খলজিবংশীয় শাসন দিল্লী
১২৯০-৯৬ খ্রিষ্টাব্দ
১২৮৭ খ্রিষ্টাব্দে আদি তুর্কি শাসনের শক্তিশালী সুলতান গিয়াসউদ্দিন বলবন মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর আগে তিনি তাঁর দ্বিতীয় পুত্র বঘরা খাঁকে তাঁর উত্তরাধিকারী মনোনীত করেন। কিন্তু বঘরা খাঁ এই দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করলে, সুলতান মাহমুদের পুত্র কাইখুস্রুকে উত্তরাধিকারী মনোনীত করে যান। কিন্তু গিয়াসউদ্দিন বলবন-এর মৃত্যুর পর, আমিররা কাইখুস্রুকে বাতিল করে বঘরা খাঁ'র পুত্র কায়কোবাদকে সিংহাসনে বসান। কায়কোবাদ ১৮ বৎসর বয়সে রাজত্ব লাভ করেন। তিনি রাজ্য চালনায় অনভিজ্ঞ ছিলেন এবং ইন্দ্রিয়পরায়ণ ছিলেন। ফলে কেন্দ্রীয় শাসন ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে। এই সময় তুর্কি এবং খলজিদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এই দ্বন্দ্বে তুর্কিরা পরাজিত হলে, খলজিরা ক্ষমতা দখল করে। এরা কাবকোবাদকে হত্যা করে এবং তাঁর শিশুপুত্র কায়ুমার্সকে কারাগারে নিক্ষেপ করে। ১২৯০ খ্রিষ্টাব্দে খলজি নেতা জালালউদ্দিন নিজেকে সুলতান হিসেবে ঘোষণা দেন। জালালউদ্দিনের সূত্রে দিল্লীতে খলজি বংশের রাজত্ব শুরু হয়।
ঐতিহাসিক নিজামউদ্দিন-এর মতে, খলজিরা ছিলেন চেঙ্গিশ খাঁর জামাতা কুলিজ খাঁর বংশধর। কুলিজ খাঁর নামানুসারে কালিজ বা খালিজ নামটির সৃষ্টি হয়। ১১৭৫ খ্রিষ্টাব্দের দিকে মুহম্মদ ঘোরী'র ভারত আক্রমণের সময় এরা ভারতবর্ষে এসেছিল। এই বিচারে জালালউদ্দিন এবং তাঁর বংশধরেরাও তুর্কি বংশোদ্ভুত ছিলেন।
খলজি বংশীয় দিল্লীর শাসকদের তালিকা
সূত্র :
ভারতের ইতিহাস । অতুলচন্দ্র রায়, প্রণবকুমার চট্টোপাধ্যায়।