ইস্রায়েলের পতাকা |
ভৌগোলিক অবস্থান: ৩১°
উত্তর ৩৫° পূর্ব। এর উত্তরে লেবানন; পূর্বে উত্তর-পূর্বে সিরিয়া; পূর্বে জর্দান,
ফিলিস্তিনি অধ্যুষিত অঞ্চল; পশ্চিমে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড, ও গাজা উপত্যাকা;
দক্ষিণ-পশ্চিমে মিশর।
আয়তন: ২০,৭৭০-২২, ০৭২ বর্গকিলোমিটার
জনসংখ্যা: ৮৮,৬৯,০২০ (২০১৯ খ্রিষ্টাব্দ)
উল্লেখযোগ্য জাতিগোষ্ঠী: মেস্টিজো ৬৫%, স্থানীয় পানামানিয়ান ১২.৩ %, আফ্রো
পানামানিয়ান ৯.২%।
ভাষা: হিব্রু, আরবি
ধর্ম: ইহুদি ৭৪.৭%, ১৭.৭% মুসলমান, ২.০% খ্রিষ্টান, ১.৬ দ্রুজ এবং
অন্যান্য ৪%
মুদ্রা: নিউ সেকেল।
ইতিহাস
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তুর্কি ওসমানীয়
সাম্রাজ্যের পতনের পর ফিলিস্তিনসহ বেশির ভাগ আরব এলাকা চলে যায় ইংল্যান্ড-ফ্রান্সের
ম্যান্ডেটে। ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের ২রা নভেম্বর ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্থার জেমস
বালফোর ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে একটি ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা করেন। এ ঘোষণার পর
ইউরোপ থেকে বিপুলসংখ্যক ইহুদি ফিলিস্তিনে এসে বসতি স্থাপন করা শুরু করে। ১৯১৯
খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ফিলিস্তিনে ইহুদিদের সংখ্যা ছিল মাত্র কয়েক হাজার।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর তুর্কি অটোম্যান সাম্রাজ্য দুর্বল হয়ে পড়ে। ১৯২৩
খ্রিষ্টাব্দে অটোম্যান সাম্রাজ্যের কেন্দ্রীয় শক্তি নতুন ভাবে তুরস্ক নামে স্বাধীন
রাষ্ট্রে পরিণত হয়। এই সময় ইহুদি নেতারা নিজেদের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবী
তোলে। এই সময় ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানী, নরওয়ে, পোল্যান্ড, গ্রীস এবং
সুইজাল্যান্ডে বসবাসকারী ইহুদীদেরকে, ফিলিস্তিনে বসতি গড়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয়।
১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে ইহুদীরা 'হাগানাহ' নামের এক জঙ্গি বাহিনী তৈরি করে।
এ বাহিনী ইহুদীবাদীদের রাষ্ট্র তৈরির কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রথমে
ফিলিস্তিনী জনগণের বিরুদ্ধে ইহুদীবাদীদের সহায়তা করা হাগানাহ বাহিনীর দায়িত্ব
হলেও পরবর্তীকালে তারা আধা-সামরিক বাহিনীতে পরিণত হয় এবং স্বাধীনতার পরে এই বাহিনী
ইসরায়েলের মূল সামরিক বাহিনী গঠন করে ও বিভিন্ন জঙ্গি তৎপরতায় সাহায্য করে।
এই সূত্রে ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দের দিকে ফিলিস্তিনে ইহুদিদের সংখ্যা পৌঁছে যায় ৩৫
হাজারে। এরপর ইহুদিরা নিজেদের নতন বাস্থস্থানের স্বপ্ন নিয়ে ফিলিস্তিনে স্থায়ীভাবে
বসবাস করতে থেকে। ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে ফিলিস্তিনে ইহিদির সংখ্যা বেড়ে এক লাখ ৮০
হাজারে পৌঁছে। আর ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দের দিকে এই অঞ্চলে ইহুদির সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায়
আড়াই লাখ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে ইউরোপ থেকে আরো ইহুদী ফিলিস্তিনে আসে।
এদের একটি বিরাট অংশ হাগানাহ-সহ অন্যান্য বাহিনীতে যোগদান করে।
আর ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে সেখানে ইহুদিদের সংখ্যা ছয় লাখে উন্নীত হয়। এই বছরেই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডকে দ্বিখণ্ডিতকরণ
সংক্রান্ত ১৮১ নম্বর প্রস্তাব গৃহীত হয়। জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে ৪৫ শতাংশ
এবং বাকি ৫৫ শতাংশ ভূমি ইহুদিবাদীদের দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এই বছরের ১৪ই মে
১৯৪৮ ইসরায়েল স্বাধীনতা ঘোষণা করে।
তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন ইসরায়েলকে প্রথম স্বীকৃতি দেয় ১৪ই মে।
ড্যাভিড বেন গুরিয়ন ইসরায়েলের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ
করেন।