বরেন্দ্র বিদ্রোহ
এই বিদ্রোহের নেতৃত্ব লাভ করেছিলেন কৈবর্ত-নায়ক দিব্য। এই কারণে, একে অনেকে
কৈবর্ত বিদ্রোহও বলে থাকেন।
পাল বংশীয় রাজত্বের রাজা দ্বিতীয় রামপাল-এর রাজত্বের শেষের দিকে বরেন্দ্র অঞ্চলে
এই বিদ্রোহ ঘটে।
পাল রাজবংশের
দ্বাদশ
রাজা
দ্বিতীয় মহীপাল (১০৭২-১০৭৫
খ্রিষ্টাব্দ) ১৭৭২ খ্রিষ্টাব্দে পাল সাম্রাজ্যের রাজা হওয়ার
রাজ্যের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হন। ফলে প্রজা অসন্তোষ তীব্র আকার ধারণ করে।
এরই ভিতরে তিনি কুচক্রীদের পরামর্শক্রমে তাঁর অপর দুই ভাই শূরপাল এবং রামপালকে
কারারুদ্ধ করেন। এর ফলে বরেন্দ্র অঞ্চলের সামন্তরা প্রকাশ্যে বিদ্রোহ ঘোষণা করে।
মহীপাল এই বিদ্রোহ দমন করার জন্য সামন্তদের বিরুদ্ধে অভিযান চালান। শেষ পর্যন্ত
তিনি বিদ্রোহীদের হাতে নিহত হন। এই সুযোগে বরেন্দ্র অঞ্চলের উচ্চাভিলাসী দিব্য
কৈবর্ত বরেন্দ্রভূমিতে একটি স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। এই বরেন্দ্র অঞ্চলের
সামন্তদের এই বিদ্রোহকে বরেন্দ্র বিদ্রোহ নামে অভিহিত করা হয়।
দ্বিতীয় মহীপালের রাজ্য ও প্রাণ হারানোর পর,
সুযোগে বরেন্দ্র অঞ্চলের উচ্চাভিলাষী
কৈবর্ত -দিব্য
বরেন্দ্রভূমিতে একটি স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর কিছুদিন দিব্য বরেন্দ্র
অঞ্চলে রাজত্ব করেন। এরপর পালরাজবংশের পঞ্চদশ রাজা
রামপাল (১০৭৭-১১৩০ খ্রিষ্টাব্দ), সামন্তদের সহায়তায় একটি বিশাল সেনাবাহিনী তৈরি
করে, দিব্যকে আক্রমণ করার প্রস্তুতি নেন। কিন্তু যুদ্ধের আগেই দিব্য মৃত্যুবরণ
করলে, রামপাল ভীমের
বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এই যুদ্ধে ভীম পরাজিত ও বন্দী হয়। পরে তাঁকে সপরিবারে
হত্যা করা হয়। এর ভিতর দিয়েই বরেন্দ্র বিদ্রোহ-এর সমাপ্তি হয়।
সূত্র :
বাংলাদেশের
ইতিহাস/রমেশচন্দ্র মজুমদার।
ভারতের ইতিহাস । অতুলচন্দ্র রায়, প্রণবকুমার চট্টোপাধ্যায়।