সর্বনামধর্মী সর্বনাম
সর্বনাম


কোন কোন শব্দ প্রকৃষ্ট অর্থে সর্বনাম নয়কিন্তু বাক্যের ভিতর তা সর্বনামরূপে ব্যবহৃত হয়এই বিচারে এই জাতীয় সর্বনামকে বিবিধভাগে ভাগ করা যায় যেমন-

  আত্মনির্দেশক সর্বনাম : যখন কোন পদ দ্বারা নিজের, আনুগত্য, পরিচয়, বিনয় ইত্যাদি প্রকাশ করা তখন তাকে আত্মনির্দেশক সর্বনাম বলা হয়এই জাতীয় শব্দগুলো আলো- অধীন, অধম, দাস, দীন, শর্মা, বান্দা, সেবকবাক্যের ভাবগত এই বিচারে এই সর্বনামগুলোকে যে সকল অর্থে ভাগ করা যায়, তা হলো-

            বিনয়বাচক           অধীন=অধীনের বিনীত নিবেদন, এই যে.......
            আনুগত্যবাচক        দাস=আজ্ঞা কর দাসে শাস্তি নরাধমে

            ঔদ্ধত্যবাচক          শর্মা=এ শর্মা কাউকে ভয় পায় না

সমস্যা হলো এই জাতীয় একই সর্বনাম বাক্যভেদে ভিন্ন ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে থাকেতাই এই জাতীয় সর্বনামের সাধারণ উপ-বিভাগ হিসাবে আত্মনির্দেশক সর্বনাম হিসাবেই উল্লেখ করা যেতে পারে

সম্বোধনবাচক সর্বনাম : কোন নামের পরিবর্তে যখন অন্য শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা হয়, তখন তা সম্বোধনবাচক সর্বনামে পরিণত হয় এই জাতীয় সর্বনামের ব্যবহার অসংখ্য এবং বিভিন্ন কার্যকারণে এই জাতীয় সর্বনাম মুখে মুখে তৈরি হতে পারেব্যক্, সম্মান ইত্যাদি অর্থে ব্যবহৃত হতে পারে যেমন-

ব্যঙ্গার্থ : কিরে চোরের ব্যটা, কই যাসএখানে চোরের ব্যাটার একটি নাম আছে, কিন্তু তার নামের পরিবর্তে চোরের ব্যাটা (চোরের ছেলে অর্থে) ব্যবহৃত হয়েছে

সম্মানার্থ :  মুরুব্বী কোথায় চললেন? এখানে সম্মান প্রদর্শনের জন্য- বয়স্ক কোন লোকের নামের  পরিবর্তে মুরুব্বী ব্যবহার করা হয়েছে
বন্ধুত্ব অর্থে : দোস্ত আমার কথা শোনো

এই বিচারে সকল কোন ব্যক্তির মূল নাম ছাড়া অন্য কোনো নামে সম্বোধন করলেই, তা সম্বোধন-বাচক সর্বনামে পরিণত হবে যেমন- স্যার, হুজুর, মা, বাবা, ভাই, ওহে, ওগো ইত্যাদি   

সর্বনামের প্রকরণভেদে কতিপয় বিশেষ সংজ্ঞা

ব্যতিহারিক (mutual) সর্বনাম
একই শব্দের পুনঃপুনঃ ব্যবহার বা আংশিক পরিবর্তন করে যখন কোন সর্বনাম তৈরি হয়, তখন তাকে ব্যতিহারিক সর্বনাম বলা হয় যেমন- আপনা আপনি, কেউ কেউ, নিজে নিজে, আপসেমূলত এই সর্বনামগুলো- পূর্বে বর্ণিত সর্বনামগুলোর রূপান্তর মাত্রতাই একে পৃথক বিভাগ হিসাবে উল্লেখ করার প্রয়োজন পড়ে না


বিশেষিত বা সম্বন্ধবাচক সর্বনাম : কোন সর্বনাম অন্যপদের পূর্বে বসে, উক্ত পদকে বিশেষিত করলে, তাকে বিশেষিত সর্বনাম বলা হয় যেমন- আমার বইএখানে আমার শব্দটি বই শব্দের পূর্বে বসে- বই শব্দটিকে বিশেষিত করেছেএই বিচারে আমার সর্বনামটি বিশেষণধর্মী হয়ে যায় বটে, কিন্তু প্রকৃষ্ট অর্থে বিশেষণ হয় না কারণ আমার শব্দটি মালিককে স্পষ্ট করে, কিন্তু বইয়ের নিজস্ব সত্ত্বাকে বিশেষিত করে না এক্ষেত্রে যদি বলা হতো- আমার লাল বই এক্ষেত্রে রঙ-ধর্মের বিচারে বইয়ের নিজস্ব ধর্ম লাল হতো, কিন্তু এর আগের আমার শব্দটি শুধু এর মালিকানা সত্ত্বকে প্রকাশ করতোতাই এই বাক্যের শব্দ বিশ্লেষণ করলে যা পাওয়া যাবে, তা হলো-

           আমার     সম্বন্ধবাচক সর্বনাম বা বিশেষণধর্মী সর্বনাম
           লাল       বিশেষণ
           বই        বিশেষ্য