আদিতমারী (উপজেলা)
লালমনির হাট জেলার একটি উপজেলা। এর মোট আয়তন
১৯৫.০৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°৫১´ থেকে ২৬°০৩´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°১৭´ থেকে
৮৯°২৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। এর উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য, দক্ষিণে গঙ্গাচড়া
উপজেলা ও লালমনিরহাট সদর উপজেলা, পূর্বে লালমনিরহাট সদর উপজেলা, পশ্চিমে কালীগঞ্জ
(লালমনিরহাট) উপজেলা।
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের আগে এই অঞ্চলটি অন্যান্য সাধারণ গ্রামের মতোই ছিল।
প্রশাসনিক সুবিধার জন্য, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ১৭৬৯ খ্রিষ্টাব্দে
রংপুর কালেক্টরেট
প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৭৭২ খ্রিষ্টাব্দে আনুমানিক ২৫০০ বর্গ মাইল এলাকা নিয়ে রংপুর জেলা
প্রতিষ্ঠিত হয়। রংপুর কালেক্টরের অধীনে প্রতিষ্ঠিত একটি থানা
ছিল ফুরুনবাড়ি। ১৮৭২ খ্রিষ্টাব্দে এই থানা কালীগঞ্জে স্থানান্তরিত হয়। ১৯৮০
খ্রিষ্টাব্দে কালীগঞ্জ থানার অংশ নিয়ে আদিতমারী থানা গঠিত হয়। ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দের
৭ নভেম্বর আদিতমারী থানা উপজেলায় রূপান্তরিত হয়।
বর্তমানে এই জেলার ইউনিয়ন সংখ্যা ৮টি। এগুলো হলো—
দূর্গাপুর, ভেলাবাড়ী, কমলাবাড়ী, সারপুকুর, সাপ্টিবাড়ী, ভাদাই, পলাশী ও মহিষখোচা।
উল্লেখযোগ্য নদীগুলো হলো- তিস্তা ও রত্নাই ও গিরিধারী।
এই উপজেলা চাষাবাদ পদ্ধতি প্রধানতঃ বৃষ্টি নির্ভর হলেও—
গভীর নলকূপ, অগভীর নলকূপ, পাওয়ার পাম্প ও অন্যান্য সেচ যন্ত্রের সাহায্যে প্রায়
৫,৪৮৩ হেক্টর জমিতে চাষ দিয়ে আবাদ করা হয়। সেচকৃত ফসলের মধ্যেই বোরই প্রধান। তবে
বর্তমানে সেচের সাহায্যে ধান,পাট, গম, আলু, ভুট্টা, শাকসব্জি, মরিচ, পিঁয়াজ প্রভৃতি
আবাদ হয়ে থাকে। প্রধান ফল-ফলাদি কাঁঠাল, সুপারি, আম, লিচু, জাম্বুরা, নারিকেল।
মুক্তিযুদ্ধের সময় এ উপজেলাটি ৬ নম্বর সেক্টরের অধীন ছিল। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৪ঠা
এপ্রিল পাকবাহিনী আদিতমারীতে অতর্কিত আক্রমণ করে এবং ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগসহ ব্যাপক
ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। এ সময় পাকবাহিনী বেশ সংখ্যক নিরীহ লোককে আদিতমারী রেল-স্টেশনের
পূর্ব দিক লালপুলে নির্মমভাবে হত্যা করে। ৬ই ডিসেম্বর এ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।
সূত্র :