আরামাইক লিপি
মধ্যপ্রাচ্যের প্রাচীন আরমাইক ভাষায় ব্যবহৃত লিপি বিশেষ।

গ্রিক Aramaios বাইবেলে বর্ণিত সিরিয়ার প্রাচীন নাম)>ইংরেজি Aramaic>বাংলা আরামাইক।

প্রাচীন ফিনিশিয় লিপি থেকে এই লিপির উদ্ভব ঘটেছিল। প্রাচীন আরামাইক ভাষায় ব্যবহৃত লিপিকে অনেক সময় প্রাগ-হিব্রুলিপি বলা হয়। ধারণা করা হয়, এই লিপির উদ্ভব ঘটেছিল খ্রিষ্ট-পূর্ব ১০ম-৯ম শতাব্দীর দিকে। এই লিপি থেকে পরবর্তী সময় উদ্ভব ঘটেছিল সেমেটিক ভাষার বর্ণমালাসমূহ।

প্রাচীন পারস্য, ব্যবিলন ও আসিরিয় অঞ্চলে এই আরামাইক লিপি ব্যাপক ব্যবহৃত হতো। এই লিপি থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের আরবি এবং পারস্য অঞ্চলের ফার্সি ভাষার লিখন পদ্ধতির উদ্ভব ঘটেছিল। তবে এই লিপির অন্যতম সংস্করণ হিসাবে হিব্রুলিপিকে বিবেচনা করা হয়। লিখার ক্ষেত্রে এই লিপি ব্যবহৃত হয় অনুভূমিক রেখা অনুসরণে ডান থেকে বাম দিকে। এর অপর একটি বৈশিষ্ট্য ছিল
এই বর্ণমালায় কোন স্বরবর্ণ ছিল না। এই রীতি দুটি আরবি, ফার্সি, খরোষ্ঠী ও হিব্রুলিপিতে অনুসরণ করা হয়। কালক্রমে এই লিপি সিন্ধু সভ্যতায় বিস্তৃত হয়েছিল। অনেকে মনে করেন যে, প্রাচীন ব্রহ্মীলিপি আরামাইক লিপির একটি ভারতীয় সংস্করণ মাত্র। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ব্রাহ্মীলিপি ভারতেই উদ্ভব ঘটেছিল।

গ্রিক সম্রাট আলেকজান্ডার পারস্য দখল করে নেওয়ার পর পারস্যে আরামাইক ভাষার বাতিল হয়ে যায়। এই সময় পারস্যের পূর্ব ও পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চল জুড়ে আরামাইক ভাষা ও লিপির পৃথকভাবে বিকাশ ঘটে। তবে ইহুদিরা আদি আরামাইক ভাষা ব্যবহার করতো। ধারণা করা হয়, যিশুখ্রিষ্টের মাতৃভাষা ছিল আরামাইক। ধর্মীয় কারণে এখানো সিরিয়া, লেবানন, ইরাক ও তুরস্কে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ভিতর এই ভাষার চর্চা রয়েছে। এই লিপির বর্ণ সংখ্যা ছিল মাত্র ২২টি।