তি (ক্তিন্)

সংস্কৃত কৃৎ প্রত্যয় এই প্রত্যয় যুক্ত হওয়ার নির্দেশ বিভিন্ন গ্রন্থে বিভিন্নভাবে দেখা যায়। যেমন
ক.
'ক্তিন্ (ক্তি)' ব্যাকরণ কৌমুদী/ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।
খ.' ক্তি' সরল বাঙ্গালা ভাষার অভিধান/সুবলচন্দ্র মিত্র।
গ. 'তি'- বাঙ্গালা ভাষার অভিধান-জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস।
ঘ. তি (ক্তিন্)। বঙ্গীয় শব্দকোষ। হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বাংলা একাডেমী ব্যবহারিক বাংলা অভিধান।

এই গ্রন্থে এই প্রত্যয়টি য (যৎ) হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে। কারণ এই প্রত্যয়ের এর ক, ই, ন ইৎ হয় এবং তি ক্রিয়ামূলের সাথে যুক্ত হয়। পাণিনি মতে - স্ত্রিয়াং তিন্ (প্রত্যয় নিষ্পন্ন পদ স্ত্রীলিঙ্গ হয়)। এই গ্রন্থে এই প্রত্যয়কে তি (ক্তিন্) হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে।

এর ব্যবহারিক বিধিগুলো নিচে দেওয়া হলো
১. ভাববাচ্যে স্ত্রীলিঙ্গে এই প্রত্যয় ব্যবহৃত হয়।
২. প্রত্যয়ের এর ক, ই, ন ইৎ হয় এবং তি ক্রিয়ামূলের সাথে যুক্ত হয়।
৩. সাধারণত এই প্রত্যয় যুক্ত হলে ক্রিয়ামূলের সাথে তি যুক্ত হয়। যেমন-
              
নী +তি (ক্তিন্) =নীতি।
              
স্মৃ +তি (ক্তিন্) =স্মৃতি।
এই সূত্রে সৃষ্ট শব্দ গুলি হলো-  
কৃ>কৃতি, নী >নীতি, স্মৃ>স্মৃতি

৪. গ্লা, ম্লা, হা প্রভৃতি ক্রিয়ামূলের পরে -তি স্থানে নি হয়। যেমন

               গ্লা +তি (ক্তিন্) =গ্লানি।
               ম্লা +তি (ক্তিন্) =ম্লানি।
               হা +তি (ক্তিন্) =হানি।

৫. যেকল ক্রিয়ামূলের শেষে চ, জ, ধ ইত্যাদি কয়েকটি বর্ণ পরিবর্তিত হয়। যেমন
              চ্>ক        
মুচ্ +তি (ক্তিন্) =মুক্তি।
              জ>ক       
ভজ+তি (ক্তিন্) =ভক্তি। এরূপ যুজ>যুক্তি  [সৃজ্ ধাতুর সাথে যুক্ত হয়ে সৃষ্টি হয়]
              ৎ,>ত        বৃৎ +
তি (ক্তিন্) =ভিত্তি।
              দ>ত        ভিদ্ +
তি (ক্তিন্) =ভিত্তি।
              ধ>দ্ধ        ঋদ্ +
তি (ক্তিন্) =ঋদ্ধি, বুধ্>বুদ্ধি
              ম>তি        গম্ +
তি (ক্তিন্) =গতি।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে আদ্য বর্ণে আ-কার যুক্ত হয় এবং ম বর্ণ-ন'ত পরিণ হয়। যেমন- ক্লম্ >ক্লান্তি, ক্ষম> ক্ষান্তি,  ভ্রম্ >ভ্রান্তি, শম্>শান্তি,শ্রম>শ্রান্তি।
              ণ, ন>ত     ক্ষণ +তি (ক্তিন্) =ক্ষতি।
                            তন +
তি (ক্তিন্) =ততি।

             শ্ >ষ্টি    দৃশ্ +তি (ক্তিন্) =দৃষ্টি।
             ষ্ >ষ্টি    কৃষ্ +তি (ক্তিন্) =কৃষ্টি।
                       
বৃষ্ +তি (ক্তিন্) =বৃষ্টি
            
হ্ >ষ্টি    রুহ্ +ঢ় (ক্তিন্) =রুঢ়ি।

৫. যেকল ক্রিয়ামূলের শেষ বর্ণ য় থাকে, তার য় লোপ পায় এবং এর সাথে তি যুক্ত হয়। যেমন
                             
কণ্ডূয় (চুলকানো) +তি (ক্তিন্)=কণ্ডূতি
                              কীর্তি +তি (ক্তিন্)=কীর্তি

৫. ণি্ত ক্রিয়ামূলের সাথে যুক্ত হলে- ক্রিয়ামূলের সাথে ত যুক্ত হয়। যেমন
           
জ্ঞাপি {জ্ঞা (জানা) +ই (ণিচ)} +তি (ক্তিন্)=জ্ঞাপিত।

এই প্রত্যয়যুক্ত শব্দের তালিকা নিচে তুলে ধরা হলো

দীধী>দীধীতি, দীপ্>দীপ্তি, বি-অন্‌জ্ (মাখা)>ব্যক্ত, ুপ্>গুপ্তি>বৃধ>বৃদ্ধি