আত্মবাচক সর্বনাম
সর্বনাম
আত্মবাচক (Reflexive) সর্বনাম : এই জাতীয় সর্বনামে কর্তা নিজেই কর্মের অধীনে চলে যায়। ব্যক্তিবাচক সর্বনামের ক্ষেত্রে আমরা দেখি কর্তা কাজ করে বা করায়, কিন্তু নিজেকে সুদৃঢ়ভাবে কর্মের ভিতর বিলীন করে দেয় না। এই সুদৃঢ় আত্মনিয়োগের সূত্রে প্রাপ্ত সর্বনামই হলো- আত্মবাচক সর্বনাম এবং তা সব সময় কোনো ব্যাক্তিবাচক সর্বনামকে অনুসরণ করে। এই জাতীয় সর্বনামগুলো হলো- আপনা, আপনা-আপনি, আপনারি, আপনি, আপনিই, খোদ, নিজ, নিজে, নিজে নিজে, স্বয়ং।
ব্যাখ্যা :
ক।
আত্মবাচক (প্রত্যক্ষ)
: আত্মবাচক সর্বনাম
সুদৃঢ়ভাবকে প্রকাশ করে।
ধরা যাক,
কোনো ব্যক্তি যদি বলেন-
‘আমি অফিস করি’।
এখানে ‘আমি’
ব্যক্তিবাচক সর্বনাম।
এখানে আমরা বুঝি যে
কর্তার অফিসের কাজ অন্য কেউ করে না বা কর্তা অফিসের কাজ অন্য কাউকে দিয়ে করায় না।
কিন্তু এই বাক্যটি যদি
কেউ বলেন- ‘আমি নিজেই
অফিস করি’।
এক্ষত্রে ‘নিজেই’
শব্দের দ্বারা কর্তা
প্রত্যক্ষভাবে কাজের সাথে সম্পৃক্ত হয় এবং
ওই ভাবকে সুদৃঢ়ভাবে প্রকাশ করে
মাত্র।
এই অর্থে
এখানে ‘নিজেই’ শব্দের পদ-নির্দেশ হবে-
নিজেই সর্বনাম {আত্মবাচক (প্রত্যক্ষ)}
আত্মবাচক সর্বনাম কোন না কোন
ক্ষেত্রে কর্তাকে
আড়ালে রেখে তার প্রতিনিধি হিসাবে উপস্থাপিত হতে পারে।
যেমন-
আমি স্বয়ং এই কাজটি করেছি।
এখানে ‘আমি’
ব্যক্তিবাচ্য, একে
অনুসরণ করেছে স্বয়ং।
যদি বাক্যটি 'স্বয়ং এই
কাজটি করেছি'
হিসাবে উপস্থাপিত হয়, তা হলে-এখানে
‘আমি’
ব্যক্তিবাচ্য উহ্য অবস্থায়
থাকে।
খ। আত্মবাচক (স্ব-সিদ্ধ): কোনো কোনো ক্ষেত্রে কর্তা নিজেই ক্রিয়ার অংশ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে আত্মবাচক সর্বনাম অনিবার্যভাবে সক্রিয় হয়ে উঠে। যেমন- কাজটি আপনিই শেষ হয়ে গেল। এক্ষেত্রে কাজটির আত্মবাচক সর্বনাম হলো আপনিই। এবং তা সম্পন্ন হয় নিজে নিজেই। এই কারণে এই জাতীয় সর্বনাম হবে আত্মবাচক (স্ব-সিদ্ধ)।
গ। দুটি শব্দের পুনঃপুনঃ ব্যবহারের দ্বারা যখন আত্মবাচক সর্বনাম গঠিত হয়, তখন তাকে আত্মবাচক ব্যতিহারিক সর্বনাম বলা হয়। যেমন-আপনা-আপনি, নিজে নিজে।
আপনা-আপনি সর্বনাম {আত্মবাচক (ব্যতিহার)}