দেশী শব্দ
তৎসম, অর্ধ-তৎসম এবং
তদ্ভব শব্দগুলো বাদ দিলে দেখা যায়, আদি বাংলায় বেশকিছু স্থানীয় অনার্য বা
অনার্যজাত শব্দ বাংলা শব্দভাণ্ডারে যুক্ত হয়েছে। ১২০০ খ্রিষ্টাব্দের পূর্বে
ভারতবর্ষের স্থানীয় অস্ট্রিক ভাষাগোষ্ঠীর শব্দ এবং স্থানীয় অন্যান্য শব্দ বাংলা
ভাষার শব্দভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছিল। ১২০০ খ্রিষ্টাব্দের পর থেকে মুসলমানদের দ্বারা
আরবি, ফারসি শব্দ বাংলা শব্দভাণ্ডারে যুক্ত হতে থাকে। ভারতবর্ষের বাইরে ভাষা
থেকে আগত যে কোনো শব্দকে বিদেশী বলা হয়। এছাড়া হিন্দি, গুজরাটি ইত্যাদি
ভারতবর্ষের অন্যান্য ভাষা থেকেও অনেক শব্দ বাংলা ভাষায় প্রবেশ করেছে। এসকল শব্দকেও
বর্তমানে দেশী শব্দ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এছাড়া বিদেশী ভাষার প্রভাবে বা বাঙালির
সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সূত্রে সৃষ্ট শব্দগুলোকেও দেশী বলা যায়। এই বিচারে তৎসম,
অর্ধ-তৎসম, তদ্ভব এবং বিদেশী শব্দ ছাড়া সকল শব্দই দেশী শব্দ ও নব্যসৃষ্ট শব্দকে
দেশী শব্দ বলা। দেশী শব্দের উৎস হিসেবে একে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়
- অষ্ট্রিক ভাষাগোষ্ঠীর শব্দ:
- ভারতবর্ষের অন্যান্য প্রাদেশিক ভাষা থেকে আগত শব্দ
- নব্যসৃষ্ট শব্দ: বিদেশী ভাষার
প্রভাবে বা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সূত্রে সৃষ্ট দেশী শব্দ। যেমন-
-
অআকখ
: বাংলা বর্ণমালার প্রথম চারটি বর্ণ দিয়ে এই শব্দটি তৈরি হয়েছে। এর অর্থ
হলো- প্রাথমিক জ্ঞান। যেমন সে অঙ্কের অআকখ-ই জানে না। শব্দটি হয়তো প্রথম
দিকে প্রাথমিক জ্ঞান অর্থে ইংরেজি
ABC
শব্দের অনুকরণে সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু কৃতঋণ শব্দ হিসেবে
ABC
শব্দটি গৃহীত হয় নি। তাই ভাবের দিক থেকে বিদেশী হলেও শব্দের গঠন অনুসারে
দেশী।
-
বাসস: বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা। এই জাতীয় শব্দকে বলা হয় মুণ্ডমাল। একাধিক
শব্দ দিয়ে গঠিত নামবাচক গুচ্ছপদকে দ্রুত প্রকাশ করার জন্য প্রতিটি শব্দের
আদ্যাক্ষর নিয়ে প্রতীকী শব্দে পরিণত করা হয়। এই রীতিতে শব্দ গঠনের বিষয়টি
পাওয়া যায় পাশ্চাত্য ভাষাগুলোতে। বাংলাতে এই জাতীয় শব্দের সৃষ্টি হয়েছিল
ইংরেজি ভাষার অনুকরণে।
্য
প্রত্যয়িত বিশেষণ
প্রত্যয়ী বিশেষণ