মাণ্ডুকী শিক্ষা
ঋষি মণ্ডুকের রচিত অথর্ববেদীয় শিক্ষাকে মাণ্ডুকীয় শিক্ষা বলা হয়।
যাজ্ঞবল্ক্য শিক্ষার
পরে এই শিক্ষা রচিত হয়েছিল। উল্লেখ্য মণ্ডুক ঋষি
ছিলেন খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০ অব্দের মানুষ।
মাণ্ডুক্য শিক্ষায় মাত্রা গতি তিন প্রকার। এগুলো
হলো দ্রুত, মধ্য ও বিলম্বিত। উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন- বেদভ্যাস দ্রুত, বেদবচন
প্রয়োগে মধ্যম এবং বেদপাঠের উপলব্ধি বিলম্বিত। মাত্রার গতি নির্ধারক এই গতিকে বলা
হয় বৃ্ত্তি। আর গানের ক্ষেত্রে মাত্রার গতিকে বলা হয় লয়।
মাণ্ডক্য শিক্ষায় স্বরস্থান হিসেবে চারটি নাম পাওয়া যায়। এগুলো হলো- উদাত্ত,
অনুদাত্ত, স্বরিত ও প্রচয়। প্রচয়ের অবস্থান ছিল স্বরিতের কাছাকাছি। বৈদিক যুগে
উচ্চারণের সাথে সাথে অঙ্গুলি নির্দেশ করা হতো। সংস্কৃত প্রবচনে ছিল- 'যথা বাণী তথা
পাণী"। যাজ্ঞবল্ক্যের মতে স্বর ছিল আটি। মাণ্ডুক্য শিক্ষায় বেদপাঠে সহকারী
স্বর ব্যবহৃত হতো সাতটি। এগুলো হলো- অভিনিহিত, প্রশ্লিষ্ট, জাত্য, ক্ষৈপ্র,
পাদবৃত্ত, তৈরোব্যঞ্জন ও তৈরোবিরাম।
মাণ্ডুক্য শিক্ষায় সাত স্বরের উৎপত্তি ঘটেছিল পশুপাখির কণ্ঠস্বর অনুসরণে। এছাড়া
সপ্তসুরের বর্ণগুলো উল্লেখ করেছেন। এগুলো হলো-
স্বরের নাম |
অনুসরণীয় পশুপাখির স্বর |
বর্ণ |
ষড়্জ |
ময়ুর |
পদ্মপত্র |
ঋষভ |
গাভী, বৃষ |
শুকপঞ্জর |
গান্ধার |
অজ (ছাগল) |
স্বর্ণাভ |
মধ্যম |
ক্রৌঞ্চ (বক জাতীয় পাখি) |
কুন্দফুল |
পঞ্চম |
কোকিল |
কৃষ্ণ |
ধৈবত |
অশ্ব |
পীত |
নিষাদ |
কুঞ্জর (হাতি) |
সর্ববর্ণ যুক্ত |
তথ্যসূত্র:
- ভারতীয় সঙ্গীতের ইতিহাস (প্রথম ভাগ)। স্বামী
প্রজ্ঞানানন্দ। রামকৃষ্ণ বেদান্ত মঠ। জানুয়ারি ১৯৮৭।
- সামবেদ সংহিতা।
অনুবাদ ও সম্পাদনা: শ্রীপরিতোষ ঠাকুর। হরফ প্রকাশনী, কলিকাতা। অষ্টম মুদ্রণ, ২০
জুলাই ২০০১