একডালা দুর্গ
বাংলাদেশের বর্তমান গাজীপুর জেলার অন্তর্গত কাপাসিয়া উপজেলার অন্তর্গত একটি স্থান। বর্তমান উপজেলা থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে
বানার, শীতলক্ষ্যা এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিমে, আনুমানিক ৬০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে জনৈক হিন্দু রাজা এই দুর্গটি নির্মাণ করেছিলেন। দুর্গটির দৈর্ঘ্য ছিল ৫ কিলোমিটার আর প্রস্থে ছিল ২ কিলোমিটার।

ইলিয়াস শাহ বাংলার স্বাধীন সুলতান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পর, দিল্লীর সুলতান ফিরোজ তুঘলকের সাম্ভাব্য আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ১৩৫২ খ্রিষ্টাব্দের দিকে দুর্গটির সংস্কার সম্পন্ন করেন। ১৩৫৩ খ্রিষ্টাব্দে  ফিরোজ তুঘলক বাংলা আক্রমণ করলে, ইলিয়াস শাহ  কোনো বাধা না দিয়ে এই দুর্গে আশ্রয় নেন। এই সময় বাংলার রাজধানী ফিরোজ তুঘলক করলেও একাডালা দুর্গ দখল করতে পারেন নি। কয়েক মাস অবরুদ্ধ থাকার পর, উভয় বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ হলে, বাংলার সৈন্যরা পরাজিত হয়, কিন্তু তখনও একডালা দুর্গ অপরাজেয় ছিল। অবশেষে হতাশ হয়ে ফিরোজ শাহ দিল্লী ফিরে যান। পরে উভয়ের ভিতরে শান্তি স্থাপিত হয়।

১৩৫৭ খ্রিষ্টাব্দে ইলিয়াস শাহ মৃত্যুবরণ করলে, বাংলার সিংহাসনে বসেন সিকান্দার শাহইলিয়াস শাহ-এর মৃত্যুর পর, এর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য, ফিরোজ তুঘলোক পুনরায় বাংলা আক্রমণ করেন। এবারও পিতার মতো সিকান্দার শাহ একডালা দুর্গে আশ্রয় নেন। কয়েকমাস এই দুর্গ অবরোধ করে রাখার পর ফিরোজ তুঘলক সন্ধি করেন। এরপর ফিরোজ তুঘলক বাংলার স্বাধীনতা মেনে নিয়ে দিল্লীতে ফিরে যান।

এরপর ১৫১৮ খ্রিষ্টাব্দ হতে ১৫৩২ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে আলাউদ্দিন হোসেন শাহের পুত্র নাসির উদ্দিন শাহ পুনরায় দুর্গটি সংস্কার করেন। রায়েদ ইউনিয়নে কালী বানার নদীর পূর্ব তীরে অবস্থিত দ্বার-ই দরিয়া (দরদরিয়া) দুর্গ ছিল একডালা দুর্গের শাখা দুর্গ। মোগল সম্রাট আকবরের সময়ে রাজা টোডরমল এ অঞ্চলকে ভাওয়াল পরগণায় অন্তর্ভুক্ত করেন। ক্রমে ক্রমে এই দুর্গটি পরিত্যাক্ত হয়।