১. গায়ত্রী: ২৪ অক্ষর বিশিষ্ট ছন্দ।ঋকবেদের প্রথম মণ্ডলের প্রথম সূক্তটি রচনা করেছিলেন বিশ্বামিত্রের পুত্র মধুচ্ছন্দা। এই সূক্তটির ছন্দ 'গায়ত্রী'। গায়ত্রীকে বৈদিক ছন্দের আদি ছন্দ হিসেবে বিবেচনা করা আরও একটি কারণে। গায়ত্রীর অক্ষর সংখ্যা ২৪টি। এর সাথে ৪টি অক্ষর যুক্ত করলে হয় উষ্ণিক। এই সূত্র ধরে অন্যান্য ছন্দের অক্ষর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
২. উষ্ণিক: ২৮ অক্ষর বিশিষ্ট ছন্দ।
৩. অনুষ্টুপ্: ৩২ অক্ষরবিশিষ্ট ছন্দ।
৪. বৃহতী: ৩৬ অক্ষরবিশিষ্ট ছন্দ।
৫. পঙক্তি: ৪০ অক্ষরবিশিষ্ট ছন্দ।
৬. ত্রিষ্টুপ্: ৪৪ অক্ষরবিশিষ্ট ছন্দ।
৭. জগতী: ৪৮ অক্ষরবিশিষ্ট ছন্দ।
১. স্বানুস্বারশ্চ অর্থাৎ অনুস্বারযুক্ত বর্ণ গুরু হয়। যেমন: কং, খং, গং। [২ মাত্রা হবে]সংস্কৃতি ছন্দে তিনটি অক্ষর মিলে তৈরি একটি গণ। মাত্রাগত বিন্যাসে গুরু অক্ষর হবে দুই মাত্রা বিশিষ্ট আর লঘু অক্ষর্ হবে এক মাত্রা বিশিষ্ট। লঘু ও গুরুর বিচারে এই গণের অক্ষর সংখ্যা সমান হলেও মাত্রাগত মানে হেরফের হয়ে থাকে। এই মানের বিচারে গণ হতে পারে ৮ প্রকার। এই গণগুলো হলো-
২. দীর্ঘশ্চ: অর্থাৎ দীর্ঘস্বরযুক্তবর্ণ(আ,ঈ,ঊ,এ,ঐ,ও,ঔ, ৠ) গুরু হয়। [২ মাত্রা হবে]
৩. বিসর্গী চ: অর্থাৎ বিসর্গযুক্ত বর্ণ গুরু হয়। যেমন- কঃ খঃ গঃ [২ মাত্রা হবে]
৪. বর্ণঃ সংযোগপূর্বশ্চ- অর্থাৎ সংযুক্ত বর্ণের পূর্ববর্ণ গুরু হয়। যেমন- যেমন- বন্ধ। এখানে যুক্ত বর্ণ ন্ধ, তাই পূর্বের বর্ণ 'ব' হবে গুরু। কিন্তু যুক্তবর্ণ নিজে হবে লঘু) [১ মাত্রা হবে]
৫. পদান্তগঃ: অর্থাৎ চরণের শেষ বর্ণটি লঘু হলেও তা গুরু হবে। চরণের শেষে ম্ থাকিলে তার আগের বর্ণটিকে নিয়ে গুরু করতে হবে।
চারটি গণ মিলে তৈরি হয় একটি চরণ। যেমন-
তোটক ছন্দ। এর
চরণ গঠিত হয়েছে চারটি গণ দ্বারা। এই গণগুলো হলো- স স স স। এই চরণের স-গণের মান
হলো লঘু লঘু গুরু। অর্থাৎ ১+ ১+ ২= ৪ মাত্রা। সব মিলিয়ে তৌটকের মাত্রা সংখ্যা
হবে ১২টি।
ছন্দোমঞ্জরী ১২তম বৃত্তির ৬ষ্ঠ ছন্দ (পৃষ্ঠা ৪২) হিসেবে তোটক ছন্দের যে নমুনা
দেওয়া হয়েছে, তাহলো-
যমুনাতটমচ্যুতকেলিকলা-
লসদঙ্ঘ্রিসরোরুহসঙ্গরুচিম্।
প্রথম গণ- স: যমুনা= ১+১+২
দ্বিতীয় গণ-স: তটম=১+১+২। এখানে ম ধ্বনির পরে রয়েছে 'চ্যু'। এই
যুক্তবর্ণের কারণে পূর্-বর্ণ 'ম' দুই মাত্রা হয়েছে।
তৃতীয় গণ স: চ্যুতকে=১+১+২
চতুর্থ গণ স: লিকলা=১+১+২
এই বিচারে তোটকের অক্ষর সংখ্যা হবে ১২টি। কিন্তু মাত্রা সংখ্যা হবে ১৬টি। যেহেতু
তোটক বৃ্ত্তি ছন্দ। তাই এর পরিচয়ে বলা হয় ১২ অক্ষরের ছন্দ।
বৃত্তছন্দ তিন প্রকার। এগুলো হলো
১. সমবৃত্ত ছন্দ: 'সমং সমচতুষ্পাদং'। যে ছন্দের চারটি চরণের অক্ষর সংখ্যা সমান হয়। যেমন: ইন্দ্রবজ্রা
২. অর্ধ-সমবৃত্তছন্দ: 'ভবত্যধর্মসমং পুনঃ। যে ছন্দে প্রথম চরণের সঙ্গে তৃতীয় চরণের অক্ষর সংখ্যা এবং দ্বিতীয় চরণের সঙ্গে চতুর্থ চরণের অক্ষর সংখ্যা সমান হয়। যেমন- পুষ্পিতাগ্রা।
৩. বিষমবৃত্তছন্দ: 'ভিন্নচিহ্ন চতুষ্পাদং বিষমং পরিকীর্তিতম্। যে ছন্দে চারটি চরণের অক্ষর সংখ্যা আলাদা আলাদা হয়, যেমন- উদগ্রাতা।
প্রাচীন ধ্রুবাগানে সংস্কৃত ছন্দের উপর ভিত্তি করে তাল নিরূপণ করা হতো। যেমন-