অনির্দিষ্টতাজ্ঞাপক (indefinte)
সর্বনাম
সর্বনাম
: যে সর্বনাম দ্বারা কোন সুনির্দিষ্ট দিকের পরিবর্তে অনির্দিষ্ট দিককে নিদের্শিত করে, তাদেরকে অনির্দিষ্টতাজ্ঞাপক সর্বনাম বলে। যেমন- কে, কার, কিছু, কেউ, কেহ, কোন।
ব্যাখ্যা : এই সর্বনাম অনির্দিষ্টদিকের বিষয় প্রকাশ করে বলেই এর নাম অনির্দিষ্টতাজ্ঞাপক। এই সর্বনামের একক বিষয়ের ক্ষেত্রে একটি সর্বনাম দিয়েই প্রকাশ করা যায়। যেমন-
কে আসবে না আসবে, আমি তার কিছু জানি না।
কিন্তু বিষয়টি যখন একাধিক ভাব প্রকাশ করে, তখন একই সর্বনাম দুইবার ব্যবহার করা হয়। যেমন-কেকে, কার কার, কিছু কিছু, কেউ কেউ। আগের বাক্যকে যদি একাধিক ব্যক্তির উদ্দেশ্যে বলা যায়, তা হলে- বিষয়টি দাঁড়ায়-
কে কে আসবে না আসবে, আমি তার কিছু জানি না।
এই ‘কে কে’ -কে বহুবচন বলা ঠিক হবে না, কারণ এখানে কে-এর সম্মিলিত অর্থ ‘কে কে’ দ্বারা প্রকাশ পায় না। এই কারণে, এই জাতীয় শব্দগুলোকে ব্যতিহারিক হিসাবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
সাপেক্ষ (relative) সর্বনাম
যে সকল সর্বনাম দ্বারা একটি বাক্যের সাপেক্ষে অন্য বাক্যকে যুক্ত করা হয়, তাদেরকে সাপেক্ষ সর্বনাম বলা হয়। যেমন- যে, যিনি, যাঁহারা, যারা, যাহারা।
ব্যাখ্যা : এই সর্বনাম মূলত বাক্যাংশকে যুক্ত করে। ফলে এর বৈশিষ্ট্য দাঁড়ায় অনেকটা সংযোজক অব্যয়ের মতো। যেমন-এই সেই লোক, যে গতকাল এখানে এসেছিল।
এই জাতীয় সর্বনাম ব্যক্তির ক্ষেত্রে একবচন বা বহুবচন হতে পারে। অন্যক্ষেত্রে বহুবচন হয় না। যেমন-
একবচন বহুবচন
ব্যক্তির ক্ষেত্রে যে যারা যাহারা (সাধুরীতি)
সাধারণ যিনি যাঁরা যাঁহারা
(সাধুরীতি)
অন্যক্ষেত্রে
যা, যিনি,
তত,
যেই,
সেই।
অন্যাদিবাচক (denoting other) সর্বনাম
যে সকল সর্বনাম দ্বারা অন্য, অপর, ভিন্ন, অসদৃশ্য, অন্যপ্রকার, অধিক ইত্যাদি নির্দেশিত হয়, সে সকল সর্বনামকে অন্যাদিবাচক সর্বনাম বলা হয়। যেমন- অন্য, অপর, ভিন্ন।
ব্যাখ্যা : এখানে অন্যাদি বলতে অন্য এবং এই জাতীয় অর্থে ব্যবহৃত সর্বনাম। সূক্ষ্ণ বিচারে অন্যাদির বিবিধ ধরনের শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। যেমন-
অন্য (ভিন্নতর এ কথা রেখে অন্য কথা বল।
অন্যপ্রকার এটা আগেটার মতো নয়,
অন্য রকম।
অধিক,
আরও এছাড়াও অন্য কথা আছে।
যৌগিক (compound) সর্বনাম
: যখন একাধিক শব্দ একত্রিত হয়ে একটি সর্বনাম তৈরি করে, তখন, তাকে যৌগিক সর্বনাম তৈরি করে। যেমন- অন্য-কিছু, অন্য-কেউ, আর-কিছু, আর-কেউ, কেউ-না-কেউ, কেউ-বা, যা-কিছু, যা-তা, যে-কেউ, যে-কোন, যে-সে।