আলাপ (সঙ্গীত)
আলাপ [অভিধান]
ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের একটি ক্রিয়াত্মক পারিভাষিক শব্দ।

রাগসঙ্গীত পরিবেশনের সময় শিল্পীরা রাগকে কয়েকটি ভাগে উপস্থাপন করে থাকেন। তার একটি ভাগ হলো আলাপ। রাগ পরিবেশনের শুরুতে রাগের রূপ প্রকাশের জন্য আলাপ শুরু করেন। এর মধ্য দিয়ে শিল্পী সুনির্দিষ্ট সুরশৈলীতে বাঁধা রাগরূপের পরিবেশ তৈরি করেন এবং শ্রোতাকে ওই রাগের অঙ্গনে প্রবেশের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে দেন।

সঙ্গীতরত্নাকরের মতে রাগের আলাপনের শাস্ত্রীয় নাম আলপ্তি্। আর আলাপন শব্দের অর্থ হলো রাগকে প্রকটীত করা বা বিস্তার করা। কণ্ঠসঙ্গীতে খেয়াল গানের শিল্পীরা সাধারণতঃ আলাপের সময় 'আ' ধ্বনি ব্যবহৃত হয়। ধ্রুপদ গানে নোম, তোম, রি প্রভৃতি অর্থহীন শব্দের ব্যবহার করেন। যন্ত্র সঙ্গীতে রাগে ব্যবহৃত স্বরের সাহায্যে আলাপ সম্পন্ন হয়ে থাকে। খেয়াল গানে আলাপের ক্ষেত্রটি অপ্রশস্ত। ধ্রুপদে দীর্ঘ আলাপ করা হয়।

ধ্রুপদে আলাপের বৈশিষ্ট্য অনুসারে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। এই ভাগ দুটো হলো―
১. আলাপের বিস্তৃত অনুসারে
২. প্রকৃতি হিসাবে
এই দুটি আলাপের প্রত্যেকটি আবার চার ভাগে বিভক্ত। এই ভাগগুলি হলো― এই চার প্রকার আলাপ আবার একে অপরের সাথে মিশে ৬ প্রকার আলাপের সৃষ্টি করে। এই ৬ প্রকার আলাপ হলো―   প্রকৃতি অনুসারে আলাপ
রাগের প্রকৃতি অনুসারে আলাপের প্রকৃতি নির্ধারিত হয় ধ্রুপদের বাণীর উপর। রাগ পরিবেশনের সময়, আলা চলাকালে ধীরে ধীরে সকল প্রকৃতির আলাপেরই প্রয়োগ দেখা যায়। নিচে এই প্রকৃতিগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দেওয়া হলো। আলাপের অঙ্গ
অঙ্গভেদে আলাপ ১৩ প্রকার। এর মধ্যে পরমাঠা নামক অঙ্গটি বর্তমানে অপ্রচলিত। বাকি ১২টি অঙ্গ হলো-

১. বিলম্বিত  
২. মধ্  
৩. দ্রুত 
৪. ঝালা  
৫. ঠোক  
৬. লড়ি
৭. লড়্গুথাও    
৮. লড়্লপেট   
৯. পরণ
১০. সাথ  
১১. ধুয়া 
১২. মাঠা 
১৩. পরমাঠা

 
তথ্যসূত্র: