বিষয়: নজরুল সঙ্গীত
গান সংখ্যা: ১৩৮৪.
শিরোনাম: চপল আঁখির ভাষায়, হে মীনাক্ষী ক'য়ে যাও।
পাঠ ও পাঠভেদ:

• নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ (নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। ফেব্রুয়ারি ২০১২)। ১৩৮৪ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ৪১৮-৪১৯।

চপল আঁখির ভাষায়, হে মীনাক্ষী ক'য়ে যাও।
না-বলা কোন্ বাণী বলিতে চাও॥
             আড়ি পাতে নিঝ্‌ঝুম বন                    
             আঁখি তুলি' চাহিবে কখন,
আঁখির তিরস্কারে ঐ বন-কান্তারে ফুল ফোটাও॥
নিটোল আকাশ টোল খায় তোমারি চাওয়ায়, হে মীনাক্ষী,
নদী-জলে চঞ্চল সফরী লুকায়, হে মীনাক্ষী!
             ওই আঁখির করুণা,
             ঢালো রাগ অরুণা,
আঁখিতে আঁখিতে ফুল-রাখি বেঁধে দাও॥

• ভাবসন্ধান: এই গানটিতে কোনো মৎস্য-নয়নার কথা বলা হয়েছে। কবি তার চঞ্চল চোখের ভাষা বুঝতে পারে না। নিঝুম বন তার চোখের ভাষা অনুভব করার জন্য আড়ি পাতে। ওই আঁখির কটাক্ষেই যেন বনফুল ফুটে উঠে। তার দৃষ্টিপাতে যেন আকাশের নিটল গালে টোল পড়ে। তার চোখের চাঞ্চল্যে লজ্জা পেয়ে নদী জলে চঞ্চল পুঁটি মাছও নিজেকে লুকায়। ওই আঁখির কারুণ্য যেন প্রভাতী সূর্য রঙ ছড়ায়। কবি মৎস্য-নয়নার চোখে চোখে পুষ্প-রাখির মতো সৌন্দর্য-রাখি বাঁধতে চান। মূলত; এই গানটিতে রয়েছে আবেগের অদম্য স্বেচ্ছাচারিতা। এর বাইরে গানটি মহত্তোম হয়ে উঠে নি। গানটির ভিতরে যা রয়েছে, তা হলো মূলত বাণী ও সুরের মেলবন্ধনে সৃষ্টি নান্দনিক বিমূর্ত রূপরাশি।
• তথ্যানুসন্ধান:
  • ক) রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে জানা যায় না। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ জানুয়ারি বেতার থেকে (নবরাগমালিকা-অনুষ্ঠানে) এই গানটি প্রথম প্রচারিত হয়। সেই অনুযায়ী, ধারণা করা যায় যে, গানটি নজরুল ইসলামের ৪১ বৎসর বয়সে রচিত হয়েছিল।
  • খ) প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
    • একশো গানের নজরুল স্বরলিপি, প্রথম খণ্ড (হরফ প্রকাশনী, পৌষ ১৪০৬। জানুয়ারি ২০০০)। ৪৩ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ১০৭-১০৯।
    • নজরুলগীতি-অখণ্ড,হরফ।
    • নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ (নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। ফেব্রুয়ারি ২০১২)। ১৩৮৪ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ৪১৮-৪১৯।
    • নবরাগ (নজরুল ইনস্টিটিউট। সেপ্টেম্বর ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দ)। ৩য় গান। পৃষ্ঠা: ৬-৮।
    • নবরাগ (হরফ প্রকাশনী। কবির ৭৩তম জন্মদিন, ১৩৭৯ বঙ্গাব্দ)। ৩য় গান। পৃষ্ঠা: ১৩-১৪।
    • বেতার জগৎ, ১৬.১.১৯৪০ সংখ্যা।
    • সুনির্বাচিত নজরুল গীতির স্বরলিপি, চতুর্থ খণ্ড (সাহিত্যম্, আশ্বিন ১৩৮৫‌। সেপ্টেম্বর ১৯৭৮)। ৭৩ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ১৫৭-১৫৮।
  • বেতার:
    • ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ জানুয়ারি বেতার থেকে (নবরাগমালিকা-অনুষ্ঠানে) এই গানটি প্রচারিত হয়। শিল্পী ছিলেন-শৈল দেবী। রাগ-মীনাক্ষি (কবি-সৃষ্ট)। তাল-ত্রিতাল।
      [সূত্র: বেতার জগৎ, ১৬ জানুয়ারি, ১৯৪০ সংখ্যা।]
  • প্রকাশের কালানুক্রমিক সূচি: ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ জানুয়ারি বেতার থেকে (নবরাগমালিকা-অনুষ্ঠানে) এই গানটি প্রথম প্রচারিত হয়। এরপর ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশিত সুনির্বাচিত নজরুল গীতির স্বরলিপি, চতুর্থ খণ্ড (সাহিত্যম্) - স্বরলিপিগ্রন্থে গানটি গৃহিত হয়েছিল। ২০০০ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়রি মাসে প্রকাশিত একশো গানের নজরুল স্বরলিপি, প্রথম খণ্ড (হরফ প্রকাশনী) - স্বরলিপিগ্রন্থে গানটি গৃহিত হয়েছিল। ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশিত নবরাগ (নজরুল ইনস্টিটিউট) - স্বরলিপিগ্রন্থে গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
• খ). সঙ্গীতবিষয়ক তথ্যাবলী:
  • সুরকার: কাজী নজরুল ইসলাম।

  • স্বরলিপিকার:

    • জগৎ ঘটক। [নবরাগ (নজরুল ইনস্টিটিউট। সেপ্টেম্বর ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দ)]

    • জগৎ ঘটক। [নবরাগ (হরফ প্রকাশনী। কবির ৭৩তম জন্মদিন, ১৩৭৯ বঙ্গাব্দ)]

    • কাজী অনিরুদ্ধ। [সুনির্বাচিত নজরুল গীতির স্বরলিপি, চতুর্থ খণ্ড (সাহিত্যম্, আশ্বিন ১৩৮৫‌। সেপ্টেম্বর ১৯৭৮)]

  • রাগ: মীনাক্ষী (নজরুল-সৃষ্ট রাগ)।
  • তাল: ত্রিতাল।
  • গ্রহস্বর: উদারার কোমল নিষাদ।