষ্ট হবে সুদূরপ্রসারী।
৮. তারা আল্লাহ্র প্রেমে অভাবগ্রস্ত,
এতীম ও বন্দীকে আহার্য দান করে।
৯. তারা বলেঃ কেবল আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্যে আমরা তোমাদেরকে
আহার্য দান করি এবং তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান ও কৃতজ্ঞতা কামনা করি না।
১০. আমরা আমাদের পালনকর্তার তরফ থেকে এক ভীতিপ্রদ ভয়ংকর দিনের ভয় রাখি।
১১. অতঃপর আল্লাহ্ তাদেরকে সেদিনের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করবেন এবং তাদেরকে দিবেন
সজীবতা ও আনন্দ।
১২. এবং তাদের সবরের প্রতিদানে তাদেরকে দিবেন জান্নাত ও রেশমী পোশাক।
১৩. তারা সেখানে সিংহাসনে হেলান দিয়ে বসবে। সেখানে রৌদ্র ও শৈত্য অনুভব করবে না।
১৪. তার বৃক্ষছায়া তাদের উপর ঝুঁকে থাকবে এবং তার ফলসমূহ তাদের আয়ত্তাধীন রাখা হবে।
১৫. তাদেরকে পরিবেশন করা হবে রূপার পাত্রে এবং স্ফটিকের মত পানপাত্রে।
১৬. রূপালী স্ফটিক পাত্রে-পরিবেশনকারীরা
তা পরিমাপ করে পূর্ণ করবে।
১৭. তাদেরকে সেখানে পান করানো হবে
‘যানজাবীল’
মিশ্রিত পানপাত্র।
১৮. এটা জান্নাতস্থিত
‘সালসাবীল’
নামক একটি ঝরণা।
১৯. তাদের কাছে ঘোরাফেরা করবে চির কিশোরগণ। আপনি তাদেরকে দেখে মনে
করবেন যেন বিক্ষিপ্ত মনি-মুক্তা।
২০. আপনি যখন সেখানে দেখবেন,
তখন নেয়ামতরাজি ও বিশাল রাজ্য দেখতে
পাবেন।
২১. তাদের আবরণ হবে চিকন সবুজ রেশম ও মোটা সবুজ রেশম এবং তাদেরকে
পরিধান করোনো হবে রৌপ্য নির্মিত কংকণ এবং তাদের পালনকর্তা তাদেরকে পান করাবেন
'শরাবান-তহুরা'।
২২. এটা তোমাদের প্রতিদান। তোমাদের প্রচেষ্টা স্বীকৃতি লাভ
করেছে।
২৩. আমি আপনার প্রতি পর্যায়ক্রমে কোরআন নাযিল করেছি।
২৪. অতএব,
আপনি আপনার পালনকর্তার আদেশের জন্যে
ধৈর্য্য সহকারে অপেক্ষা করুন এবং ওদের মধ্যকার কোন পাপিষ্ঠ ও কাফেরের আনুগত্য
করবেন না।
২৫. এবং সকাল-সন্ধ্যায় আপন পালনকর্তার নাম স্মরণ করুন।
২৬. রাত্রির কিছু অংশে তাঁর উদ্দেশে সিজদা করুন এবং রাত্রির দীর্ঘ সময় তাঁর
পবিত্রতা বর্ণনা করুন।
২৭. নিশ্চয় এরা পার্থিব জীবনকে ভালবাসে এবং এক কঠিন দিবসকে পশ্চাতে ফেলে রাখে।
২৮. আমি তাদেরকে সৃষ্টি করেছি এবং মজবুত করেছি তাদের গঠন। আমি যখন ইচ্ছা করব,
তখন তাদের পরিবর্তে তাদের অনুরূপ লোক
আনব।
২৯. এটা উপদেশ,
অতএব যার ইচ্ছা হয় সে তার পালনকর্তার পথ
অবলম্বন করুক।
৩০. আল্লাহ্র অভিপ্রায় ব্যতিরেকে তোমরা অন্য কোন অভিপ্রায় পোষণ
করবে না। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়।
৩১. তিনি যাকে ইচ্ছা তাঁর রহমতে দাখিল করেন। আর যালেমদের জন্যে তো প্রস্তুত
রেখেছেন মর্মন্তুদ শাস্তি।