১৭৪৯
                রাগ: সন্ধ্যামালতী।
                   তাল:সেতারখানি।       

শোন্‌      ও-সন্ধ্যা-মালতী,বালিকা তপতী
         
বেলা  শেষের বাঁশি বাজে,বাজে
         
শোনো মাধবী চাঁদের মধুর মিনতি
            উদাস আকাশ মাঝে

তব       মৌন ব্রত ভাঙ্গো কও কথা কও
মোর      নৃত্য আরতির সঙ্গিনী হও,
            মাধবী হেনা হের এলো বাহিরে-
            রসরাজে হরি' রাস-নৃত্যের সাজে

তুমি       যার লাগি' সারাদিন, বিরহ ধ্যান- লীন একাকিনী কুঞ্জে,
         
হের সে-মাধব, নিশীথের ভ্রমর হয়ে তব পাশে গুঞ্জে। 

          সুন্দর দাঁড়ায়ে তব দ্বারে আঁধারে
            মঞ্জরি-দীপ জ্বালো ডাকো তারে,
            বুকের চন্দন-সুরভি ঢালো-
            পাতার আঁচলে মুখ ঢেকো না লাজে            

ভাবসন্ধান: কবি রাগের নামের সাথে মিল রেখে গানটি রচনা করেছিলেন সন্ধ্যামালতী ফুলকে নিয়ে। কবি সন্ধ্যামালতী ফুলকে ডেকে বলছেন- হে সূর্যকন্যা-রূপী সন্ধ্যামালতী, তুমি বেলা শেষের যে সন্ধ্যামালতী রাগের সুর বাজছে, তা শোনো। মধুক্ষরা চাঁদের মধুর মিনতি যেন উদাস আকাশে ছড়িয়ে পড়ছে। স্তব্ধতা বিসর্জন দিয়ে মুখরিত হয়ে কবির পূজা আরতির সঙ্গিনী হতে- মাধবী, হেনাদের সাথে রাসনৃত্যের অংশভাগী হওয়ার জন্য সন্ধ্যামালতীকে আহ্বান করছেন।

গানটির আভোগীতে এসে, কবি রাধার সাথে সন্ধ্যামালতীকে তুলনা করেছেন। সারাদিন কুঞ্জে একাকিনী রাধার মতো কৃষ্ণের প্রতীক্ষায় থাকে। কিন্তু ভ্রমের ছদ্মবেশে কৃষ্ণ তারে চারদিকে গান গেয়ে গেয়ে ফেরে। কবি তাঁকে তার দলমণ্ডলের প্রদীপ দিয়ে বরণ করার জন্য উৎসাহ দান করে বলছেন। মিলনের লজ্জায় সন্ধ্যামালতীকে পাতার আড়ালে মুখ লুকাতে বারণ করছেন।

গানটিতে পাওয়া যায়, সন্ধ্যমালতীর বন্দনার ভিতর দিয়ে রাগের বিমূর্ত সৌন্দর্য-সন্দর্শনের সাধনা। তাই বাণীর চেয়ে এই গানের সুরবিন্যাসের প্রকৃতি অণ্বেষণটাই বড় হয়ে ওঠেছে।

১. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ (নজরুল ইন্সটিটিউট,মাঘ,১৪১৭ /  ফেব্রুয়ারি,২০১৪) নামক গ্রন্থের ৭৪৯সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা:৫২০।
                            নবরাগ,নজরুল-সংগীত স্বরলিপি (নজরুল ইন্সটিটিউট,সেপ্টেম্বর,২০০৫)নামক গ্রন্থের  ৫সংখ্যক গান । পৃষ্ঠা: ১১-১২। 
                            নবরাগমালিকা, ১৬.০১.১৯৪০ রাগ:সন্ধ্যামালতী,তাল: আদ্ধা কাওয়ালী, শিল্পী:গীতা মিত্র(চরিত্র-রূপমঞ্জরী)
                          বেতার জগৎ, ১৬.১.১৯৪০ সংখ্যা।
 
                        নজরুলগীতি-অখণ্ড,হরফ।
                       নজরুল রচনাবলী,তৃতীয় খণ্ড,ঢাকা।

২. রেকর্ড সূত্র: ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে কলম্বিয়া থেকে এই গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশিত হয়। রেকর্ড নম্বর G.E.-2551শিল্পী: শ্রীমতী রাধারাণী।
                       
৩. রচনাকাল: ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে কলম্বিয়া থেকে প্রকাশকালে কাজী নজরুল ইসলামের বয়স ছিল ৪১ বৎসর।

৪. প্রাসঙ্গিক পাঠ: 
                  
                      
৫. সুরকার: কাজী নজরুল ইসলাম।
                                                                      
৬. স্বরলিপিকার: জগৎ ঘটক।
নবরাগ,নজরুল-সংগীত স্বরলিপি (নজরুল ইন্সটিটিউট,সেপ্টেম্বর,২০০৫)

৭. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী:
    গ্রহস্বর :
সা।
    পর্যায় :
াগ প্রধান।
     তাল :
সেতারখানি।
     রাগ: 
নির্ঝরিণী।