নাট্যশাস্ত্র
ভরত-কর্তৃক রচিত অভিনয় ও সঙ্গীতবিষয়ক গ্রন্থ। ২০০-৩০০ খ্রিষ্টাব্দের
অব্দের দিকে এই গ্রন্থটি রচিত হয়েছিল। এই
গ্রন্থটি মোট ৩৬ অধ্যায়ে বিভাজিত। এই অধ্যায়ের বিষয়বস্তু হলো-
- প্রথম অধ্যায়:
নাট্যের উৎপত্তি
- দ্বিতীয় অধ্যায়:
প্রেক্ষাগৃহলক্ষণ
- তৃতীয় অধ্যায়:
রঙ্গদেবতাপূজা
- চতুর্থ অধ্যায়:
তাণ্ডবলক্ষণ
- পঞ্চম অধ্যায়:
পূর্বরঙ্গবিধান
- ষষ্ঠ অধ্যায়:
রসবিকল্প
- সপ্তম অধ্যায়: ভাব
ব্যঞ্জক
- অষ্টম অধ্যায়:
উপাঙ্গবিধান
- নবম অধ্যায়:
হস্তাভিনয়
- দশম অধ্যায়:
শারীরাভিনয়
- একাদশ অধ্যায়:
চারীবিধান
- দ্বাদশ অধ্যায়:
মণ্ডলবিধান
- ত্রয়োদশ অধ্যায়:
গতিপ্রচার
- চতুর্দশ অধ্যায়:
প্রবৃত্তিধর্মী ব্যঞ্জক
- পঞ্চদশ অধ্যায়:
ছন্দোবিভাগ
- ষোড়শ অধ্যায়:
ছন্দোবিচিতি
- সপ্তদশ অধ্যায়:
বাগভিনয়
- অষ্টাদশ অধ্যায়:
ভাষাবিধান
- ঊনবিংশ অধ্যায়:
কাকুস্বরব্যঞ্জক
- বিংশ অধ্যায়:
দশরূপবিধান
- একাদশ অধ্যায়:
সন্ধাঙ্গ বিকল্প
- দ্বাবিংশ অধ্যায়:
বৃত্তিবিকল্প
- ত্রয়োবিংশ অধ্যায়:
হাহার্যভিনয়
- চতুর্বিংশ অধ্যায়:
সামান্যভিনয়
- পঞ্চবিংশ অধ্যায়:
বাহ্যোপচার
- ষড়বিংশ অধ্যায়:
চিত্রাভিনয়
- সপ্তবিংশ অধ্যায়:
সন্ধিব্যঞ্জক
- অষ্টাবিংশ অধ্যায়:
যন্ত্রসঙ্গীতবিধি
- ঊনত্রিংশ অধ্যায়:
ততবাদ্য
- ত্রিংশ অধ্যায়:
সুষির বাদ্য
- একত্রিংশ অধ্যায়:
তালব্যঞ্জক
- দ্বাত্রিংশ অধ্যায়:
ধ্রুবাবিধান
- ত্রয়স্ত্রিংশ
অধ্যায়: অবনদ্ধবাদ্য
- চতুস্ত্রিংশ অধ্যায়:
প্রকৃতি বিচার
- পঞ্চত্রিংশ অধ্যায়:
ভূমিকাবিকল্প
- ষট্ত্রিংশ অধ্যায়:
নাট্যাবতরণ
নাট্যশাস্ত্রের
সঙ্গীত
এই
গ্রন্থের অষ্টাবিংশ থেকে ত্রয়স্ত্রিংশ অধ্যায় পর্যন্ত
সঙ্গীত-বিষয়ক বিবরণ পাওয়া যায়। অষ্টাবিংশ অধ্যায়ে চার প্রকার
বাদ্যযন্ত্রের কথা বলা হয়েছে। এগুলো হলো-
- ততযন্ত্র (তারের
যন্ত্র)।
- অবনদ্ধ: চামড়া
আচ্ছাদিত বাদ্য যন্ত্র।
- ঘন: ধাতু নির্মিত
বাদ্যযন্ত্র
- সুষি: বায়ু তাড়িত
যন্ত্র
এ সকল যন্ত্র ব্যবহৃত হতো
গান্ধর্ব গানে।
নারদের মতে গান্ধর্ব গান
গঠিত হয় ততবাদ্যযন্ত্রের দ্বারা। তবে অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রের সহায়তা প্রয়োজন ছিল।
স্বরের উৎপত্তি-স্থান সম্পর্কে বলা হয়েছে- বীণা ও কণ্ঠস্বর। তাল ব্যবহৃত হতো অবনদ্ধ
বা তালযন্ত্রের মাধ্যমে। স্বর, তাল ও পদের সমন্বয়ে যত গান সৃষ্টি হয়, সেগুলোকে তিনটি
ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হলো- স্বরগান্ধর্ব, তালগান্ধর্ব ও পদগান্ধর্ব। স্বরগান্ধর্বে বীণাসঙ্গীত এবং
কণ্ঠসঙ্গীতের স্বরের ব্যবহারিক রূপ নিয়ে আলোচিত হয়েছে।
স্বরগান্ধার্ব গানে স্বর ছিল চার
প্রকার। এগুলো হলো- বাদী,
সম্বাদী, বিবাদী, অনুবাদী।
ভরতের আমলে প্রধান গান ছিল জাতিরাগ। এর সংখ্যা ছিল ১৮টি। এই জাতিরাগগুলো শ্রেণিবদ্ধ
ছিল ষড়্জ ও মধ্যম গ্রামে। এই গান শাস্ত্রীয় বিধিতে বাঁধা।
ভরতের নাট্যশাস্ত্রের ত্রয়স্ত্রিংশ অধ্যায় (অবনব্ধবাদ্য)-এ ঢাকের উৎপত্তি অংশে
স্বাতী নামক একজন বাদ্যকারের নাম পাওয়া যায়। এই অধ্যায়ে
বাদ্যযন্ত্রের যে সকল নাম পাওয়া যায়, তা হলো-
- অবনব্ধ বা তালযন্ত্র:
আংককি,
আলিঙ্গ্য ঊর্ধ্বক, দুন্দভি, দুর্দর, ঢাক, পণব,
পুষ্কর।
- ততযন্ত্র বা বীণা:
কচ্ছপী, সপ্ততন্ত্রী বীণা চিত্রা, নবতন্ত্রী বীণা বিপঞ্চী।
তথ্যসূত্র:
- নাট্যশাস্ত্র (চার খণ্ড)। ভরত। বঙ্গানুবাদ: সুরেশচন্দ্র
বন্দ্যোপাধ্যায়, ডঃ ছন্দ চক্রবর্তী