সিলেটের গণহত্যা ও ধর্ষণ
১৮ এপ্রিল ১৯৭১ (রবিবার, ৪ বৈশাখ ১৩৭৮)

১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ এপ্রিল (রবিবার, ৪ বৈশাখ ১৩৭৮), পাকিস্তানি সৈন্যরা সিলেট শহরের তারাপুর চা বাগানে গণহত্যা চালায়। এই চা বাগানের মালিক ছিলেন রাজেন্দ্র গুপ্ত।

উল্লেখ্য, ১৮ তারিখের কয়েকদিন আগে পাকিস্তানি সৈন্যরা রাজেন্দ্র গুপ্ত বাসভবনে এসে দেখা করে জানতে চায় যে, তার কাছে কোন বন্দুক আছে কি না। উত্তরে রাজেন্দ্র গুপ্ত বন্দুক আছে জানালে, সৈন্যরা বন্দুকটি সে বন্দুকটি নিয়ে যায়। গেই সময় এরা বলে যায় যে, মুক্তিবাহিনীর লোক এলে তাদের যেনো খবর দেওয়া হয়।

১৮ই এপ্রিলে পাকিস্তানি সৈন্যতা আবারও আসে। এবার এসে সবাইকে “ডান্ডি কার্ড” (আইডেন্টিটি কার্ড) দেয়ার কথা বলে সবাইকে একত্রিত করে। গুপ্ত পরিবারের সকল পুরুষ, বাগানের কর্মাচারী ও শ্রমিকদেরকে জড়ো করা হয় গুপ্ত বাবুর বাড়িতে। কার্ড ইস্যু করার জন্যে এদের সবাইকে নিয়ে সিলেট রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল (ক্যাডেট কলেজ) এর দিকে মালনী ছড়া হয়ে রওয়ানা দেয়। যাওয়ার সময় গুপ্ত বাবু বললনে, “সব পুরুষকে ধরে নিয়ে গেলে মেয়েরা ভয় পাবে। একজন পুরুষ মানুষকে থাকার অনুমতি দিলে ভালো হয়।” তাই ছোট ছেলে পঙ্কজ কুমার গুপ্তকে বাড়িতে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়। মালনীছড়া টিলার কাছে পাকিস্তানিরা সৈন্যরা সবাইকে গুলি করে। এর ভিতরে সদানন্দ ও গনেশ হালদার নামক দুই শ্রমিক সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যায়। এরা পরে ফিরে এসে এই গণহত্যার কথা জানায়। পরে এদের লাশ অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়।

পুনরায় পাকিস্তানি সৈন্যরা এসে, পিতার লাশ দেখাতে রাজেন্দ্র গুপ্তের তিন মেয়েকে বলে। এরা রাজি না হলে জোর করে নিয়ে এদের নিয়ে যায়। পরে এই তিন বোনকে ধর্ষণ করে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে যায়।

এরপর এই চা-বাগানের এই পরিবারের উপর দ্বিতীয়বার আক্রমণ হয় ১লা মে।
        [বিস্তারিত: ১লা মে]