অক্ষশক্তি
জার্মান :
জার্মানিতে নিয়োগপ্রাপ্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত কিন্টোমো মুশাকোজি এবং জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোয়াকিম ভন রিববেনট্রপ চুক্তিতে স্বাক্ষর করছেন। |
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (১৯৩৯-১৯৪৫) যে সকল দেশ মিত্র শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল, তাদের সাধারণভাবে অক্ষশক্তি নামে অভিহিত করা হয়। অক্ষশক্তির প্রধান তিনটি দেশ ছিল জার্মান, জাপান ও ইতালি।এই বিষয়টি সর্বপ্রথম উত্থাপন করেছিল হাঙ্গেরীর ফ্যাসিবাদী প্রধানমন্ত্রী গাইওলা গমবোস (Gyula Gömbös)। তিনি জার্মানি, হাঙ্গেরি, এবং ইতালিকে নিয়ে একটি জোট গঠনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এছাড়া তিনি জার্মানি এবং ইতালীর মাঝে মতভিন্নতা দূর করার কাজে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেছিলেন। কিন্তু ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে মিউনিখে জার্মানির সাথে আলোচনায় গিয়ে তাঁর হঠাৎ মৃত্যু হয়। পরবর্তী সময়ে হাঙ্গেরিতে ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তি ক্ষমতায় এলে, হাঙ্গেরি এই ত্রিদেশীয় জোট থেকে সরে আসে। এই কারণে, এই জোটে জার্মানি এবং ইতালি স্বাক্ষর করে এবং একটি দ্বিপাক্ষিক অক্ষশক্তি গঠিত হয়।
১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে নভেম্বর মাসে জার্মানির
রাজধানী বার্লিনে, জার্মানির নাৎসী নেতা জোয়াকিম ভন রিববেনট্রপ জার্মান ও জাপানের
রাষ্ট্রদূত কিন্টোমো মুশাকোজি
কমিন্টার্নবিরোধী চুক্তিতে
স্বাক্ষর করেন। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের ৬ নভেম্বরে ইতালি কমিন্টার্নবিরোধী শিবিরে
যোগদান করে। এর ফলে জার্মান, জাপান ও ইতালি'র ত্রিদেশীয় জোট তৈরি হয়। পরে এই জোট
অক্ষশক্তি নামে পরিচিতি লাভ করে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এই তিন দেশের ভিতর,
ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে একটি সামরিক জোট গড়ে তোলা ১৯৪০
খ্রিষ্টাব্দে। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে আনুষ্ঠানিক ভাবে অক্ষশক্তি
প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তী সময় আরও অনেক দেশ এই শক্তির অংশে পরিণত হয়। এই দেশগুলো ছিল
হাঙ্গেরি (২০শে নভেম্বর, ১৯৪০), রোমানিয়া (২৩শে নভেম্বর, ১৯৪০), স্লোভাকিয়া (২৪শে
নভেম্বর, ১৯৪০) এবং বুলগেরিয়া (১লা মার্চ, ১৯৪০) ঐ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে।
১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে অক্ষশক্তি বিলুপ্ত হয়ে যায়।
সূত্র :
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। ভিক্তর
মাৎসুলেনকো।
প্রগতি
প্রকাশন।
মস্কো।১৯৮৭।
http://en.wikipedia.org/wiki/Axis_Power
http://www.britannica.com/EBchecked/topic/46315/Axis-Powers